করতোয়া বিধৌত পুণ্ড্রনগরের হাজার বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত প্রাচীন জনপদের শহর বগুড়ায় আজ থেকে পঞ্চম  ‘বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫  (বিআইএফএফ)’ শুরু হচ্ছে।  জাঁকজমক আয়োজনের মধ্যদিয়ে  জেলা শিল্পকলা একাডেমি বগুড়া এবং মধুবন সিনেপ্লেক্সে শুরু হচ্ছে এ আয়োজন। তিন দিনব্যাপি এই আয়োজনটি শেষ হবে ২২ ফেব্রুয়ারি। 

বগুড়ার একমাত্র চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন পুণ্ড্রনগর চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবটি আজ  জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিকেল ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী ও প্রযোজক নুসরাত ইমরোজ তিশা।  

আয়োজক সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের ৩৩ দেশের মোট ৯৭টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে যা গতবারের আয়োজনের দ্বিগুণ। প্রতিযোগিতামূলক এই উৎসবে  ৫ দেশের মোট ৪৫ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা, কলাকুশলী ও কর্মী উৎসবে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন। 

মাস্টার ক্লাস ও মুক্ত আলোচনায় আলোচক ও প্রশিক্ষক হিসেবে থাকবেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় সরকার ও  যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আহম্মেদ তাওকীর। 

উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘৮৪০’ । উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন জানান  ৭টি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচনের জন্য জুরি হিসেবে থাকছেন দেশের ও বিদেশের স্বনামধন্য দশজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র প্রকৌশলী। 

দেশীয় জুরিদের মধ্যে রয়েছেন চলচ্চিত্র সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ, অভিনেত্রী কাজী নওসাবা আহম্মেদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম,  স্ক্রিপ্ট রাইটার ও সাংবাদিক অপূর্ণ রুবেল, লেখক ও সাংবাদিক অনিন্দ্য মামুন, চলচ্চিত্র নির্মাতা শায়লা রহমান তিথি। 

বিদেশি জুরিদের মধ্যে রয়েছেন মিশর থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা মারওয়া ইলসাকুরি, ভারত থেকে নির্মাতা রাকেশ আন্দানিয়া ও অমল ভাগাত। ইতোমধ্যে অনলাইনে ছবি দেখে জুরিদের বিচারকার্য শেষ হয়েছে বলে জানান উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন।

২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে পুরস্কার বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫ম বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হবে বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার প্রাপ্ত ইকবাল হোসাইনের বলী।  উল্লেখ্য যে ২০-২২ তারিখ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এবং ২০-২১ ফেব্রুয়ারি মধুবন সিনেপ্লেক্সে একযোগে  সকাল ১০ থেকে ৯টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। 

এ বিজ্ঞপ্তিতে  পুণ্ড্রনগর চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি পৌষরাম সরকার জুরিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে অংশগ্রহণকারী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ধন্যবাদসহ  বগুড়ার সকল স্তরের মানুষের প্রতি উৎসব সফল করতে  সহযোগিতা কামনা করেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র উৎসব চলচ চ ত র ন র ম ত শ ল পকল উৎসব প এক ড ম পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জাতির আসল পরিচয় তার সংস্কৃতি

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সংস্কৃতিমনা বাঙালির রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা করেন। তারা পাকিস্তান সরকারের বাধা অগ্রাহ্য করে রবীন্দ্র শতবর্ষ উদযাপন করেন

বাঙালির ঐতিহ্যে যুক্ত বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। এই উদযাপনের সূচনা হয় নতুন বছরের ভোরে ছায়ানটের সংগীতায়োজনের মাধ্যমে। ১৯৬৭ সাল থেকে নিয়মিত এ আয়োজন করে আসছে সংগঠনটি। বহু বাধা-বিপত্তি ও হুমকির মুখোমুখিও হতে হয়েছে সংগঠনটিকে। তবু দমেনি ছায়ানট। 
ছায়ানট, বাঙালির সংস্কৃতি, উৎসবসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন বিশিষ্ট শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল। সাক্ষাতকার নিয়েছেন দ্রোহী তারা

সমকাল : বাংলা নববর্ষ ও ছায়ানট– এ দুটি বিষয় আপনি কীভাবে দেখেন? 

খায়রুল আনাম শাকিল : সম্রাট আকবরের সময় থেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়ে আসছে; কিন্তু এই উদযাপনের ভঙ্গিটা ভিন্ন ছিল। আমরা জানি, হালখাতা করা, ছোটখাটো মেলার মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন– এটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। আমরা যখন ছোট ছিলাম, গ্রামাঞ্চলেই বেশি গুরুত্বের সঙ্গে পহেলা বৈশাখ উদযাপন হতো। আমি বলব, শহরের মানুষ পহেলা বৈশাখকে উদযাপন করা শিখেছে ১৯৬৭ সালে, যখন ছায়ানট প্রথম পহেলা বৈশাখ মুক্ত আকাশের নিচে সংগীতের মধ্য দিয়ে বরণ করা শুরু করল। এটি একটি ভিন্ন মাত্রা পেল। এর আগে ছায়ানটের যে প্রতিষ্ঠা, সেটি কিন্তু পহেলা বৈশাখের দিনেই।
প্রথম দুয়েক বছর ছায়ানটের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে উদযাপন করেছি, পরে আমাদের ওখানে যারা উপস্থিত দর্শক-শ্রোতা ছিলেন, তারা কেউ কেউ পরামর্শ দিলেন– এটি যেন শুধু ছায়ানটের ভেতরে সীমাবদ্ধ না রাখি। এটি বাঙালির বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপন করতে পারি। বৈশাখের প্রথম দিন নববর্ষ অনুষ্ঠান হিসেবে সবার কাছে উপস্থাপন করতে পারি। ড. নওয়াজ আলী সেই সময় রমনা পার্কে ঘুরে বেড়াতেন। একসময় ওই বটগাছটা দেখে তিনি ছায়ানটের কাছে এসে পরামর্শ দিলেন, আমরা মুক্ত আকাশের নিচে অনুষ্ঠানটি করতে পারি কিনা। ধারণাটি আমাদের কাছে অসাধারণ লেগেছিল। এর মধ্যে নতুনত্ব রয়েছে।  ১৯৬৭ সালে মুক্ত আকাশের নিচে সংগীতের মধ্য দিয়ে নতুন বর্ষকে পালন শুরু করলাম। বাঙালি সমাজ এটি খুব ভালোভাবে নিল, যদিও গোড়ার দিকে খুব অল্প সংখ্যক লোকের আসা-যাওয়া ছিল। পরে এটি একটি বিশাল উৎসবে পরিণত হয়। এমন একটি উৎসব, যেখানে সব ধর্ম, সব সম্প্রদায়ের মানুষই নিজ অনুষ্ঠান হিসেবে তাদের হৃদয়ে ধারণ করল। এই একটি অনুষ্ঠান, যেখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এক হয়ে বিশ্বের কাছে 
বলতে পারি– আমরা বাঙালি। এই পরিচয়ে আমরা গর্ববোধ করি।

সমকাল : ষাটের দশকে বাঙালির বিকাশে নববর্ষের প্রাসঙ্গিকতা কী ছিল?

খায়রুল আনাম শাকিল : ষাটের দশকে আমাদের প্রথম রবীন্দ্র শতবর্ষ পালনে বাধা এলো। সে সময় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার, তারা মনে করলেন যে রবীন্দ্রনাথ আমাদের কবি না, রবীন্দ্রনাথকে আমাদের দরকার নেই। সে সময়টাতে শতবর্ষ পালনে বিশ্বজুড়ে সব বাঙালি রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করার উদ্যোগ নেয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সংস্কৃতমনা বাঙালিরা রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা করেন। তারা পাকিস্তান সরকারের বাধা অগ্রাহ্য করে রবীন্দ্র শতবর্ষ উদযাপন করেন। পরে এক পর্যায়ে ছায়ানট সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠার ভাবনাটি আসে। সেই সময় থেকে বাঙালিরা নানা উৎসব পালন করে আসছে। অর্থাৎ পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের জায়গা থেকে ছায়ানটের আত্মপ্রকাশ। বাঙালির বিকাশের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের জন্মসূতো জড়িয়ে আছে। 

সমকাল : নববর্ষ ও বাঙালির অন্য উৎসবের মধ্যে পার্থক্য এবং বিশেষত্বটা কোথায় বলে আপনি মনে করেন?

খায়রুল আনাম শাকিল : আমাদের দেশে নানা ধর্মের মানুষের বাস। মুসলমানের ঈদ, হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা, খ্রিষ্টানের বড়দিন। তবে পহেলা বৈশাখের বিশেষত্বটা কী? এই দিনটাতে বড় বড় উৎসব ও অনুষ্ঠান হয় সব ধর্মের মানুষকে ঘিরে। শুধু পহেলা বৈশাখ, যেখানে সব সম্প্রদায়ের মানুষ, বাঙালি পরিচয়ে এক হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে, ভালোবাসা প্রদর্শন করে। আমি মনে করি, ঢাকার রমনার বটমূলে যে অনুষ্ঠানটি হয়, সেটি বিশ্বের কাছে নতুন পরিচয়ে আমাদের পরিচিত করেছে। বাঙালির যে নিজস্ব একটি ভঙ্গি আছে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার, সেটা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। এই অর্জন হারালে চলবে না। বিশ্বের সব মানুষই জানে, বাঙালি এই পহেলা বৈশাখের দিনে, তাদের যে নিজের সংস্কৃতি, সংগীত, সাহিত্য, কবিতা ইত্যাদি এই দিনে উপস্থাপন করে নিজ পরিচয় তারা সুন্দরভাবে পৃথিবীর কাছে তুলে ধরে।

সমকাল : আমাদের বৈশাখ উদযাপনের মধ্যে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন বলে আপনি মনে করেন?

খায়রুল আনাম শাকিল : বৈশাখ উদযাপনের প্রধান জায়গাটি হলো বাঙালির একটি দিন। বিশেষ করে সব সম্প্রদায়ের মানুষ ধর্মীয় পরিচয় ভুলে একে অপরকে বাঙালি বলে পরিচয়ে আলিঙ্গন করে। এটি একটি অসম্ভব ভালো লাগার দিক। বিভিন্ন দেশে নানাভাবে রকমারি উৎসব হয়। পহেলা বৈশাখে বাঙালিরা এক হয়ে ভালোবাসার যে জানান দেয়, তা অবিস্মরণীয়। 

সমকাল : সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বর্ষবরণ উদযাপনে কতটা বদল এসেছে বলে আপনি মনে করেন? 

খায়রুল আনাম শাকিল : আসলে ছায়ানট হিসেবে যদি আমি কথা বলি, ছায়ানটের কাজই হলো বাঙালি ঐতিহ্য রক্ষা করা। এটিকে লালন করে ছড়িয়ে দেওয়া। আমাদের পরিচয়, সংগীত, সাহিত্য এটিকে অবিকৃত রেখে প্রচার-প্রসার করা। কিছু কিছু গানের ক্ষেত্রে নতুন যন্ত্রসংগীতের ব্যবহার ও সংগীত আয়োজন ভিন্নভাবে হচ্ছে। যেমন– বিদেশি সুরের গান ভিন্নভাবে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ডি এল রায়সহ যারা ছিলেন, তারা অতিরিক্ত যন্ত্রের ব্যবহার পছন্দ করতেন না। কারণ, অতিরিক্ত যন্ত্রের ব্যবহারে গানের সিদ্ধতা নষ্ট হয়। এ জন্য একটি পরিমিত বোধ থাকা উচিত বলে মনে করি।  
আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য ছায়ানট যেভাবে সংগীতকে উপস্থাপন করে, সেভাবে আমরা এটিকে ধরে রাখব ও ধারণ করব। আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা গান শিখছে, তাদের প্রতিবছর এই কথাগুলো বলে থাকি। যেন বাঙালি সংস্কৃতির ব্যাপারে তারা আকৃষ্ট হয় এবং তারা যেন সত্যিকারভাবে বাঙালি সংস্কৃতিকে বুঝে নেওয়ার ব্যাপারে ছায়ানটের এই শিক্ষাটা নেয়।
সমকাল : ছায়ানটে যে হামলা হয়েছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিতে ফিরে এসেছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন?
খায়রুল আনাম শাকিল : আমি বুঝতে পারি না, কেন ছায়ানটের মতো একটি অনুষ্ঠানে হামলা হবে। এখানে আমরা কী করি? এখানে আমরা নতুন নতুন গান উপস্থাপন করি, দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি, ভালো 
সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে তারা কী করতে পারে, তা জানানোর চেষ্টা করি। প্রতিবছর সদ্য প্রয়াত সন্জীদা খাতুন দাঁড়িয়ে কিছু কথা বলতেন। সে কথাগুলোর মধ্যে কী ছিল? ভালো 
সমাজ গড়ার কথা, সমাজে যে অবক্ষয় ঘটছে, সেটি থেকে বেরিয়ে আসার কথা। এ ধরনের কথা আমরা বলে আসছি, বলে যাব। 

সমকাল : উগ্রবাদী নানা মহল থেকে ছায়ানটের নিজস্বতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার মত কী?

খায়রুল আনাম শাকিল : আমাদের যে কাজ, সে কাজের সঙ্গে ধর্মের কোনো সংঘর্ষ নেই। আমরা কখনও এটি ভাবিনি। আমরা যে কাজ করি, তা হলো বাঙালির নিজ পরিচয়, সেটি ঐতিহ্য ধরে রাখার ব্যাপার। আমাদের নিজ পরিচয় কোথায়, নানা গবেষণার মধ্য দিয়ে সে বিষয় জানতে চাই। সেটি আমরা লালন করতে চাই। আমরা মনে করি না যে, ধর্মের সঙ্গে কোনো রকম বিরোধ রয়েছে। বরং যার যার ধর্ম আমরা পালন করব। পাশাপাশি আমাদের যে বাঙালি হিসেবে পরিচয়, সেটিও জেনে নেব। কারণ, এটি জানা জরুরি। একটি জাতির কাছে তার আসল পরিচয় তার সংস্কৃতি। একটি সংস্কৃতির মধ্যে সংগীত, সাহিত্য এবং ধর্মীয় পরিচয়টাও সংস্কৃতির দিক। কিন্তু এই পহেলা বৈশাখের দিনে বাঙালি পরিচয় জেনে নেওয়ার জন্য, যা কিছু করণীয়, যা কিছু উপস্থাপন করতে হয়– সেই কাজই আমরাই পহেলা বৈশাখের দিন উপস্থাপন করব।
কারণ লক্ষ্য করেছি, সেই ছোট্ট অনুষ্ঠান থেকে আজকের লাখ লাখ লোক এই পহেলা বৈশাখের দিনে উপস্থিত হয়ে তারা এ উৎসবটাকে একটা ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছে। এর মূল কারণটাই হলো সব সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করে, বাঙালির সংস্কৃতি ঘিরে তাদের মধ্যে অন্য ধরনের জাতিগতভাবে একটা ভালোবাসা তৈরি হয়। এটি আমরা ধরে রাখতে চাই, যাতে আগামী দিনগুলোতে আমাদের প্রজন্ম যেন পহেলা বৈশাখের তাৎপর্য ভোগ করতে পারে। বাঙালি যেন এই পরিচয়ে হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকে।

সমকাল : ছায়ানট ও প্রয়াত সন্জীদা খাতুন বিষয় নিয়ে কিছু স্মৃতিচারণ করুন।

খায়রুল আনাম শাকিল : সন্জীদা আপাকে শিক্ষক হিসেবে একেবারে গোড়া থেকেই আমি পেয়েছি। যখন ছায়ানটে আমি প্রথম ভর্তি হই, সেই ষাটের দশকের শেষের দিকে। তখন থেকেই ওনার ক্লাস করার সুযোগ হয়েছিল, একেবারেই শিশু বয়স থেকেই।
সেই থেকে গান শিখে শিখে একটা পর্যায়ে আসি। আমি এখানে শিক্ষকতা শুরু করি। পরে ছায়ানটের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হই। একটা সময় আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বেশ কিছু সময় ধরে ছিলাম। সেই সময় আমার সঙ্গে সবার প্রিয় মিনু আপাকে ঘনিষ্ঠভাবে জানার সুযোগ হয়। তার মাধ্যমেই আমরা যারা ছায়ানটের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত, তারা কিন্তু এই বাঙালি পরিচয় কী, রবীন্দ্রনাথ কে, কাজী নজরুল ইসলাম কে– তাদের জীবনবোধ ও দর্শন এসব কিছু উনাদের মতো মানুষের কাছ থেকে শিখেছি, জেনেছি। এ জন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। 
যতটুকু জেনেছি, সে বিষয়ে উনাদের অবদান রয়েছে এবং আমরা সত্যিকার অর্থে উনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কীভাবে আমরা এগুলো চর্চা করব, কীভাবে এই পরিচয় এই প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেব, কীভাবে ভালো মানুষ হবো, সততা নিয়ে কীভাবে চলব– এই সবটার পেছনে রয়েছে উনাদের অবদান। উনাদের যে ধ্যান-ধারণা, জীবনদর্শন– এটি যেন আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি, হৃদয়ে ধারণ করতে পারি।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নববর্ষে জাবিতে গাজার মানচিত্র এঁকে গণহত্যার অভিনব প্রতিবাদ 
  • আল-আকসা মসজিদে সাত শতাধিক ইসরায়েলির ‘তাণ্ডব’
  • বর্ষবরণের রঙে রঙিন সারা দেশ, জেলায় জেলায় যত আয়োজন
  • ডিএনসিসির বৈশাখী মেলা: শহরের বুকে গ্রামীণ আবহ
  • বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বৈশাখী মেলা
  • চৈত্রের শেষ দিনে জাবিতে ব্যাঙের পানচিনি ‘বিয়ে’ 
  • আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়েই পথ চলতে হবে
  • জাতির আসল পরিচয় তার সংস্কৃতি
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে কক্ষে তালা
  • সিলেটের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক