Samakal:
2025-04-18@19:39:50 GMT

‘সবাই চুপ, যা আছে বের করে দে’

Published: 20th, February 2025 GMT

‘সবাই চুপ, যা আছে বের করে দে’

‘সবাই চুপ, যা আছে বের করে দে’– বলেই দু’তিনজনকে মেরে একজনকে ছুরিকাঘাত করে চোখের পলকে বাসযাত্রীদের ফোন ও ওয়ালেট নিয়ে গেল ছিনতাইকারীরা।

গতকাল বুধবার সকালে উত্তরায় অফিসগামী মানুষের ভিড়ের মধ্যে প্রকাশ্যে এসব ঘটতে দেখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিসা মুমু। তাঁর ফেসবুক পোস্ট থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানে তিনি ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন।

খোদ রাজধানীতে এমন ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এর এক দিন আগে উত্তরায় সন্ত্রাসী ও বখাটেরা একজন নারী ও একজন পুরুষকে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

নাফিসা মুমুর পোস্ট থেকে জানা যায়, গতকাল সকাল ৮টার দিকে তিনি উত্তরা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন। প্রথমে রিকশায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাস বেছে নেন। কিন্তু বাসে ওঠার দুই মিনিট পর পরিস্থিতি বদলে যায়। বাসটি যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর আরও ৫-৬ জন যুবক সাধারণ যাত্রীর মতো ওঠে। হঠাৎ তারা ছুরি বের করে চিৎকার করে সব কিছু বের করে দিতে বলে। মুহূর্তের মধ্যে তারা বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, ওয়ালেটসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। দুই মিনিটের মধ্যে ছিনতাইকারীরা তাদের কাজ সেরে দ্রুত বাস থেকে নেমে যায়।

পরে যোগাযোগ করা হলে সমকালকে তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিভাগে স্নাতক পাস করেছেন তিনি। মাঝে কিছু দিন একটি বেসরকারি টেলিভিশনে শিক্ষানবিশি করেছেন। উত্তরায় এক আত্মীয়র বাসায় থাকেন। গতকাল একটি অফিসে কিছু কাগজপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন। হাউস বিল্ডিং এলাকায় আসার পর ২২-২৩ বছরের একটি ছেলে তার গা ঘেষে দাঁড়ায়। তাকে সরে দাঁড়াতে বলেন। ছেলেটির চাহনি ও চেহারা দেখে নেশাগ্রস্ত মনে হয়। তিনি তখন অজানা আশঙ্কায় ফোনটা কটির ভেতর লুকিয়ে রাখেন। এর পর খুব দ্রুত বাসে ওই ঘটনা ঘটে। তিনি তখন চালকের পেছনের দিকে সিটে ছিলেন। যখন ওরা ছুরি বের করছিল, তখন কেউ ভয়ে কথা বলেনি। তাঁর ফোন চাইলে তিনি বলেন– ‘ফোন নেই, হারিয়ে ফেলেছি।’ এর পর ওরা কোনো জোরাজুরি করেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুলিশকে জানাইনি। অন্য কেউ জানিয়েছে কিনা বলতে পারছি না।’

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আহমেদ আলী সমকালকে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় এসে কোনো ভুক্তভোগী অভিযোগ করেনি। এ ছাড়া বিভিন্ন সূত্রে ঘটনা জানার পর সেখানে ফোর্স পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানার ওসি শামীম আহমেদ বলেন, ‘এটা গণছিনতাই কিনা তা এখনও নিশ্চিত নই। শোনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসের চালক ও ভুক্তভোগী কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কেউ থানায় এসে অভিযোগ দেয়নি এবং ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ব্যক্তিকেও শনাক্ত করতে পারিনি। ভুক্তভোগী নারীকে পেলে সব তথ্য জানা যাবে।’

ভিক্টর পরিবহন বাসের মালিক ও চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাসের কোনো তথ্য পাইনি। এ ছাড়া ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এমন কিছু পাওয়া যায়নি।’

এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি সাভারের যাত্রীবাহী বাসে ছিনতাই হয়। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে অন্তত ৩ জন আহত হন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পুলিশ টাউন এলাকায় শুভযাত্রা পরিবহনের একটি বাসে এ ঘটনা ঘটে।

বাসের একাধিক যাত্রী জানান, মানিকগঞ্জ থেকে গাবতলীগামী বাসটি সাভারের পুলিশ টাউন এলাকায় থামলে চাকু হাতে দু’জন ওঠে। তারা যাত্রীদের মোবাইল ফোন, ম্যানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা কয়েকজন নারীর গলা থেকে চেইন ছিনিয়ে নেয়। ছিনতাইকারীরা বাসের পেছনের দিকে গেলে যাত্রীদের কয়েকজন তাদের বাধা দেয়। এ সময় ছিনতাইকারীরা কয়েকজন যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করে। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায় বলে জানান কয়েকজন যাত্রী।

এদিকে ২০ ডিসেম্বর সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলন্ত বাসে যাত্রীদের জিম্মি করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীরা বাসে উঠে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গিয়ে এক যাত্রী ছুরিকাঘাতে আহত হন। সাভারের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) সামনে থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন ফটক এলাকা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীদের ছুরির আঘাতে আহত মো.

শামীম হোসাইনকে (৩০) এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ১৭ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলে রাজশাহীগামী একটি বাসে ডাকাতি ও দুইজন নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে বাসটির চালক বাবলু, সুপারভাইজার মাহাবুব আলম ও সহকারী সুমন ইসলামকে আটক করেছিল নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র কর এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ভিভ রিচার্ডস–সোবার্সের মতোই ফিরবেন বাবর

এখনো পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) সর্বোচ্চ রান (৩৫০৫) বাবর আজমের। ২০১৭–২০২২ পর্যন্ত করাচি কিংসের হয়ে খেলেছেন তিনি। তাদের হয়ে দুই হাজারের বেশি রান করেছেন। কিন্তু এবার পেশোয়ার জালমির জার্সিতে যাত্রাটা সুখকর হয়নি বাবরের।

প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি তিনি (০ ও ১)। শুধু পিএসএলই নয়, জাতীয় দলের হয়েও বছরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। টি–টোয়েন্টি না খেললেও ৮ ওয়ানডেতে করেছেন মোটে ২৭৮ রান।

এমন ফর্মহীনতার কারণে প্রায়ই নিন্দুকের সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হচ্ছেন বাবর। এই দুঃসময়ে করাচি কিংসের মালিক সালমান ইকবাল তাঁর হয়েই ব্যাট ধরলেন। পাশাপাশি এ–ও জানিয়ে রাখলেন, বাবর ছন্দে ফিরলে কিংবদন্তি স্যার গ্যারি সোবার্স এবং স্যার ভিভ রিচার্ডসের মতোই ২২ গজে রানের আলো ছড়াবেন। শুধু তা–ই নয়, সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলিকেও তখন ছাড়িয়ে যাবেন তিনি।

সম্প্রতি পাকিস্তানের এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করাচি কিংসের মালিক সালমান বলেন, ‘আমি আপনাদের বলে রাখলাম, আমার কথাগুলো প্রয়োজনে লিখে রাখুন, যখন বাবর আবার ফর্মে ফিরবে, তখন সে বিশ্বের যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে ভয়ংকর হবে, এমনকি বিরাট কোহলির চেয়েও। তাঁর সঙ্গে তখন স্যার গ্যারি সোবার্স এবং স্যার ভিভ রিচার্ডসের মতো মহাতারকাদের মিল পাবেন।’

আরও পড়ুনএবার ‘মাঠে’ নেমে গেলেন বাবর আজমের বাবা০৬ মার্চ ২০২৫

যেকোনো ব্যাটসম্যানেরই নিজস্ব একটা খেলার ধরন থাকে, নিজস্ব কিছু গুণও থাকে। সেই ব্যাটসম্যান ফর্মে না থাকলেও তাঁর প্রতিভা হারিয়ে যায় না। বাবর প্রসঙ্গে যেমনটা বলেছেন করাচি কিংসের এই মালিক, ‘বাবরের মধ্যে আলাদা একটা গুণ আছে। যখন কেউ এমন প্রতিভাবান হয়…তখন সেটা স্থায়ীভাবেই তাঁর সঙ্গে থাকে। আপনি চাইলেও সেই গুণ, সেই দক্ষতাটা পরিবর্তন করতে পারবেন না। খেলার ধরনটা সব সময়ই একজন খেলোয়াড়ের চিরস্থায়ী বিষয়। সে (বাবর) ফিরে আসবেই…ফিরে আসবে চেনা ছন্দে।’

২০১৬ সাল থেকে পিএসএলে খেলছেন বাবর। শুরুটা হয়েছিল ইসলামাবাদ ইউনাইটেডে দিয়ে। এরপর করাচি কিংস হয়ে এবার খেলছেন পেশোয়ারে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৯২ ম্যাচে ৩ হাজার ৫০৫ রান করেছেন বাবর। যেখানে সর্বোচ্চ ১১৫। সেঞ্চুরি দুটি আর ফিফটি ৩৩টি।

আরও পড়ুনছন্দহীন বাবর আজমও রেকর্ড ছুঁতে পারেন১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ