বারবার কোল বদল করা কিছু দলের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে: সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন
Published: 19th, February 2025 GMT
কোনো রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘কিছু দল বারবার কোল বদল করে। বারবার কোল বদল করা তাদের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। দয়া করে যেকোনো একটি অবস্থান নিন। বিএনপির দোষ–ত্রুটি খোঁজার পরিবর্তে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত করুন।’
আজ বুধবার দুপুরে সিলেটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। নগরের রেজিস্টারি মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করে সিলেট জেলা বিএনপি। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো, দ্রুত নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে ধারাবাহিকভাবে জেলায় জেলায় সমাবেশ করছে বিএনপি।
সমাবেশে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত ১৭ বছরে দেশে গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়েছে। এ সময় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর দেশের জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে, তাকে হতাশায় পরিণত করা যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারেক রহমানের কঠোর প্রচেষ্টা জনগণ ও সুশীল সমাজের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।
আরও পড়ুনসংস্কারের গল্প শুনিয়ে সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী১১ মিনিট আগেবাণিজ্য উপদেষ্টার সমালোচনা করে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। পোলট্রি ও সয়াবিন তেলের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে রয়েছে, অথচ সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহমিনা রুশদীর লুনা, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। সমাবেশ উপলক্ষে জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুপুর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রেজিস্টারি মাঠে জড়ো হন।
আরও পড়ুনবিএনপি মঙ্গলবার থেকে জেলা-মহানগরে সভা-সমাবেশ করবে০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না: তারেক রহমান
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যত সহজ ভাবা হচ্ছে, নির্বাচন তত সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এক বছর, সোয়া বছর আগে যে কথাটি বলেছিলাম যে, সামনের নির্বাচন যা ভাবছেন তা নয়। আজকে আস্তে আস্তে আমার কথাটা প্রমাণিত হচ্ছে। এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এ দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এটা একমাত্র বাঁচাতে পারে গণতন্ত্র এবং সেই গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করতে পারেন আপনারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রত্যেকটি মানুষ।’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর হাজারের বেশি নেতা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির পরিকল্পনাগুলো জানাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই মানুষ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় সরকার হবে না। যারা বিএনপিকে ভোট দিয়েছে, তাদের পাশাপাশি যারা ভোট দেয়নি তাদের জন্যও কাজ করতে হবে। নির্দিষ্ট কারও জন্য কাজ করা যাবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি স্বপ্ন দেখাচ্ছে না, বিএনপি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচনের বেশি সময় নেই। দল যার হাতে ধানের শীষ দিয়েছে, তাদের পক্ষে থাকতে হবে। প্রার্থী আসবে, প্রার্থী পরিবর্তন হবে, তবে দল ও আদর্শ রয়ে যাবে।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলো মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে দাবি করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা বলার দরকার নেই। বাস্তবভিত্তিক যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেটা জনগণের কাছে পৌঁছে দিলেই হবে। এই কাজ করা কঠিন। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে সেটি করা সম্ভব হবে।
উপস্থিত বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম, কিছু ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে তাদের কথা বলছেন। তারা যদি বলতে পারে, আপনি কেন বলতে পারবেন না? বললে সবাই বলবে, না বললে কেউ বলতে পারবে না। আপনি আপনার এলাকায় সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বললে সবার বলার অধিকার আছে। আর যদি কোথাও নিয়ম হয়ে থাকে, বলবে না। তাহলে সেই নিয়ম সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। কোনো বিশেষ কারও জন্য হবে আর কারও জন্য হবে না, এটা তো হতে পারে না।'
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান (সোহেল)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম খান বাবুল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থানসহ আটটি বিষয়ে কীভাবে কাজ করবে—এ নিয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য ধারাবাহিক কর্মশালা বা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠান শুক্রবার বাদে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দলসহ অন্য সহযোগী সংগঠন অংশ নেবে। এরপর বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের বাইরে অন্য কোনো একটি দিনে হবে সমাপনী অনুষ্ঠান।