জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চিন্তক সাময়িকীর বিশেষ সংখ্যা ‘গণঅভ্যুত্থান’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস, তাৎপর্য ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে এর প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে এ বিশেষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এতে চিন্তক এর সম্পাদকমণ্ডলী, লেখক, ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন চিন্তক-এর সম্পাদক জুনায়েদুল ইসলাম।

‘গণঅভ্যুত্থান’ সংখ্যায় গবেষণাধর্মী নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, কবিতা ও ছোটগল্প স্থান পেয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ‘জুলাই বিপ্লব’ ও গণঅভ্যুত্থানের ওপর বিশদ আলোচনা এবং দুর্লভ ছবির সংকলন এটিকে আরো গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, “এ সংখ্যা আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে নতুনভাবে জানার সুযোগ করে দেবে।”

আয়োজকদের প্রত্যাশা, বিশেষ সংখ্যাটি পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলবে এবং গণ আন্দোলনের চেতনাকে আরও শক্তিশালী করবে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলন মনে হয় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে: তাহির জামান প্রিয়র মা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামান বলেছেন, আজকে আট মাস পরে আমার উপলব্ধি হচ্ছে আন্দোলন মনে হয় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সবাই মনে হয় সবার জায়গা থেকে বাণিজ্য করছে। মামলা বাণিজ্য হচ্ছে যতটুকু বুঝি। এরা কারা করছে আমরা সবাই বুঝি। খুনি হাসিনাকে যেমন আশেপাশে সবাই ফ্যাসিস্ট হতে সাহায্য করেছিল, আমি চাই না আর কেউ ফ্যাসিস্ট হোক।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৪২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন শামসি আরা জামান। এ সময় প্রিয়র চার বছর বয়সী মেয়ে সাবিরা জামানও তার সঙ্গে ছিলেন।

সামসি আরা জামান বলেন, আমি এত রাজনীতি বুঝি না। আমি মা। ১৯ জুলাই যখন আমার ছেলে নিহত হয়, ২০ আগস্ট যখন মামলা করতে আসি, আমাকে ১৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আমি হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম, গেটের বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি ছেলেরা হাততালি দিয়ে স্লোগান দিচ্ছে, প্রিয় ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। আস্তে আস্তে পুরো থানা ভরে গেলো। আন্দোলনে যেভাবে একসঙ্গে এত মানুষ জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছিল। আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সব জায়গায় এখন ক্ষমতার চর্চা চলছে, কে কীভাবে কে ক্ষমতায় যাবে। যে ক্ষমতাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে বিদায় করেছে, সেই আবার ক্ষমতার লড়াই দেখছি। এই সংগঠন ক্ষমতার জন্য না, জনগণের জন্য মানুষের জন্য কাজ করছে। আগামীতে কেউ যেন ফ্যাস্টিস্ট না হয়ে উঠতে পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, আমিও সঙ্গে থাকবো।

সমাবেশ শেষে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে জিমনেশিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনির সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম। এ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, শামসুল আলম সজ্জন ও বাকী বিল্লাহ; সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর আলম, রাকসুর সাবেক ভিপি রাগীব আহসান মুন্না প্রমুখ।

রাগীব নাঈম তার বক্তব্যে বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটাতে সক্ষম হলেও ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এখনো সম্ভব হয়নি। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতে টালবাহানা, সকল শহীদ পরিবারে সহায়তা পৌঁছাতে না পারা, শ্রমিকদের উপর নির্বিচার গুলি চালানো, ছাত্র আন্দোলনে ন্যাক্কারজনক পুলিশি হামলা অব্যাহত রাখাসহ নানা ঘটনা আমরা লক্ষ্য করছি।

তিনি বলেন, এসব ঘটনায় সরকারের ভূমিকা ও নিষ্ক্রিয়তা নিশ্চিতভাবেই শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি। হাসিনার পতনের বছরপূর্তি হবার আগেই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন থেকে দূরে সরে যাওয়ার ঘটনা আমাদেরকে পুনর্বার রাজপথে নামার আহ্বান জানাচ্ছে।

অনুষ্ঠিত সমাবেশে সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক তামজীদ হায়দার চঞ্চল বলেন, জুলাইয়ে শুরু হওয়া সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারকারীদের কাছে সরকার একরকম আত্মসমর্পন করে বসে আছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশি-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের আজ্ঞাবহতা বর্জন করে সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথে ফিরে আসতে বাধ্য করা হবে।

সম্মেলনে শুভকামনা জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ হরিজন ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন্সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ছাত্র ইউনিয়নের ৪২তম সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে। আগামী ২৬ এপ্রিল বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে সংগঠনের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তর্বর্তী সরকার যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন হয়নি: ফরহাদ মজহার
  • মতপার্থক্যের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান সাইফুল হকের 
  • আন্দোলন মনে হয় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে: তাহির জামান প্রিয়র মা