‘কিছুই চিরস্থায়ী নয়’—বাজে সময়ে গার্দিওলা যেন দার্শনিক
Published: 20th, February 2025 GMT
পৃথিবীতে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সবকিছুরই ক্ষয় আছে, এমনকি এই পৃথিবীরও; সেখানে মানুষের কীর্তি তো আরও ছোট বিষয়। যেমন ধরুন, পেপ গার্দিওলা। তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী এই কোচ এ প্রতিযোগিতার শেষ ষোলোয় উঠতে পারবেন না, তা ভাবাই কষ্টকর। কারণ, গার্দিওলার কোচিং ক্যারিয়ারে এর আগে কখনো এমন কিছু দেখা যায়নি, সিটিও গার্দিওলার অধীন শেষ ষোলোর আগে কখনো বাদ পড়েনি। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গতকাল রাতে সেই রূঢ় বাস্তবতা দেখে ফেলার পর ম্যানচেস্টার সিটি কোচ দার্শনিকের মতো বলেছেন, ‘কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়।’
আরও পড়ুনজাদুকর এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে সিটিকে বিদায় করে শেষ ষোলোয় রিয়াল৬ ঘণ্টা আগেসামনে যে এমন কিছু চোখ রাঙাচ্ছে, গার্দিওলা তা টের পাননি, সেটা বলা যাবে না। ইতিহাদে প্লে-অফ প্রথম লেগ ৩-২ গোলে হারের পর রিয়ালের মাঠে ফিরতি লেগ জয় এমনিতেই খুব কঠিন। গার্দিওলার চোখে শুরুতে জয়ের সম্ভাবনা ছিল মাত্র ‘১ শতাংশ’। খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পরে সম্ভবত বলেছেন, তিনি মিথ্যা বলেছেন, জয়ের সুযোগের হার আরও বেশি। অর্থাৎ গার্দিওলা সম্ভবত ভাবেননি, সিটিতে যে রাজত্বের শুরু করেছিলেন তিনি ৯ বছর আগে, সেটার অবসান ঘটবে এতটা অসহায়ভাবে।
অসহায়? সিটির প্রায় এক যুগের আধিপত্যের অবসানের কথা বলা হচ্ছে ঠিক এ কারণেই। বিবিসির মতে, দুই লেগেই সিটি যেভাবে হেরেছে, তাতে কথাটা এভাবে বলা যায়, ‘মাদ্রিদে ম্যানচেস্টার সিটির আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে যুগাবসান ঘটল।’
মাঠের লড়াইয়ে পেরে উঠছিল না সিটি। ডাগআউটে এমন অসহায় সময়ই কেটেছে গার্দিওলার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় প্রথম ধাপে বিএনপি-জামায়াতের ২৪১টি ‘রাজনৈতিক’ মামলা প্রত্যাহার
বগুড়ায় বিগত সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা ‘রাজনৈতিক’ মামলা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে আদালতে বিচারাধীন ২৪১টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ৩২৮টি মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন শাখা-১ প্রথম ধাপে ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দিয়ে ৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার গেজেটের চিঠি বগুড়ায় আসে বলে জানিয়েছেন বগুড়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল বাছেদ।
পিপি আবদুল বাছেদ প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক ৭৬৬টি মামলা আদালতে এখনো বিচারাধীন। মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর অনুবিভাগের উপসলিসিটরের কাছে পাঠানো হয়। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন শাখা-১ প্রথম ধাপে ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। দ্বিতীয় ধাপে ২০ এপ্রিল সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে গঠিত কমিটির ১১তম সভায় বগুড়ার আরও ৩২৮টি মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি মামলা হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু মামলার রায়ে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন নেতা-কর্মীরা। আদালতে বিচারাধীন ছিল ৭৬৬টি মামলা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্যসচিব করে পুলিশ সুপার ও সরকারি কৌঁসুলিকে (পিপি) সদস্য করে একটি কমিটি করা হয়। কমিটি ওই ৭৬৬টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।
তবে এক–এগারো সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত দায়ের হওয়া সব মামলা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় প্রত্যাহারের দাবি করেছেন বগুড়ার বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি।