জীবাণু শনাক্তের আগে কোন অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর, পথ দেখাবে অ্যান্টিবায়োগ্রাম
Published: 19th, February 2025 GMT
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানটির অ্যান্টিবায়োগ্রাম হাতে পেলেন। অ্যান্টিবায়োগ্রাম হলো নির্দিষ্ট সময়ে একটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত যেসব রোগী এসেছেন, সেসব রোগের জীবাণুগুলোর ওপর অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতার এক বৈজ্ঞানিক দলিল।
সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে কালচার পরীক্ষার মাধ্যমে জীবাণু শনাক্তকরণের আগে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার ক্ষেত্রে এই দলিল গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মুমূর্ষু এবং জরুরি সেবা প্রয়োজন, এমন রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
গতকাল বুধবার হাসপাতালে ‘ওয়ার্কশপ অন ক্লিনিক্যাল এনগেজমেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্টিউআর্ডশিপ অ্যান্ড অ্যান্টিবায়োগ্রাম ডিসেমিনেশন অব ঢাকা মেডিকেল কলেজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে এই অ্যান্টিবায়োগ্রাম উপস্থাপন করা হয়।
গেল বছর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরা যেসব ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছিলেন, সেগুলোর ওপর কোন ধরনের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ কতটা কার্যকর ছিল, তারই সারসংক্ষেপ হিসেবে এই অ্যান্টিবায়োগ্রাম উপস্থাপন করা হয়।
বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু সংক্রমণের হার বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি। রোগের জটিলতার পাশাপাশি খরচের অঙ্কটাও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সংক্রামক রোগের চিকিৎসা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ভয়াবহ বিপর্যয় এড়াতে দেশের প্রতিটি নাগরিককেই অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের বিষয়ে চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলা উচিত। আর চিকিৎসকদেরও আন্তর্জাতিক নীতিমালা এবং স্থানীয়ভাবে সংক্রামক রোগের জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলোর কার্যকারিতার ধরন অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কোন রোগীকে কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের নির্দেশনা দেবেন। সাম্প্রতিক সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর হার অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণেই এ কাজটি সঠিকভাবে করার জন্য একজন চিকিৎসকের হাতে অ্যান্টিবায়োগ্রাম থাকা প্রয়োজন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.
অ্যান্টিবায়োগ্রাম কার্ডকে কাজে লাগিয়ে সংক্রামক রোগের চিকিৎসাসেবার মান আরও বাড়বে বলে মনে করে বক্তারা। তাতে রোগের জটিলতার হার কমার পাশাপাশি সংক্রামক রোগে মৃত্যুহারও কমিয়ে আনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে ক্লিনিক্যাল এনগেজমেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্টুয়ার্ডশিপ প্রোগ্রামের ওপর কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এ ধরনের কর্মশালার মাধ্যমে চিকিৎসকেরা সহজেই রোগীদের জন্য সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক বেছে নিতে সক্ষম হবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহম্মদ। আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রতিনিধি ডা. এস এম শাহরিয়ার রিজভী, রোগতত্ত্ব, রোগনির্ণয় ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাবেয়া সুলতানা, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ বিন শহীদ এবং বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কাকলী হালদার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের অধীনে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট প্রোগ্রাম এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানের সার্বিক সহায়তা করে ফ্লেমিং ফান্ড কান্ট্রি গ্রান্ট বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই অ য ন ট ব য় গ র ম ম ড ক ল কল জ র চ ক ৎসক র র চ ক ৎসক অন ষ ঠ ন র জন য উপস থ
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাস্তার পাশে পাওয়া গেল নবজাতক, হাসপাতালে ভর্তি
লক্ষ্মীপুরে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা নবজাতককে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছে শিশুটি।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে জেলা শহরে মিয়া রাস্তার মাথা এলাকার লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশ থেকে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে।
এর আগে, শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। এসময় নবজাতককে দেখতে আশপাশের মানুষজন ভিড় জমায় ঘটনাস্থলে। পরে রাতেই পুলিশ শিশুটিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা হাসপাতালে যান শিশুটির খোঁজ নিতে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. শরীফ হোসেন।
আরো পড়ুন:
রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েদির মৃত্যু
ছেলে সন্তানের জন্ম দিল ‘ধর্ষণের শিকার’ কিশোরী
মিয়া রাস্তা এলাকার বাসিন্দা কামাল মাঝি বলেন, “অন্ধকার থেকে হঠাৎ শিশুর কান্না ভেসে আসে। প্রথমে চমকে উঠি। পরে শিশুটিকে কোলে নেই। শিশুটিকে দেখতে মানুষজনও জড়ো হতে থাকে। পরে পুলিশের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়। কে বা কারা শিশুটিকে ফেলে গেছে তা কেউই দেখেননি।”
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কমলা শীষ রায় বলেন, “শিশুটিকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসে তাকে দেখবেন। তারা শিশুটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আরো ভালো বলতে পারবেন।”
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ইউএনও জামসেদ আলম রানা বলেন, “শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছি। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সরকারি দায়িত্বে সে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তার পরিচয় শনাক্তে চেষ্টা চলছে। পরিচয় না মিললে আমরা চট্টগ্রাম শিশু নিবাসে তাকে হস্তান্তর করব। কেউ যদি শিশুটিতে নিতে চান, তাহলে আদালতের মাধ্যমে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ