এসপি’র পর কক্সবাজারে ডিবির ওসিসহ ৭ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
Published: 20th, February 2025 GMT
ইয়াবা কাণ্ডে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহর পর এবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি জানান, পৃথক দুটি আদেশে এই সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “ইয়াবা কাণ্ডের ঘটনায় ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।”
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, ওসি জাহাঙ্গীর আলম, এসআই সমীর গুহ, কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম রানা, কনস্টেবল সাইফুল হাসান, কনস্টেবল মো.
এর আগে, একই ঘটনায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহার করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়।
এদিকে, ইয়াবা কাণ্ডের তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মিলেমিশে সাড়ে ৩ লাখ পিস বিক্রি: এসপির ইয়াবা কারবার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ৬ জানুয়ারি ভোরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া থেকে ৪ লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবাসহ একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো জব্দ করা হয়। অভিযানে ওসি জাহাঙ্গীর আলম ও এসআই সমীর গুহের নেতৃত্বে একটি দল চারজনকে আটক করে। তবে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিন ইয়াবা কারবারিকে তাৎক্ষণিক ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযানের সময় ৩৫ কাট (৩ লাখ ৫০ হাজার পিস) ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল, যার মধ্যে পুলিশ আত্মসাৎ করে ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস; যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অভিযানে সহযোগী হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চাকরিচ্যুত দুই কনস্টেবলকে ১৩ কাট (১ লাখ ৩০ হাজার পিস) ইয়াবা দেওয়া হয়। এসপির অনুমতি পাওয়ার পর ডিবি ২ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ৯৫ টাকা পিস দরে মোট ২ কোটি ৯ লাখ টাকায় বিক্রি করে।
এই ঘটনা গোপন রাখতে চকরিয়া থানার ডুলাহাজারায় মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ দেখানো হয়। ইয়াবা বহনকারী গাড়ির চালক ইসমাইলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চকরিয়া থানায় মামলা করা হয়, যেখানে বাদী ছিলেন এসআই সমীর গুহ। তবে জব্দকৃত গাড়িটি থানায় না রেখে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় খবর প্রকাশের পর পুলিশের অভ্যন্তরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় এবং একের পর এক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়। পুলিশ সুপারের পর এবার ডিবির ওসিসহ সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/তারেকুর/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল শ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
খুলনার কয়রায় ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আলমগীর হোসেন নামে এক মাছ ব্যবসায়ী এ মামলা করেছেন। মামলায় কয়রা থানা-পুলিশের এসআই মো. সালাউদ্দীনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদি আলমগীর হোসেন বিএনপির কর্মী হওয়ায় বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন এসআই সালাউদ্দীন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় গত বছরের ২৫ জুন রাত ১০টার দিকে কয়েকজন সহযোগীসহ তিনি বাদির বাড়িতে উপস্থিত হন। প্রথমে বাদিকে সরকারবিরোধী হিসেবে গ্রেপ্তার করার ভয় দেখানো হয়। পরে এক লাখ টাকা দিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলেও আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করার একপর্যায়ে এসআই সালাউদ্দীন ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী সন্তানের সামনে তাঁর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দেন। এ সময় বাদির স্ত্রী ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা এসআইকে দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে নেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা কয়েকদিনের মধ্যে না দিলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে আসেন তিনি। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে ওই সময়ে একটি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে।
মামলার সাক্ষী ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের স্ত্রী বলেন, ‘দারোগা সাহেব সকলের সামনে আমার স্বামীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদা দাবি করেন। স্বামীকে বাঁচাতে ওই রাতে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে টাকা দিয়েছি তাকে। তবুও আমার স্বামীকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ হয়ে ডাকাতের মতো আচরণ করেছেন তিনি।’
জানতে চাইলে এসআই সালাউদ্দীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মামলার বাদী আলমগীর হোসেনকে আমি চিনি না। তিনি কেন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন বুঝতেছি না।’
আদালতের পেশকার মাইনুল হোসেন জানিয়েছেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।