লক্ষ্য ৩২১ রান। প্রয়োজনীয় রান রেট ৬.৪২। এই রান তাড়া করে জিততে হলে প্রথম পাওয়ারপ্লে ভালোভাবে কাজে লাগাতে হতো। শুরু থেকে চালিয়ে খেলা সম্ভব না হলেও থিতু হওয়ার পরপরই প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর চড়াও হতে হতোই।

কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা খেলেছেন ঘুমপাড়ানি ইনিংস। মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন দ্রুত রান তোলার সীমাহীন চাপ। তাতে পরিণতি যা হওয়ার তা–ই হয়েছে। করাচিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬০ রানে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় স্বাগতিক পাকিস্তান।

পাকিস্তানের হয়ে কাল টপ অর্ডারে ব্যাটিং করেছেন সৌদ শাকিল, বাবর আজম ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। শাকিল ও রিজওয়ান মিলে খেলেছেন ৩৩ বল, রান করেছেন মাত্র ৯।

বাবর অবশ্য ফিফটি করেছেন। কিন্তু তাঁর ৬৪ রান করতে লেগেছে ৯০ বল। ডট দিয়েছেন ৫২টি। অর্থাৎ ৫৭.

৭৭% বলে তিনি কোনো রান নিতে পারেননি।

পাকিস্তানের প্রয়োজনীয় রান রেট যখন হু হু করে বাড়ছিল, তখন বাবরের এমন ব্যাটিং অনেকের কাছে স্বার্থপরের মতো লাগাই স্বাভাবিক। পাকিস্তান কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম, ভারতের সাবেক স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও সাবেক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ কাইফ স্বাগতিকদের বড় হারের পেছনে বাবরের মন্থর গতির ব্যাটিংয়ের দায় দেখছেন।

ইউটিউব চ্যানেল স্পোর্টস সেন্ট্রালের ম্যাচ–পরবর্তী বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে ওয়াসিম আকরাম বলেছেন, ‘ম্যাচ শুরুর আগে আমি বলেছিলাম বাবর আজম যেন রান রেট নিয়ে না ভাবে। সে যতটা সম্ভব সময় নিক এবং পাকিস্তানের ব্যাটিং তাকে ঘিরে আবর্তিত হোক। কিন্তু আমার তো মনে হয় সে কথাটা সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলেছে এবং সেটাই করেছে। তাই বলে আমি ওকে এতগুলো ডট দিতে বলিনি।’

৬৯ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর সহ-অধিনায়ক আগা সালমানের সঙ্গে ৫৯ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন বাবর। কিন্তু এই জুটিতেও তিনি ধীরলয়ে ব্যাটিং করেছেন। ফিফটি পূরণ করেছেন ৮১ বলে। কিন্তু পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে সালমান ঠিকই চালিয়ে খেলেছেন। ২৮ বলে করেছেন ৪২ রান।

বাবর ও সালমানের ইনিংস দুটির পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন কচ্ছপ ও খরগোশের দৌড় প্রতিযোগিতা নিয়ে ঈশপের রূপকথার গল্পকে মনে করিয়ে দিয়েছেন।

২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী অশ্বিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘সালমান আলী আগার ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ফিফটির পথে বাবরের যাত্রা যেন কচ্ছপ ও খরগোশের গল্পের সেরা চিত্রায়ণ।’

২০০২ সালে ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী দলের সদস্য মোহাম্মদ কাইফের কাছে বাবরের ব্যাটিং সেকেলে মনে হয়েছে, ‘বাবর এখনো ৮০-এর দশকের ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছে। অনিয়মিত স্পিনারদের বিপক্ষে মাত্র দুটি বাউন্ডারি মেরেছে, মাঝের ওভারগুলোতেও অল্প রান এসেছে। এটা (এ ধরনের ব্যাটিং) আধুনিক ক্রিকেটে কোনো কাজে আসে না।’

এ ছাড়া ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ওয়ান ক্রিকেট’-এর সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘১৯৯৬ সালের পর পাকিস্তানে প্রথম আইসিসির ইভেন্ট। কিন্তু বাবর আজম ও ফখর জামানের স্ট্রাইক রেট অতীতের (সেই সময়ের) ব্যাটারদের চেয়ে খারাপ।’

পাকিস্তানের পরের ম্যাচ আগামী রোববার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে। ভারত আজ বাংলাদেশকে হারালে দুবাইয়ের ওই ম্যাচটি পাকিস্তানের জন্য একরকম নকআউট ম্যাচ হয়ে যাবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন ব বর র

এছাড়াও পড়ুন:

কলকাতা বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা

কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে মঙ্গলবার উদ্‌যাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। তীব্র দাবদাহের মধ্যেও শহরজুড়ে সকাল থেকে বের হয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের আয়োজনে পহেলা বৈশাখকে ‘বাঙালির জাতীয় উৎসব’ হিসেবে ঘোষণার দাবিও উঠেছে।

এর আগে সোমবার কলকাতার বাংলাদেশের উপ–হাইকমিশনে ঘরোয়া পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উৎসব উদ্‌যাপিত হয়। এ অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা–কর্মচারী, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এবং কলকাতার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ ছাড়া এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার সোনালী ব্যাংক, বিমান বাংলাদেশ ও বেসরকারি বিমান সংস্থার কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মঙ্গলবারকে পালন করছে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে। পয়লা বৈশাখকে ‘বাঙালির জাতীয় উৎসব’ হিসেবে ঘোষণার দাবিও উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এদিন মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আয়োজক সংগঠনটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘নতুন বছর হোক ধর্মের নয় মানুষের, বিচ্ছেদের নয় মিলনের।’

কলকাতার ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে নববর্ষ উপলক্ষে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একাডেমি অব ফাইন আর্টস চত্বরের রাণুছায়া মঞ্চে নাচ–গান, কবিতা পাঠ ও নাটক প্রদর্শিত হয়। এর আগে সোমবার বিকেল থেকেই কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আর্টস চত্বরের সড়কে আলপনা আঁকে ভাষা ও চেতনা সমিতি। মঙ্গলবার সকালে অতিথিদের জন্য পরিবেশিত হয় পান্তাভাত-শুঁটকি, আমপোড়া শরবত, মাছ-ভাত, ডাল ও পোস্ত।

নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় আকর্ষণীয় নানা বেশে অংশ নেন মানুষ

সম্পর্কিত নিবন্ধ