শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় কুয়েট প্রশাসনের মামলা
Published: 19th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কুয়েটের সহকারী রেজিস্ট্রার (লিগ্যাল) মো. সাইফুর রহমান বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলাটি করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পুলিশ মামলা দায়েরের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেনি। খানজাহান আলী থানার ওসি মো.
আরো পড়ুন:
কুয়েটে সংঘর্ষ নিয়ে যা বলছে ছাত্রদল
বানিয়াচংয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অনেক
থানার ডিউটি অফিসার এএসআই হযরত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি রাত সোয়া ১০টার দিকে জানান, মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজ তিনি হাতে পাননি।
এদিকে, আজ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় হামলার ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা, ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের আদেশটি বহাল রাখা ও শিক্ষার্থীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধের ঘোষণা কঠোরভাবে অনুসরণ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং এ আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী চাকরিচ্যুত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হোক মর্মে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
কুয়েট থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার ছাত্রদের দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার প্রেক্ষিতে একটি অনাকাঙ্কিত ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে চারটি দাবি পেশ করা হয়। উক্ত দাবির প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে ভাইস-চ্যান্সেলর শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতা ও যে কোনো অন্যায়ের বিচার করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। কোনরূপ কালক্ষেপণ না করে স্থানীয় আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ভাইস চ্যান্সেলর দ্রুত সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
এছাড়া, ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য ভাইস চ্যান্সেলর সব ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, সব পরিচালক, প্রভোস্টদের নিয়ে বিকেলে একটি সভা আহ্বান করেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী উপস্থিত হওয়ার আগেই বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরসহ আরো কয়েজন শিক্ষক স্ব-শরীরে সংঘর্ষ স্থলে যান এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিবৃত্তের চেষ্টা করেন। এসময়ে কয়েকজন শিক্ষক, ভাইস-চ্যান্সেলর, বহু শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীও আহত হয়ে কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন। এসময় ভাইস চ্যান্সেলরের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও শিক্ষার্থীদের সব দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণের আশ্বাস প্রদান করেন।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বা জানানো হয়েছে এবং আর যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র জন য র জন ত স ঘর ষ ধরন র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা জুড়ে দুই দিনে ৬ লাশ, জনমনে আতংক
নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। জেলায় একের পর এক ঘটছে অঘটন। ফলে জনমনে আতংক বিরাজ করছে। গত ২৪ ঘন্টায় নবজাতকসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলো, রূপগঞ্জের দেলোয়ার (৩০) ও অঞ্জাত নবজাতক ও সোনারগাঁয়ের বৃদ্ধ সিরাজুল (৭০)। শনিবার (১২ এপ্রিল) জেলার সোনারগাও এবং রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে এ লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।
এরআগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি পশ্চিম পাড়া বড়বাড়ি এলাকার মরহুম আক্তার হোসনের ভাড়া বাড়ির পাশ থেকে মা-শিশু সন্তানসহ তিনজনের বস্তাবন্দি খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এনিয়ে গত দু’দিনে ছয় লাশ লাশ উদ্ধারের ঘটনাতো জেলা জুড়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে আতংক। আর সচেতন মহল বলছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলের এক নম্বর সেক্টরের একটি প্লট থেকে দেলোয়ার হোসেন নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ সময় লাশের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরিও উদ্ধার করা হয়। নিহত দেলোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ সদর থানার শোলাকিয়া এলাকার আবু সাঈদের পুত্র।
পুলিশের ধারণা, রাতের যেকোনো সময় দুর্বৃত্তরা উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে ওই যুবককে হত্যা করে এখানে ফেলে গেছে।
অপরদিকে বেলা ১১টার দিকে দাউদপুরে ডেমরা কালীগঞ্জ সড়কের খৈশার এলাকায় পরিত্যক্ত ভিটি থেকে এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে শনিবার সকালে সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও এলাকায় মেঘনা শাখা মেনিখালি নদীর পাশের বালুর মাঠের ঝোপ থেকে বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলাম (৭০) এর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল বিকেলে তিনি নিখোঁজ হন। নিহত সিরাজুল ইসলাম একই ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের বাসিন্দা। নিখোঁজের পর তার ছেলে শামীম রেজা বাদী হয়ে ৭ এপ্রিল সকালে সোনারগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পুলিশের ধারণা, বৃদ্ধ সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে স্ট্রোক কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়ে আর উঠতে পারেননি।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী ও সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান জানান, পুলিশ উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক পৃথক আইনীব্যবস্থা পক্রিয়াধীন রয়েছে।