ছোট্ট হাতে বর্ণ সেজেছে নানা রঙে-ঢঙে
Published: 19th, February 2025 GMT
বর্ণটা ‘হ’। মাথা বড় ‘হ’টা নানা রং দিয়ে লেখা। চারপাশে শুধু পেনসিলের আঁকিবুঁকি। তেমন একটা হচ্ছে ‘ম’। হাতে বানানো রঙিন মরিচ দিয়ে ‘ম’ লেখা। কাগজে পেনসিল-কলমে লেখা ‘ম’ নয়। চটের টুকরা দিয়ে লেখা ‘জ’ বর্ণ লিখে একই উপকরণ দিয়ে বর্ণটির নিচে আঁকা হয়েছে জনতার মুখ। কোনো কোনো বর্ণ বানানো হয়েছে ফেলে দেওয়া প্যাকেট, কটনবাড আর টুথপিক দিয়ে। শিশু বর্ণ কারিগরদের হাতে কল্পনার জগতের বর্ণ এমন নানা রং আর ঢঙে উঠে এসেছে।
আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বর্ণ কারিগর’দের এমন সব বর্ণের দেখা পেয়েছেন বিচারকেরা। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে প্রথম আলোর ‘বর্ণমেলা’ আয়োজনে শিশু-কিশোরেরা নানা নকশার বর্ণ তৈরি করেছে। এবার বর্ণমেলা আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘দুরন্ত শৈশব’।
‘বর্ণ কারিগর’ প্রতিযোগিতায় একটু বড় ‘শিশু কারিগরেরা’ বর্ণকে প্রকাশ করেছে গল্পের মাধ্যমে। একুশে ফেব্রুয়ারির ‘এ’ বর্ণ ঘিরে ভাষাশহীদ আর আন্দোলনের চিত্র, মাকে লেখা চিঠি। বড় আকৃতির খোলা বইটি বানানো হয়েছে শোলা দিয়ে। তাতে বসানো হয়েছে খুদে আকৃতির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলা, নজরুলের শিশু-কিশোর সাহিত্য, পরি ও ঘাসফড়িং, ঠাকুরমার ঝুলি ইত্যাদি।
‘বর্ণ কারিগর’–এর পাশাপাশি বর্ণমেলা আয়োজনের মাধ্যমে ‘প্রিয়জনের কাছে চিঠি লেখা’ ও ‘ফিরে যাই দুরন্ত শৈশবে, মেতে উঠি গানের উৎসবে’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণমেলা আয়োজনটিতে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ‘মেরিল বেবি’। আয়োজনটির প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।
২১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডির সুলতানা কামাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে বর্ণমেলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।
বর্ণ কারিগর
দুরন্ত শৈশবের রঙে বর্ণ বানাও, বর্ণ পাঠাও আহ্বানে সাড়া দিয়ে ক, খ ও গ—তিনটি বয়সভিত্তিক দলে মোট ৮৪টি বর্ণ জমা হয়।
‘ক’ বিভাগে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত, ‘খ’ বিভাগে চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি এবং ‘গ’ বিভাগে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণিপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। ‘ক’ বিভাগে প্লে শ্রেণির জারা হাসান প্রথম, তৃতীয় শ্রেণির জায়ান ফারহান দ্বিতীয় এবং কেজি শ্রেণির আইলানি ইমাম তৃতীয় হয়েছে।
‘খ’ বিভাগে প্রথম হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাজমীন আন-নিসা হোসেন, দ্বিতীয় হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী সাহা (ওর্থী) এবং তৃতীয় হয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুপসে ইমাম।
‘গ’ বিভাগে নবম শ্রেণির আধিয়া তারান্নুম, অষ্টম শ্রেণির নিবেদিতা সাহা (এ্যানী) এবং সপ্তম শ্রেণির হিমাদ্রি ইমাম যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে।
বর্ণ কারিগর প্রতিযোগিতায় আসা নানা রঙে-ঢঙে বানানো বর্ণ দেখছেন বিচারকেরা। আজ বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি, প্রথম আলো কার্যালয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চুরি-ছিনতাই-খুন প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছি: র্যাব ডিজি
দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
শহিদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
র্যাব ডিজি বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব ডিজি আরও বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিএইচ