নাহিদ–পারভেজ: তাঁরা দুজন এবারই প্রথম
Published: 20th, February 2025 GMT
জীবন বদলে যাওয়ার জন্য একটা মুহূর্তই যথেষ্ট। আট বছর ওই হিসাবে তাই লম্বা সময়। কিন্তু নাহিদ রানার জীবন কতটা বদলে গেছে, তা চিন্তা করে চমকে যান তিনি নিজেও। বছর আটেক আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে টেলিভিশনের সামনে বসে তিনি বিমোহিত হয়ে দেখেছেন, সাকিব আল হাসান–মাহমুদউল্লাহ কী করে বাংলাদেশকে তুলে দিচ্ছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে।
এরপর উল্লাসে, আনন্দে আত্মহারা হয়েছিলেন দর্শক হিসেবে; বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা তখনো তাঁর জন্য ছিল শুধুই ‘শখ’। কখনো কি ভেবেছিলেন, আট বছর পর ওই ‘শখ’ তাঁকে তুলে দেবে পরের আসরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিগামী বিমানে? প্রশ্নটা শুনে মুখে সদ্য কৈশোর পেরোনো সরল হাসিটা হাসেন তিনি। এরপর বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না ভাই…’
আরও পড়ুনভারতীয়দের সব প্রশ্নেই নাহিদ রানা১৪ ঘণ্টা আগেভাবনার অতীত অনেক কিছুই এখন ঘটছে নাহিদের জীবনে। খাদ্যাভ্যাস বদলে ফেলছেন, মানতে হচ্ছে অনেক নিয়মকানুনও। সঙ্গে পুরো বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা তার কাঁধে তো আছেই। এখন যে নাহিদ আর ‘দর্শক’ নন, জাতীয় দলের ক্রিকেটার।
অনূর্ধ্ব–১৯ আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কখনোই এক নয়। ওইটা শুরুর দিকে ছিল, এটা অনেক বড় একটা মঞ্চ। এখানে চ্যালেঞ্জটা বেশি হবে অনেক।পারভেজ হোসেনশুধু ‘ক্রিকেটার’ হিসেবে আটকে থাকলেও হতো। কিন্তু গতিময় সম্ভাবনার যে শুরু তিনি করেছেন, তাতে তাঁর কাছে সবার প্রত্যাশাও অনেক বেড়ে গেছে। এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দলে আরেকটা ক্ষেত্রেও নাহিদের সঙ্গী শুধু একজন। প্রথমবার আইসিসি ইভেন্টে খেলতে যাচ্ছেন, নাহিদ রানা ছাড়া এমন ক্রিকেটার শুধু পারভেজ হোসেন। এটাও একটা বাড়তি রোমাঞ্চ নাহিদের জন্য, ‘সব সময় টিভিতেই দেখে এসেছি এমন টুর্নামেন্ট। এখন খেলতে যাব, ভালো লাগা তো কাজ করছেই। চেষ্টা করব দলের জন্য নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার।’
দ্রুত রান তোলায় দক্ষ পারভেজ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে সোমবার সকালে ঠিকঠাক বিকেএসপিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। সতীর্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমের বাইরে খুনসুটি শেষে শরীর গরম করে মাঠে নামার প্রস্তুতিও নিয়ে নেন। এরপর টসও করতে যান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক।
কিন্তু ড্রেসিংরুমে ফেরার পরই টের পেতে থাকেন শরীর সাড়া দিচ্ছে না। বুক চেপে আসছে। ততক্ষণে বাকিরা বুঝে যান, তামিম হার্ট অ্যাটাক করেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তামিম নিয়ে হুলস্থূল লেগে যায়। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয় প্রস্তুতি। প্রথমে মাইনর ও পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হয়ে পড়া তামিমকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যবস্থা করা হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
কিন্তু তামিমের জ্ঞান ফেরাতে ওদিকে চিকিৎসকরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছিলেন না। ২২ মিনিট সময় ধরে সিপিআর ও তিনটি ডিসি শক দিতে হয়েছে। এরপর দ্রুত এনজিওগ্রাম করে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লাগিয়েছে ডাক্তাররা। অবিশ্বাস্য গতিতে হয়েছে সবকিছু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তামিমের জ্ঞান ফিরেছে এবং কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
তামিমের এই অবস্থার ভেতরেও বিকেএসপিতে চলেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ। সচরাচর এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলা স্থগিত করেন। কিন্তু বিকেএসপি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে তামিম যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন মাঠে তার সতীর্থরা খেলছিলেন। মিরাজ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েছেন ৭ উইকেটে।
স্থগিত না করে কীভাবে খেলা চললো, সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সিসিডিএমের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মোহামেডানের ইচ্ছাতেই খেলা চালিয়ে নিয়েছেন তারা। দুই দলকেই সিসিডিএম এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা ম্যাচ স্থগিত করার কথা জানান। কিন্তু ম্যাচটি খেলতে রাজি হয় দুই দলই। এজন্য খেলা বন্ধ হয়নি।
তার ভাষ্য, ‘‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব খেলা চালিয়ে যেতে চাইছিল। শাইনপুকুরও তাই। তারা কেউই চায়নি খেলা বন্ধ হোক। আমরা শুরুতে ভেবেছিলাম এরকম পরিস্থিতিতে খেলা বন্ধ করা যায় কি না। এজন্য ক্লাবগুলোকে জানানো হয়। কিন্তু তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলা চালিয়ে নেয়।’’
জানা গেছে, দুই দলই চেয়েছে ড্রেসিংরুমে কিংবা মাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে। তাতে মাঠের ভেতরে ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। খেলা শেষে মুশফিক, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুলরা ছুটে গেছেন তামিমকে দেখতে হাসপাতালে। কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের কাছাকাছি গিয়ে দেখাও করেছেন দুয়েকজন।
ঢাকা/ইয়াসিন/এনএইচ