উড়োজাহাজের টিকিটের ‘অস্বাভাবিক’ মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত শুরু করেছে সাত সদস্যের কমিটি।

তদন্তের অংশ হিসেবে আজ বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ১৬টি এয়ারলাইনস মনোনীত জেনারেল সেলস এজেন্টের (জিএসএ) সঙ্গে বৈঠক করে কমিটি।

বৈঠক শেষে তদন্ত কমিটির সভাপতি স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যাঁরা যান, তাঁদের টিকিটের মূল্য অনেক বেশি পড়ে যায়। এ বিষয়ে আইনকানুন আছে, বিধি আছে। কিছু প্রতিপালন হচ্ছে, কিছু হচ্ছে না। কিছু কিছু মানুষের দুর্বৃত্তপনা আছে। আমরা এ জিনিস অনুসন্ধানের জন্য বসছি।’

নাসিমুল গনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন এয়ারলাইনসের স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেছি তাঁদের অভিজ্ঞতা জানার জন্য। আমাদের অনুসন্ধান যাতে ফলপ্রসূ হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো করে আমরা তদন্ত করব। সবার কথা শুনতে চাই। বোঝার চেষ্টা করছি, কীভাবে সমস্যা উত্তরণ করে অন্য দেশের সমান খরচে নামাতে পারি।’

স্বরাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিটির কাজ ভাড়া নির্ধারণ নয়, শুধু তদন্ত করা।’

বিগত ছয় মাসে উড়োজাহাজের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে ৬ ফেব্রুয়ারি সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে। কমিটি আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে কথা রয়েছে। কমিটি সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ব্যক্তিকে শাস্তির জন্য সুপারিশ করবে। কমিটি আজ প্রথম বৈঠক করল।

উড়োজাহাজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও মজুতদারি বন্ধের দাবিতে গত ২৬ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেছিল অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব)।

সংগঠনটির দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চলমান অন্যতম বড় সমস্যা উড়োজাহাজের টিকিটের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি। মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে অন্যতম প্রধান কারণ নাম ছাড়া একসঙ্গে অনেক টিকিট বুকিং দিয়ে রাখা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বর ষ ট র ন ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়ির ভেতর থেকে আসছিল কান্নার আওয়াজ, সেদিকে তাক করে পরপর গুলি

বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসছিল নারীদের কান্নার আওয়াজ। বাড়ির সীমানার বেড়ার বাইরে লাঠি, বন্দুক ও পাথর হাতে দাঁড়িয়ে একদল লোক। এরপর ওই বাড়িটি লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছোড়া হলো।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের রুপালি বাজারপাড়া এলাকায় এমন সংঘর্ষের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সোমবার সকালে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ আছেন। লবণের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই সংঘর্ষ ঘটেছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সময় একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রুপালি বাজারপাড়া এলাকার হামিদা বেগম (৩২), মো. আমজাদ (২০), আহমদ হোসেন (৪০), জেসমিন আকতার (২৮), মিনা আকতার (৩৫), রিনা আকতার (৩০), বুলু আকতার (৩২), মো. ছৈয়দ (৩৫), আফরোজা বেগম (১৫), মো. ছরওয়ার (২৮) ও বেলাল উদ্দিন (৩২)। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হামিদা, আমজাদ, আহমদ ও জেসমিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর মিনা, রিনা ও বুলু আকতারকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, রুপালি বাজারপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে মালেকপাড়ার ফরহাদ ইকবালের সাড়ে ১০ একর লবণের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। আজ সকালে ফরহাদ ইকবালের লোকজন জমিতে কাজ করতে গেলে মিজানুর রহমানের পক্ষের লোকজন বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মালেকপাড়া থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে রুপালি বাজারপাড়া এলাকায় বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলা শেষে একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

মিজানুর রহমানের ভাই মিনহাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাড়ে ১০ একর জমির মালিক আমরা ৬০ পরিবার। এসব পরিবারকে উচ্ছেদ ও জমি দখল করতে হামলা করা হয়েছে।’

হামলার ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ফরহাদ ইকবালের পক্ষের মো. সাইফুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফা অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে গুলি ছুড়ছেন। তাঁরা অন্তত ১০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন। এই দুজনের সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন দা, কিরিচ ও লাঠি হাতে হামলা করেন। হামলাকারীরা সবাই মাস্ক পরা ছিলেন।

অস্ত্রধারী সাইফুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফরহাদ ইকবালও ঘটনার পর থেকে পলাতক।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লবণের জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। ভিডিওতে দুটি অস্ত্র দেখা যাচ্ছে। অস্ত্র হাতে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ