কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জিমেইলে প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে গুগলের নামে ভুয়া ফোনকল করে ব্যবহারকারীদের জিমেইল অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে একদল হ্যাকার। এ ধরনের সাইবার হামলা থেকে নিরাপদ থাকতে এরই মধ্যে সব জিমেইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, জিমেইল ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে হ্যাকাররা প্রথমে স্বয়ংক্রিয় (রোবোকল) ফোনকলের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফোনে জানানো হয়, আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কার্যক্রম শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর সতর্ক করে বলা হয়, সমস্যা সমাধানে শিগগিরই একটি ই–মেইল পাঠানো হবে এবং সেখানে অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করার নির্দেশনা দেওয়া হবে। তবে ই–মেইলে থাকা লিংকে ক্লিক করলেই গুগলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি অন্য একটি ওয়েবসাইট চালু হয়। সেখানে জিমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড লিখলেই অ্যাকাউন্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা।

আরও পড়ুনএআই দিয়ে তৈরি নকল কণ্ঠের ফোনকল থেকে নিরাপদ থাকবেন যেভাবে০৫ জানুয়ারি ২০২৪

সাইবার নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ম্যালওয়্যারবাইটস জানিয়েছে, হ্যাকাররা বর্তমানে কম খরচে অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের বোকা বানিয়ে সহজেই জিমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি রিকভারি কোডও সংগ্রহ করছে হ্যাকাররা। এ ধরনের সাইবার হামলায় জিমেইল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ক্লাউড স্টোরেজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবার অ্যাকাউন্টও হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

আরও পড়ুন‘ডিপফেক’ ভিডিও কী, যেভাবে বুঝবেন এটা ভুয়া০৭ নভেম্বর ২০২৩

অনলাইনে নিরাপদ থাকতে জিমেইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অপরিচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পাঠানো ই–মেইল বা এসএমএস বার্তায় থাকা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোনো ফাইল ডাউনলোড করা যাবে না। এর পাশাপাশি যেকোনো ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার আগে সেটির গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতারকদের ফোনকল পেলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্টফোনের কোনো বাটনে ক্লিক করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

আরও পড়ুনজিমেইলে প্রতারণা বেশি হয় যে ৩ কৌশলে০৩ ডিসেম্বর ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র পদ থ ব যবহ র ফ নকল

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু, স্ত্রী কারাগারে

চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জাফর আলী চৌধুরী (৪৩) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার উত্তর ইদিলপুর গ্রামের জানে আলম চৌধুরীর ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কদমতলী শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গ্রেপ্তার আসামি হলেন- রোমানা ইসলাম। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার জেলরোড এলাকার মো. ফয়জুল ইসলামের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন। স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে জাফর আলীর স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ফোলা জখম, কানে জমাটবাঁধা রক্ত ও হাতে নখের আঁচড় ছিল। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের ছোট ভাই আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাফর আলী চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্ত্রী রোমানা ইসলাম। তার শ্বশুরও তাকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত ও নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলেও ছোট ভাইকে জানিয়েছিলেন। জাফরের দুই শ্যালক শরীফুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম বিভিন্নসময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।

এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রোমানা ইসলাম তার ননদ রোকেয়াকে ফোন করে জানান, জাফর অসুস্থ এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বলেন। বড় বোন রোকেয়া ও তার ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে লাশ রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। বাদী আবুল হাসনাতের অভিযোগ, ‘পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ৫৫ মিনিট সময়ের মধ্যে জাফরকে তার স্ত্রী রোমানা ইসলাম নিজ হাতে কিংবা অন্য কারও সাহায্যে হত্যা করেছেন।’

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের মাথায় ফোলা রয়েছে ও কানে রক্ত জমাট বাঁধা আছে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। স্ত্রীর দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি সেটি পুলিশকে না জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্ত্রী মুখ খুলছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ