শিক্ষক পদায়নের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ তৃতীয় দিনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 19th, February 2025 GMT
বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির তৃতীয় দিন ছিল আজ বুধবার। গত সোমবার শূন্যপদে শিক্ষক পদায়নের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ও অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণার পর ক্লাসে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শাটডাউন কর্মসূচির মধ্যেই আজ দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বান্দরোডে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে শিক্ষকসংকটের কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা—উভয় ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
শিক্ষকসংকটের কারণে বেশ কয়েকটি বিভাগে পাঠদান ব্যাহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশেষ করে মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ফিজিওলজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ডিপার্টমেন্টসহ ডেন্টাল ইউনিটেরও অধিকাংশ ডিপার্টমেন্টে শিক্ষকসংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভবিষ্যতে চিকিৎসাব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এই মেডিকেল কলেজে ৬০ শতাংশের ওপরে শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এসব শূন্যপদে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এ সময় তাঁরা সম্প্রতি বিনা কারণে বদলি করা শিক্ষকদের ফিরিয়ে আনারও দাবি জানান।
কলেজ প্রশাসন সূত্র জানায়, চিকিৎসক গড়ার ঐতিহ্যবাহী এ মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের ৩৩৪টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৪৬ জন। বাকি ১৮৮টি পদ শূন্য রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, এমন অবস্থার মধ্যেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কদের নাম ভাঙিয়ে কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান এ কে এম আকবর কবীর, সহযোগী অধ্যাপক ও প্যাথলজি বিভাগের প্রধান প্রবীর কুমার সাহার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানের বিপক্ষে থাকার মিথ্যা অভিযোগ দেয় মন্ত্রণালয়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত অক্টোবরে এ কে এম আকবর কবীরকে পটুয়াখালী এবং প্রবীর কুমার সাহাকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়। এ ঘটনায় কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন এবং মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানালেও কাজে আসেনি। এর ফলে ওই দুটি বিভাগ এখন শিক্ষকশূন্য।
সমাবেশে মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকসংকট ইস্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির কারণে মেডিকেল কলেজে ক্লাস, পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমরা কলেজের প্রধান ফটকগুলোতে তালা দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউনের ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছি।’
নাইমুর রহমান বলেন, ‘১৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিয়ে কলেজ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দাবির কথা জানিয়েছি আমরা। কিন্তু এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কোনো উদ্যোগ নেননি। আমরা দ্রুত শিক্ষকসংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় আন্দোলন চলবে।’
নাইমুর রহমান সমাবেশে আরও বলেন, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি ডেন্টাল অনুষদের প্রফেশনাল পরীক্ষা এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত হলে এর দায়ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। দাবি না মানা হলে কোনোভাবে আমাদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াব না এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।’
আজ সকালে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা কর্মসূচির কারণে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। আর প্রধান ফটকগুলো তালাবদ্ধ দেখে শিক্ষকেরা বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
নিউনেটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকালে কলেজে গিয়ে হাজিরা দিতে পারিনি। তবে তাঁদের দাবি যৌক্তিক। ভালো শিক্ষার জন্য শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আশা করি, দ্রুত শিক্ষকসংকট নিরসনে উদ্যোগ নেবে সরকার।’
শিক্ষকসংকটের কথা স্বীকার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক এবং তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ কল জ র সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি এখন আমার দখলে: আসিফ
সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও আসিফ আকবর একজন ক্রিকেটার ও ক্রিকেটপাগল মানুষ। প্রেম-বিয়ে-সংসার তাকে নানা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে নিয়ে গেছে। ফলে আসিফের আর জাতীয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলা হয়নি। তার কাছে ক্রিকেট মানেই আকুলতা। আরো একবার স্মৃতিবেদনায় ভাসলেন এই তারকা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন আসিফ আকবর। তাতে স্মৃতি হাতরে এই গায়ক বলেন, “ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম কৈশোরের উচ্ছ্বল সময়টায়। এসএসসি পরীক্ষার সময়ই ঢাকা লীগে অভিষেক হয়ে যেত, বাধা হয়ে দাঁড়াল বোর্ড পরীক্ষা। কুমিল্লার প্লেয়ারদের চিটাগং লীগে খেলতে হলে ঢাকার আগে সেখানে রেজিস্ট্রেশন করতে হতো, তখন সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশ বিমানে রেজিস্ট্রেশনের। এভাবে গেল আরো একটি বছর, সফলতার সাথে চিটাগং লীগ খেললাম বার্ডস শিপিং করপোরেশনে। ৯১/৯২ সেশনে এসে আবার খড়গ নেমে এলো এইচএসসি পরীক্ষার, প্রেম করে বিয়ে করে ফেললাম ৯২ সালে।”
ক্রিকেটার আসিফের পরিচয়পত্র
আরো পড়ুন:
ফের একসঙ্গে বালাম-ন্যানসি
ঢাকায় পাকিস্তানি গায়ক মুস্তফা জাহিদের কনসার্ট
পরের ঘটনা বর্ণনা করে আসি আকবর বলেন, “তারপর অনার্স পড়তে গিয়ে ঢাকায় প্রতিষ্ঠার রণে ভঙ্গ দিতেই হলো। একই সাথে হারিয়ে গেল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে যোগদানের সুযোগ এবং ইচ্ছেটাও। পড়াশোনা, সংসার, সন্তান আর প্রতিষ্ঠা পাবার সংগ্রামে কেটে গেল আরো বেশ কিছু বছর। দুঃসহ সব সময় পেরিয়ে প্রতিষ্ঠা পেলাম গানে, অথচ এই গানের জায়গাটাতেই আমি সবচেয়ে বেশি দুর্বল।”
৩ দশক আগের ক্রিকেটার আসিফ আকবরের পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। যা দেখে আপ্লুত এই তারকা। আসিফ আকবর বলেন, “দীর্ঘদিন পর ক্রিকেট পাগল বন্ধু আসাফের মাধ্যমে খুঁজে পেলাম ক্রিকেটার হিসেবে নিজের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার। আসাফ অনেক চেষ্টার পর হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ক্রিকেটার পরিচয়পত্র। কৈশোরের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেলেও এই ছোট্ট পরিচয়পত্রটি আপ্লুত করেছে আমায়, মনে হলো বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি এখন আমার দখলে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে আমার আইডি নাম্বার— ৩৩৮৯। ভাই বন্ধু আসাফের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা, ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘ আড্ডায় আমাদের ছবিই তোলা হয়নি।”
ঢাকা/শান্ত