একসঙ্গে সব জিম্মি মুক্তির প্রস্তাব হামাসের
Published: 19th, February 2025 GMT
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের সব অবশিষ্ট বন্দিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। এর জন্য শর্ত হিসেবে তারা ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যেই হামাস শনিবার আরও ছয় জিম্মি মুক্তির পাশাপাশি দুই শিশুসহ চারজনের মরদেহ হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছে।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম মঙ্গলবার রাতে ঘোষণা দিয়ে বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে তারা মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে, কারণ তারা ইতোমধ্যে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে। ইসরাইলের দাবি, হামাসকে গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, এটি হাস্যকর, নিছক মনস্তাত্ত্বিক কৌশল। তিনি বলেন, প্রতিরোধ বিদ্যমান থাকবে এবং হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এ সপ্তাহেই শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সায়ার। মঙ্গলবার হামাসের গাজা শাখার নেতা খলিল আল-হায়্যা জানান, আজ বৃহস্পতিবার চারজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে, যার মধ্যে বিবাস পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। শনিবার ছয়জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ও এই চুক্তি নিশ্চিত করেছে। তবে জিম্মিদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
প্রায় ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠন করতে প্রয়োজন হতে পারে ৫০ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার যৌথভাবে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলে হয়েছে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কয়েক সপ্তাহের অভিযানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঐতিহাসিক ও গবেষকরা বলছেন, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত এ ভূখণ্ডে বাড়িঘরছাড়া হওয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যা এটিই সর্বোচ্চ। খবর টাইমস অব ইসরায়েল ও রয়টার্সের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে নলি বিলে মাছ ধরার উৎসব
বর্ষার সময় বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাছ ধরা হলেও অল্প পানিতে দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের নলি বিল এলাকায় এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। গত শুক্রবার এই বিলে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় মাছ ধরার এক ব্যতিক্রমী আয়োজন।
সকালের আলো ফুটতেই স্থানীয় শত শত মানুষ ঠেলা জাল, টেঁটা, ঝাঁকি জালসহ নানা উপকরণ নিয়ে নেমে পড়েন বিলে। কেউ আবার কাদাপানিতে হাত ডুবিয়ে ধরেন দেশি প্রজাতির মাছ। আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে অনেকে এসে যোগ দেন এ আয়োজনে। দেশি প্রজাতির মাছের চাহিদা বেশি থাকায় নলি বিলে মাছ শিকারে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে হাঁটুসমান পানিতে নানা বয়সী মানুষ দেশি প্রজাতির মাছ ধরছেন। নানা রকমের জাল ছাড়াও অনেকে কাদাপানিতে হাতড়ে ধরেন দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করেও সবার মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। এ সময় শিকারিদের অনেকেই বলেন, গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে উৎসবের আগেই মাছ ধরে নিয়েছেন বিলের ইজারাদাররা। সে জন্য ছোট মাছ মিললেও বড় মাছ তেমন পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ মিয়া বলেন, ‘নলি বিলে মাছ ধরার দিনটি এখন আমাদের এলাকার মানুষের কাছে এক উৎসবে পরিণত হয়েছে।’ মাছ ধরতে আসা ফজলু মিয়া জানান, লোকমুখে খবর পেয়ে সকালে ঝাঁকি জাল নিয়ে চলে আসেন বিলে। দুপুর পর্যন্ত মাছ ধরলেও বড় মাছ তেমন পাননি। তবে এতে তাঁর কোনো আফসোস নেই, বরং এমন ঐতিহ্যে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত।
নেত্রকোনা থেকে ধান কাটতে আসা আবুল কাশেমও শখের বসে মাছ ধরায় অংশ নেন। তিনি বলেন, এত মানুষের একসঙ্গে মাছ শিকার দেখে শখের বসে তিনিও ধান কাটা রেখে মাছ শিকারে নেমে পড়েন। কয়েকটি তাজা বাইন মাছ ধরেছেন। পার্শ্ববর্তী খয়রত গ্রামের আবদুল হাই নামের আরেকজন বলেন, একসঙ্গে মাছ শিকারে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। কয়েক গ্রামের শৌখিন মাছশিকারিরা একসঙ্গে মাছ শিকার করেন।