মাউশির ডিজিকে ওএসডি, নতুন ডিজি আজাদ খান
Published: 19th, February 2025 GMT
শিক্ষক-কর্মচারীদের টানা আন্দোলনের মুখে অবশেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দিয়েছে সরকার। নিয়োগের ২০ দিনের মাথায় তাঁকে এ পদ থেকে সরানো হলো।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এহতেসাম উল হককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। এতে সই করেছেন উপসচিব মো.
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মো. এহতেসাম উল হককে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিজ বেতন ও বেতনক্রমে মাউশির বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে বদলি/পদায়ন করা হলো।
নতুন মহাপরিচালক ড. আজাদ খান: এদিকে মাউশির নতুন মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পদায়ন পেয়েছেন অধ্যাপক ড. আজাদ খান। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাকে পদায়ন করা হয়।
নতুন পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খান সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ, জামালপুরের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৪ ব্যাচের কর্মকর্তা।
৩০ জানুয়ারি পটুয়াখালী সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এহতেসাম উল হককে মাউশির মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ২ ফেব্রুয়ারি। তাঁর নিয়োগে ক্ষোভ জানান শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারাও। একপর্যায়ে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে কয়েক দফায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও শিক্ষাভবন ঘেরাও কর্মসূচি করেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ডিজি পদে পদায়ন পাওয়া এহতেসাম উল হক বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সাদিক আব্দুল্লাহর হাত ধরেই বরিশাল বি এম কলেজের রসায়ন বিভাগ থেকে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পান তিনি। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী বলয়ের প্রভাবশালী অধ্যক্ষ হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ লোপাট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ৫ আগস্টের পরে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিক আন্দোলন, আলটিমেটাম এবং শিক্ষা সচিবের লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই তাঁকে অধ্যক্ষ পদ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ফুটপাতে চাঁদাবাজি
ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে মানুষের ঢল নেমেছে কেনাকাটায়। ভিড় সামাল দিতে নিউমার্কেট ও লিবার্টি মোড়ে যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে জেলা পুলিশ। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মূল সড়কের বড় অংশ দখল করে বসেছে ভাসমান দোকান। আর এসব দোকান বসাতে প্রতিদিনই গুণতে হচ্ছে চাঁদা!
এদিকে কান্দিরপাড়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে জনস্রোত। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে দোকান বসানোর কারণে হাঁটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, যান চলাচল বন্ধের উদ্যোগ ভালো, তবে সেটার সুফল পেতে হলে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত রাখা জরুরি। অবৈধ দোকান উচ্ছেদে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। একইসঙ্গে চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এ দুর্ভোগ চলতেই থাকবে।
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র প্রকাশ্যেই এ চাঁদাবাজি করছে। চাঁদা দিলে দোকান, না দিলে উচ্ছেদ।
অনুসন্ধানে জানা যায় গেছে, নিউমার্কেট থেকে টাউনহল পর্যন্ত দুই শতাধিক ভাসমান দোকান গড়ে উঠেছে। ফুটপাতের পর এবার সড়কের মাঝেও দোকান বসেছে। অথচ এসব দোকান বসাতে হচ্ছে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দিয়ে। বড় দোকানগুলো থেকে ২০০ টাকা, ছোট দোকান থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা বলেন, “আমরা এখানে বসার অনুমতি পাইনি। টাকা দিয়েই বসতে হয়েছে। পুলিশের নাম নিয়ে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয়। টাকা না দিলে দোকান তুলে দেওয়া হয়।”
অন্য এক বিক্রেতা বলেন, “পুলিশ আগে সরাসরি টাকা নিত। এখন তাদের নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক এসে চাঁদা তোলে। না দিলে দোকান সরানোর হুমকি দেওয়া হয়।”
ভিড়, জট আর হাঁটার দুর্ভোগ কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের জন্য এসব দোকান এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফারজানা আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, “প্রতি বছর ঈদের আগে আসি, কিন্তু এবার হাঁটাও যাচ্ছে না। ফুটপাত দখল ছিলই, এখন তো রাস্তার মাঝেও দোকান বসেছে!”
রাজীব হাসান নামে আরেক ক্রেতার প্রশ্ন, “পুলিশ যদি যান চলাচল বন্ধ করে, তবে তারা রাস্তা দখল করেও দোকান বসতে দিচ্ছে কেন? জনসাধারণের চলাচলের জন্য যে উদ্যোগ, সেটাই তো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, “পুলিশ কোনো ধরনের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। কেউ পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করলে প্রমাণসহ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, “পুলিশের নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদাবাজি করতে পারবে না। অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/এস