পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকা এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনে প্রচলিত আইন অমান্য করায় কমলগঞ্জের একটি ইটভাটার মালিককে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নে এসকেবি ব্রিকস নামের ইটভাটার মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সেখানে থাকা কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ভাটার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ মিলু। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাঈদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে সহযোগিতা করেন পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, এসকেবি ব্রিকস নামের এই ইটভাটার ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনের নির্ধারিত ধারা অমান্য করায় জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ওই ভাটার মালিকের কাছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্র নেই।

সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ মিলু জানান, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন অমান্য করার সুযোগ নেই। এমন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানে কোনো আপস করা হবে না।

এর আগে মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের ছাতকে বেআইনিভাবে ইটভাটায় ইট পোড়ানোর দায়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই জরিমানা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর সদরদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমী। অভিযানের সময় ছাতকের সুরমা ব্রিক ফিল্ডকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনে দণ্ডিত করা হয়। অভিযানে বেআইনিভাবে ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কারণে আগুন নিভিয়ে দেওয়া হয় এবং কাঁচা ইট ধ্বংস করে ইটভাটার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক। অভিযানে সহযোগিতা করেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ ইটভ ট ইটভ ট র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’

গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।

২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।

অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।

অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ