অসুস্থ শ্রমিকের কর্মস্থলে মৃত্যু ছুটি চেয়ে না পাওয়ার অভিযোগ
Published: 20th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপারেলসের এক নারী শ্রমিক অসুস্থ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চেয়েও পাননি। অবশেষে কর্মস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই কারখানার শ্রমিকরা ইপিজেডের মধ্যে শ্রমিক লিমা আক্তারের (২৪) মৃত্যুর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বিক্ষোভ করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।
অনন্ত অ্যাপারেলসের শ্রমিক কাজল, ফাতিমা, রাহিমা, নয়ন, নজরুলসহ বেশ কয়েকজন জানান, মঙ্গলবার কারখানায় কাজ করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন লিমা আক্তার। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিকিৎসাসেবা নিতে ছুটি দেয়নি। ফলে লিমা কাজ করতে বাধ্য হন। এক পর্যায়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাত ৯টার পর তাঁকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সহকর্মীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ক্ষোভে গতকাল বুধবার সকালে শত শত শ্রমিক কাজ বন্ধ করে কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, অসুস্থ হওয়ার পরও লিমাকে ছুটি না দিয়ে কর্তৃপক্ষ অমানবিক কাজ করেছে। এমনকি তাঁকে চিকিৎসাসেবাও দেওয়া হয়নি। তাই কর্মস্থলে কাজ করতে করতেই মৃত্যু হয় লিমার।
অনন্ত অ্যাপারেলসের এইচআর (প্রশাসন) ম্যানেজার নাজমুল হক দাবি করেন, তারা অসুস্থ শ্রমিক লিমাকে ছুটি দেননি বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সঠিক নয়। লিমা অসুস্থ হওয়ার পরপরই তাঁকে খানপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। এর পর সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
লিমা আক্তারের স্বামী মো.
এ বিষয়ে আদমজী ইপিজেডের (বেপজার) জিএম মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই নারী শ্রমিক অসুস্থ হলে তাঁকে খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও মালিকপক্ষ লিমাকে ছুটি দিতে অসম্মতি জানানোর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালের চিকিৎসক ফরহাদ হোসেন বলেন, লিমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে কী রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা তিনি জানেন না বলে জানান।
লিমার স্বামী কাউসার বলেন, কয়েক দিন ধরে লিমা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছিল।
লিমা আক্তারের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারের চরবকল এলাকায়। তিনি ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই সিনিয়র সুইং অপারেটর হিসেবে অনন্ত অ্যাপারেলসে যোগ দেন। সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর কদমতলীতে স্বামীর সঙ্গে তিনি বসবাস করতেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
রূপগঞ্জে রবিনটেক্স গার্মেন্টসে শ্রমিক-যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনার পরিকল্পনাকারী মূল হোতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটির সভাপতি সেলিম মাহমুদকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে জেলার ফতুল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, গত ৯ এপ্রিল দুপুরে রূপগঞ্জের আওখাব এলাকার রবিনটেক্স নামের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। সেখানে শ্রমিকদের বুঝিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে শ্রমিকরা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়।
এতে ১০-১৫জন যৌথ বাহিনীর সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের ভাষ্যমতে ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সূত্রে পাওয়া যায় রবিনটেক্স গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বিশৃঙ্খলা করার ইন্ধন দেন কেন্দ্রীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ নামের এক শ্রমিক নেতা।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার দিবাগত রাতে জেলার ফতুল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন যৌথ বাহিনীর একটি অভিযানিক দল। গ্রেপ্তারকৃতকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার সাথে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।