Samakal:
2025-03-25@14:58:44 GMT

গতির ঝড় তোলার চ্যালেঞ্জ নাহিদের

Published: 20th, February 2025 GMT

গতির ঝড় তোলার চ্যালেঞ্জ নাহিদের

শোয়েব আকতার-ব্রেট লিদের সময় চলে গেছে অনেক দিন আগেই। ক্রিকেট মাঠে গতির ঝড় তোলাদের মধ্যে এখনও যে ক’জন রয়েছেন, তাদের নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে উৎসাহ অনেক। প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা কিংবা ইংল্যান্ডের জোরফা আরচারদের সঙ্গে এবার স্পিড এক্সপ্রেসের নয়া বগি বাংলাদেশের নাহিদ রানা। 

কয়েক মাস আগে পাকিস্তান সফরে গিয়েই নিজের জাত চিনিয়ে দিয়ে এসেছিলেন রানা। এবার তাঁকে ঘিরেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চলছে জোর আলোচনা। সেই রানার সাক্ষাৎকার নিয়েছে আইসিসি মিডিয়া। যেখানে চাঁপাইনবাগঞ্জের ছেলে রানা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর ক্যারিয়ারে এই প্রথম বিশ্বমঞ্চে খেলার সুযোগ মিলেছে, যা তিনি স্মরণীয় করে রাখতে চান। ‘বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের সামনে বোলিং করার সুযোগ পাচ্ছি– এটাই আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করি। যেখানে প্রতি মুহূর্তে অনেক কিছু শেখা যায়। আমার জন্য এমন মঞ্চে মানিয়ে নেওয়া সহজ ছিল না। তবে আমি ভাগ্যবান, এখানে আসার আগে আমি ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির অনেক ম্যাচ খেলেছি। সেখানে আমি ভিন্ন কন্ডিশনে, ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচ পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া শিখেছি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পূর্ণই ভিন্ন।’

গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় বছর বাইশের এই পেসারের। প্রথম ইনিংসেই লঙ্কানদের তিন উইকেট তুলে রানা তাঁর দম জানিয়ে দেন। এর পর পাকিস্তান সফরে গিয়ে গতির ঝড় তুলতে থাকেন। ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটারের ওপর বোলিং করতে থাকেন। পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার বাবর আজম, শান মাসুদ, শান সৌদ শাকিল রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়ে যান রানার গতির সামনে। প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এবারও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেই রাওয়ালপিন্ডিতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। ফরম্যাট ভিন্ন হলেও আশাবাদী রানা। 

‘আমি প্রতিদিনই মাঠ এবং মাঠের বাইরে কিছু না কিছু শিখছি। কীভাবে শরীরের যত্ন নিতে হয়, ফিটনেস ধরে রাখতে হয় এবং তার জন্য খাদ্যাভ্যাস কেমন হতে হয়– সবকিছুই মেনে চলার চেষ্টা করছি। কোচ এবং দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের থেকে অনেক কিছু শিখছি। আমাদের পেস বোলার গ্রুপটা বেশ ভালো। আশা করি, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ভালো উইকেট পাব।’

বাংলাদেশ বোলিংয়ের এই নতুনকে নিয়ে আইসিসির আগ্রহ অনেক। রানা কোন শহর থেকে উঠে এসেছেন, তাঁর বেড়ে ওঠার পেছনের গল্পগুলো শুনতে চাওয়া হয়েছিল। ‘আমি যে শহর থেকে এসেছি, সেখানে ক্রিকেটের চেয়ে বিখ্যাত সেখানকার আম। শুরুতে টেপ টেনিস দিয়েই খেলা শুরু করি। তখন মনে হচ্ছিল, আমি অন্যদের চেয়ে একটু বেশি জোরেই বোলিং করি। হয়তো আমি আমার উচ্চতার কারণেই বাড়তি বাউন্স পেয়ে থাকি। আমাদের রাজশাহীর কোচ আলমগীর কবির। তিনিই আমাকে টেনিস বল ছেড়ে ক্রিকেট বলে বোলিং করার জন্য উৎসাহ দেন। জাতীয় দলের সাবেক ওই বোলার আমাকে বোলিংয়ের রানআপ এবং কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার শুধরে দেন। সেজন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস স র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিনিয়োগ করুন, আপনারা তো আর সালমান এফ রহমান হতে পারবেন না’

বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ভয় না পাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী বাজেট এমনভাবে করা হবে, যাতে বেসরকারি খাত বিনিয়োগে উৎসাহী হয়।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে ভয় কাজ করছে। তাঁদের অনেকে মনে করছেন, এখন বিনিয়োগ করলে পরে তাঁদের সমস্যা হতে পারে। তাঁদের উদ্দেশে বলছি, বিনিয়োগ করুন, আপনারা তো আর সালমান এফ রহমান হতে পারবেন না।’ তারপরও তাঁদের মধ্যে সংশয় আছে বলে মনে করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক্‌-বাজেট আলোচনা সভায় অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন। অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ অর্থ বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ইআরএফের সভাপতি দৌলত আক্তারের নেতৃত্বে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সাধারণ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। দৌলত আক্তার ইআরএফের পক্ষ থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিবেচনার জন্য ২৮টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আগেও বলেছি, আগামী বাজেট হবে বাস্তবমুখী বাজেট। বিরাট কোনো আশ্বাস দেব না, যা বাস্তবায়ন করা যাবে না। স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এমন বাস্তবভিত্তিক প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রকল্পগুলোতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের পরিমাণ হবে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা।’

কোনো স্তম্ভ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হবে না জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এক বছরে যা যা করতে পারব, তার উল্লেখ থাকবে। পদচিহ্ন হিসেবে আরও কিছু বিষয় থাকবে, যা পরের সরকারের মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। আর বাজেট বক্তব্য থাকবে ৫০ থেকে ৬০ পৃষ্ঠার। এতে কোনো বন্দনা করা হবে না।’

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা, বেসরকারি খাতকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা এবং ব্যবসাবান্ধব করা—এসব বিষয় বাজেট প্রণয়নে বিবেচনায় রাখা হবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। নতুন নতুন হাসপাতাল করার বদলে বিভিন্ন হাসপাতাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ থাকবে বলেও জানান উপদেষ্টা। তিনি জানান, অপরাধসংক্রান্ত ঘটনা চিহ্নিত করতে একটি ফরেনসিক হাসপাতাল স্থাপন করা হবে।

কর ব্যবস্থা যৌক্তিক করা হবে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সেবা পাই না, তাই কর দেব না—এ ধরনের কথা অনেকেই বলে থাকেন। সব দেশেই করের হার কিন্তু বেশি।’ তিনি বলেন, অর্থবছর শেষে জুলাই মাসে গিয়ে যেন ‘এটা হলো না কেন, ওটা হলো না কেন’ ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন সবাই—আগামী বাজেটটি তেমনভাবে করা হবে।

ইআরএফের যত প্রস্তাব

ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করার সুপারিশ করেছে ইআরএফ। সংগঠনটি বলেছে, একজন ব্যক্তি ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে মুনাফার ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর কাটা হয়। আবার ব্যাংকের জমা স্থিতির ভিত্তিতে কাটা হয় আবগারি শুল্ক। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ না দিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে অগ্রাধিকার দেওয়া, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া, বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ চেইনে বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙা ও সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনায় নিয়ে করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, দরিদ্রদের সুরক্ষা দিতে খোলাবাজার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগী ও ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ করে ব্যয় করার ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয় ইআরএফ।

ইআরএফ আরও বলেছে, দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের প্রতিটিতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মানসম্পন্ন একটি করে হাসপাতাল স্থাপন; ক্যানসারসহ দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক-কর প্রত্যাহার করা; পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, কারা পুলিশ, জেলার, বিচারকসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের ঝুঁকিভাতা প্রত্যাহার করা; সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে আসনসংখ্যা বৃদ্ধি; রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া; পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইনসহ মিডিয়ার করহার কমিয়ে আনা; কর ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জবাবদিহি থাকা; বেনামি ব্যাংকঋণ বন্ধে রিটার্ন জমা ও ঋণ নেওয়ার সময় ব্যাংকের কাছে দেওয়া সম্পদ বিবরণীর তথ্য মিলিয়ে দেখার ব্যবস্থা করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ