কিছু মানুষের দুর্বৃত্তপনার কারণে এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ঘটে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. নাসিমুল গণি। তিনি বলেছেন, দেশের এভিয়েশন খাতে অনেক রকম সমস্যা রয়েছে। তা অনুসন্ধান করতে আমরা বসেছি।

বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটির শুনানির আগে এসব কথা বলেন নাসিমুল গণি।

তিনি বলেন, আমাদের (এভিয়েশন সেক্টরে) অনেক রকম সমস্যা রয়েছে। শুধু সমস্যাটা একতরফা যে তাদের (জেনারেল সেলস এজেন্ট) সেটা নয়। বিভিন্ন সমস্যা আছে। আমরা আজকে একটা বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানের চেষ্টা করছি। আমাদের দেশ থেকে যারা মধ্যssপ্রাচ্য যায়, তাদের টিকিটের দাম অনেক বেশি পড়ে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় আমাদের কিছু নিয়ম আছে; বিধি আছে। এর কিছু প্রতিপালন হচ্ছে আর কিছু হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে কিছু মানুষের দুর্বৃত্তপানা রয়েছে। এটা অনুসন্ধান করতে আমরা বসেছি।

সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশে যেসব এয়ারলাইন্স চলে, তাদের যেসব প্রতিনিধি রয়েছে (জেনারেল সেলস এজেন্ট), তাদের নিয়ে বসেছি। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো জানতে চাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের অনুসন্ধানও যাতে মানুষের কাজে লাগে, এ কারণেই এই প্রচেষ্টা। এটা আমাদের মতো করে আমরা তদন্ত করব।
তিনি বলেন, আমরা এয়ার টিকিটের ভাড়া নির্ধারণ করতে যাচ্ছি না। শুধু তদন্ত করছি। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকারকেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ দেখাতে হবে

খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের পথ দেখাতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই এই দায়িত্ব নেবে—এমন প্রত্যাশা করেন দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও লেখকেরা। তাঁরা অবশ্য এ–ও বলেন, আগামী ছয় মাসেই সব ঠিক হবে, এমন আশা প্রকাশ করাও ঠিক হবে না। তবে পথ দেখাবেন বর্তমান সরকারের নেতৃত্ব প্রদানকারীরা। বর্তমানে বৈষম্যহীন, সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ আছে।

আজ শনিবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের গভর্নরের স্মৃতিকথা শীর্ষক বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। দৈনিক বণিক বার্তা বইটি প্রকাশ করেছে। রাজধানীর আইসিএবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালে এ বইয়ের প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়।

অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই। মানসম্পন্ন জীবনযাত্রা দিতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় সংস্করণে গভর্নরের স্মৃতি কথা থাকবে না। এখনকার বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখতে চাই। শপথ নিয়েছি তো, তাই অনেক কথা এখন বলতে পারি না।’

বইয়ের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘ছাত্রজীবনে আমি যে সংগঠনের রাজনীতি করতাম, লেখকও সেই ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। লেখকের রাজনীতিতে যেমন সংযোগ ছিল, তেমনি পড়াশোনায় সংযোগ ছিল।’

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শহর ও গ্রামের মধ্যে বৈষম্য বাড়ছে—এই বইয়ে সেই চিত্র উঠে এসেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বিকাশ কীভাবে ঘটেছে, সেই বিষয়েও এতে আলোকপাত করা হয়েছে।

লেখক ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, ব্যাংক খাত ঠিক করার সুযোগ এখন। কারণ, এখন রাজনৈতিক চাপ নেই। তিনি প্রবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীরের মতে, বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ আছে এই বইয়ে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশের গভর্নরকে পালিয়ে যেতে হয়। নীতিনির্ধারণের সময় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হয়। খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখাবে বর্তমান সরকার, এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ষাটের দশকের রাজনীতির একটি চিত্র পাওয়া যায় গভর্নরের স্মৃতিকথা বইয়ে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান বলেন, দেশকে উন্নত করতে হলে গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে। আর গরিব মানুষকে দেখতে হলে বিনয়ী হতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক কাজী মারুফুল ইসলাম মনে করেন, ‘এত দিনের বাজার বন্দোবস্তে একটুও আঁচড় লাগেনি। সরকারের তরফেও কোনো উদ্যোগ দেখছি না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ