বিচারপ্রার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা বিচারকের
Published: 20th, February 2025 GMT
আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীদের তৃষ্ণা মিটানোর লক্ষ্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছেন মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। এরই অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের অষ্টম তলা থেকে শুরু করে নিচতলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায় একটি করে ফিল্টার পানির যন্ত্র বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় সুপেয় পানির উদ্বোধন করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন। এখন থেকে ভবনের প্রতিটি তলায় আসা বিচারপ্রার্থীদের তৃষ্ণা মিটানোর জন্য আর দূরে কোথাও যেতে হবে না।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে সব ম্যাজিস্ট্রেট ও আদালতের কর্মচারীদের সহযোগিতায় এ সুপেয় পনির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীরা পানি পান করে তৃষ্ণা মিটাতে পারবে।
উদ্বোধনের পর ভবনটির দ্বিতীয় তলায় দেখা গেছে, আবুল কাশেম নামে এক প্রবীণ ব্যক্তি তাঁর ছেলেকে দেখার জন্য গারদখানায় এসেছেন। এ সময় তিনি পানির ফিল্টার থেকে পানি পান করেন। তিনি বলেন, এই প্রথম দেখলেন আদালতে সাধারণ মানুষের জন্য পানি খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারাই এ ব্যবস্থা করেছেন, তারা উপরওয়ালার কাছ থেকে অনেক অনেক পুণ্য পাবেন। বিষয়টি তাঁর খুব ভালো লেগেছে।
সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা মিয়া বলেন, এটি মহৎ একটি উদ্যোগ। বিচারপ্রার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তিনি ধন্যবাদ জানান।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আলম জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিটি পদক্ষেপ গঠনমূলক।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, দেশের অন্যান্য অফিসের তুলনায় আদালতে বেশি মানুষের আনাগোনা। আদালতে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাই এসব মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই তারা যাতে বিনা মূল্যে সুপেয় পানি খেতে পারে, এর ছোট একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরও উদ্যোগ বাস্তবায়নে তাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সুপেয় পানির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার হোসাইন রনি, মানিক দাস, রহিমা আক্তারসহ আইনজীবী সমিতির অন্য আইনজীবীরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ব যবস থ আইনজ ব র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তিতে নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে (গ ইউনিট) চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষে ভর্তিতে নতুন করে এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন) পরীক্ষা হবে।
নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ সিদ্ধান্ত দেন।
নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে রিট না চালানোর কথা জানিয়ে রিট আবেদনকারী তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে (ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট, যা ‘গ’ ইউনিট নামে পরিচিত) চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২৪-২৫) প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তিতে এমসিকিউ পরীক্ষা হয় ৬০ নম্বরের আর লিখিত পরীক্ষা হয় ৪০ নম্বরে।
তবে এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে একাধিক ভুলের অভিযোগ তুলে সুষ্ঠু ফলাফল প্রকাশে পুনরায় পরীক্ষার নেওয়ার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবরে আবেদন দেন ভর্তি–ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থী। এতে ফল না পেয়ে তিনি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ মার্চ হাইকোর্ট কয়েকটি বিষয়ে রুল দেন। রুলে এমসিকিউ পরীক্ষা পুনরায় নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ভর্তি কমিটির এক বিশেষ সভা গত ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে শুধু এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আদালতে আবেদন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর পুনরায় পরীক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে আদালতে আবেদন করা হয়।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রিট আবেদনকারী ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থী নিজে শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জামিলা মমতাজ।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আদালতে আবেদন করা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যেন ৬০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নতুন করে নিতে অনুমতি দেওয়া হয়। আজ বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়। তিনি বলেন, ‘নতুন করে পরীক্ষার দাবি যদি পূরণ হয়ে যায়, তাহলে মামলা পরিচলার কোনো প্রয়োজন নেই, শুনানিতে বলেছি। ৬০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।’ শিশির মনির বলেন, রিট আবেদনকারী শিক্ষার্থী আদালতে কথা বলে তাঁর রিট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আদালত ঢাবি কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন, নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। এক মাসের মধ্যে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিশির মনির।