৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার পাওনা, উল্টো বিদেশি ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশ
Published: 19th, February 2025 GMT
ধনী ও জলবায়ু দূষণকারী দেশগুলোর কাছে ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার পাবে। অথচ সেই অর্থ পরিশোধ না করে উল্টো উন্নয়নের নামে প্রায় ৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার বিদেশি ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশকে জর্জরিত করছে উন্নত দেশগুলো। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা একশনএইডের প্রকাশিত একটি বৈশ্বিক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
সমীক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে এই বিদেশি ঋণ প্রত্যাহারের আহ্বান এবং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারে জোর দেওয়া হয়েছে।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন ঘিরে ‘হু ওজ হু’ নামের সমীক্ষা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বিদেশি ঋণের ফাঁদে জর্জরিত। দেশগুলো জাতীয় উন্নয়ন বিসর্জনের বিনিময়ে ধনী দেশগুলোর কাছে পরিশোধ করেছে ১৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। জলবায়ু দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর কাছে ১০৭ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণী ধনী দেশগুলো। এটি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর বিদেশি ঋণ ১ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি। সমীক্ষায় ৭০টিরও বেশি দেশের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ধনী দেশ, বেসরকারি ঋণদাতা ও বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু কর্মসূচিসহ অপরিহার্য সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। ধনী দেশগুলো জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশকে ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, নতুন প্রতিবেদনটিতে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ঋণের ফাঁদের চিত্র ফুটে উঠেছে। ধনী দেশের জলবায়ু ক্ষতিপূরণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঋণ র ফ পর শ ধ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতিকে শোকজ
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মান্নানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে জেলা বিএনপি। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরদের থেকে অভিনন্দন গ্রহণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগ তাঁকে এ শোকজ করা হয়।
আজ বুধবার দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম ও সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত শোকজের চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপি নেতা আবদুল মান্নানকে এ ব্যাপারে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শোকজের চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনি বোদা উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের দ্বারা আপনাকে অভিনন্দিত করার সম্মিলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দলের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে, যা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এহেন শৃঙ্খলাপরিপন্থী কার্যকলাপের জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬ বছর পর গত শনিবার বোদা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে আবদুল মান্নান সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বোদার ময়দানদীঘি ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত সোমবার সন্ধ্যায় বোদা উপজেলা শহরের ফ্রেন্ডস ক্লাবে বসেন আবদুল মান্নান। তিনি ওই ক্লাবের বর্তমান সভাপতি। এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ায় ক্লাবের সদস্যরা তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় ওই ক্লাবের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলমও তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসব ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁকে শোকজ করে জেলা বিএনপি।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ১৯৮৩ সালে নবম শ্রেণির বন্ধুরা মিলে ফ্রেন্ডস ক্লাব করেছিলাম। সেখানে বন্ধুদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন দলের অনেকে আছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমি ক্লাবে বসলে অনেকেই আমার সঙ্গে কোলাকুলিসহ হাত মেলান। এ সময় সদস্যরা আমাকে ফুলও দেন। এখানে হয়তো অন্য দলেরও লোক ছিলেন। ওই ছবি কে নাকি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। কেউ এডিট করেও ছাড়তে পারেন।’ তিনি বলেন, ইতিমধ্যে শোকজের চিঠিটি তিনি হাতে পেয়েছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। এ জন্য এই নোটিশ করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সশরীর লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।