আজ থেকে শুরু পঞ্চম ‘বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’
Published: 19th, February 2025 GMT
করতোয়া বিধৌত পুণ্ড্রনগরের হাজার বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রাচীন জনপদের শহর বগুড়ায় আজ থেকে পঞ্চম ‘বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫ (বিআইএফএফ)’ শুরু হচ্ছে। জাঁকজমক আয়োজনের মধ্যদিয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমি বগুড়া এবং মধুবন সিনেপ্লেক্সে শুরু হচ্ছে এ আয়োজন। তিন দিনব্যাপি এই আয়োজনটি শেষ হবে ২২ ফেব্রুয়ারি।
বগুড়ার একমাত্র চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন পুণ্ড্রনগর চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবটি আজ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিকেল ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী ও প্রযোজক নুসরাত ইমরোজ তিশা।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের ৩৩ দেশের মোট ৯৭টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে যা গতবারের আয়োজনের দ্বিগুণ। প্রতিযোগিতামূলক এই উৎসবে ৫ দেশের মোট ৪৫ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা, কলাকুশলী ও কর্মী উৎসবে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন।
মাস্টার ক্লাস ও মুক্ত আলোচনায় আলোচক ও প্রশিক্ষক হিসেবে থাকবেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় সরকার ও যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আহম্মেদ তাওকীর।
উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘৮৪০’ । উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন জানান ৭টি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচনের জন্য জুরি হিসেবে থাকছেন দেশের ও বিদেশের স্বনামধন্য দশজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র প্রকৌশলী।
দেশীয় জুরিদের মধ্যে রয়েছেন চলচ্চিত্র সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ, অভিনেত্রী কাজী নওসাবা আহম্মেদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম, স্ক্রিপ্ট রাইটার ও সাংবাদিক অপূর্ণ রুবেল, লেখক ও সাংবাদিক অনিন্দ্য মামুন, চলচ্চিত্র নির্মাতা শায়লা রহমান তিথি।
বিদেশি জুরিদের মধ্যে রয়েছেন মিশর থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা মারওয়া ইলসাকুরি, ভারত থেকে নির্মাতা রাকেশ আন্দানিয়া ও অমল ভাগাত। ইতোমধ্যে অনলাইনে ছবি দেখে জুরিদের বিচারকার্য শেষ হয়েছে বলে জানান উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন।
২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে পুরস্কার বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫ম বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হবে বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার প্রাপ্ত ইকবাল হোসাইনের বলী। উল্লেখ্য যে ২০-২২ তারিখ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এবং ২০-২১ ফেব্রুয়ারি মধুবন সিনেপ্লেক্সে একযোগে সকাল ১০ থেকে ৯টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী।
এ বিজ্ঞপ্তিতে পুণ্ড্রনগর চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি পৌষরাম সরকার জুরিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে অংশগ্রহণকারী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ধন্যবাদসহ বগুড়ার সকল স্তরের মানুষের প্রতি উৎসব সফল করতে সহযোগিতা কামনা করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র উৎসব চলচ চ ত র ন র ম ত শ ল পকল উৎসব প এক ড ম পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে, জানালেন উপদেষ্টা ফারুকী
বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তবে নতুন নাম কী হবে- সে বিষয়ে আগামীকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় নতুন রঙ, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে এক সভা শেষে ফারুকী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে; সেখানে আপনারা সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখবেন। আপনাদের চোখেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন অনেক। সেটা এখন আমরা বিস্তারিত না বলছি। সারপ্রাইজ হিসেবেই থাকলো। ইটস এ টিজার। যারা অংশগ্রহণ করবেন; তারা নিজেরাই নিজেদের চোখে দেখতে পারবেন পরিবর্তনগুলো কীভাবে ঘটছে।’
সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় নতুন রঙ, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে জানিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এবারের শোভাযাত্রাটি আর বাঙালিদের শোভাযাত্রা না। এ শোভাযাত্রা বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো, প্রত্যেকের। এজন্য নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে। নতুন নাম কি হবে সেটা সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৈঠকে নির্ধারণ করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, শোভাযাত্রাটি প্রথমে আনন্দ শোভাযাত্রা নামে শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। যে নাম একবার পরিবর্তিত হয়েছে, সবাই যদি সর্বসম্মত হয়; তবে আবার পরিবর্তন হতে পারে। আবার যদি সবাই সর্বসম্মত হয়, তবে পরিবর্তন নাও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে এটাকে (শোভাযাত্রা) কী নামে ডাকা হবে, যে নামে সবাইকে একটা ছাতার মধ্যে আনা যায়। সেটার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, আগামীকালের সভায় সেই সিদ্ধান্ত হবে।’
ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে স্বীকৃতি দিয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ইউনেস্কো এই শোভাযাত্রাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউনেস্কো আগামীবার জানবে এ শোভাযাত্রা আরও বড় হয়েছে, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে। ইউনেস্কোর এটাতে খুশি হওয়ার কারণ হবে, আপত্তি করার কোনো কারণ নেই। আমরা বরং এতদিন অনেকগুলো জাতি-গোষ্ঠীকে মাইনাস করে এসেছিলাম। আমরা এটাকে সংশোধন করছি।’
অনুষ্ঠানটি পুনর্বিবেচিত হয়েছে, তাই এর নামটিও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের তথ্য তুলে ধরে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে একটা রক কনসার্ট হচ্ছে। যেখানে চাকমা, গারো, মারমা ও বাংলা ব্যান্ড- সবাই মিলে পারফর্ম করবে। এছাড়া চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে বাউল ও ফকিররা গান গাইবেন। ওদের একটা উৎসব হবে সেখানে।’
ফারুকী বলেন, ‘এছাড়া ১৪ এপ্রিল সংসদ ভবনের সামনে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্রোন শোর আয়োজন করা হবে। চীনের দূতাবাসের সহযোগিতায় ড্রোন শো হবে। সেখানে বিকেলবেলা গান শুনবেন, সন্ধ্যার পর দেখবেন সংসদ ভবনের ওপরে বাংলার আকাশের ড্রোন দিয়ে কিছু ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এবার ধানমন্ডি ৮ নম্বরের রবীন্দ্র সরোবরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সুরের ধারার গানের অনুষ্ঠান হবে। মেলার মতো আয়োজনও সেখানে করা হবে। অর্থাৎ, ঢাকার নানা জায়গায় উৎসব ছড়িয়ে যাবে।’
এবার নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করার ক্ষেত্রে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সূর্যাস্তের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে- এবার আমাদের নির্দেশনা এটা না। তবে কোন অনুষ্ঠান কখন শেষ হবে সেটা স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা ঠিক করে নেবে।’
এই উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার প্রত্যেক জেলা ও উপজেলার জন্য বরাদ্দ দ্বিগুণ করেছি। পাশাপাশি যে জেলাগুলোতে আমাদের ভিন্ন ভাষাভাষী ভাই-বোনেরা বসবাস করেন, সেই জেলাগুলোতে আমাদের বরাদ্দের পরিমাণ আরও বেশি হবে। সেটা কত হবে, কালকের মধ্যেই মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
সবাইকে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘সরকার অবশ্যই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। আমরা আশা করি, আগে যেভাবে সামনে- পিছনে র্যাব দিয়ে মিছিল করতে হতো, এবার সেভাবে করতে হবে না। এটা বাংলাদেশের মানুষের সবার উৎসব। সব রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক দল মনে করে, এটা তাদের উৎসব। তারা প্রত্যেকই অংশ নেবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘কাল আমরা অপারেশনাল পর্যায়ের মিটিং করবো। সিদ্ধান্তগুলো নিতে কিছুটা সময় লাগবে। অনেকগুলো মিটিং আছে। ঈদের খোলার পরে (ছুটি শেষে) সংবাদ সম্মেলন করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’