গুলি ছুড়তে ছুড়তে এসে বালুঘাটে ডাকাতি, ব্যবস্থাপক গুলিবিদ্ধ
Published: 19th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১০ দিনের মধ্যে আরেকটি বালুঘাটে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে কয়া এলাকায় গড়াই নদীর সেতুর নিচে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বালুঘাটের ব্যবস্থাপক সবুজ হোসেনের পায়ে গুলি করা হয়। তিনি এখন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের গড়াই নদী-সংলগ্ন জিলাপীতলা বালুঘাটে ডাকাতি হয়। ওই দিন তিনটি মোটরসাইকেলে অন্তত ৯ জন আগ্নেয়াস্ত্রসহ এসে ৭-৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ নিয়ে সমকালে ‘বাইকে এসে গুলি ছুড়ে ডাকাতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কয়া ও রায়ডাঙা মৌজায় গড়াই নদী ড্রেজিংয়ের বালু অপসারণ করতে ইজারা দিয়েছে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকায় এই ইজারা নিয়েছেন মেসার্স প্রিয়াংকা ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম। তার লোকজন নিয়মিত এখান থেকে বালু বিক্রি করছেন।
আহত ব্যবস্থাপক সবুজ হোসেন বলেন, রাত ১১টার দিকে ৮-১০ জনের একটি দল শটগান ও পিস্তলের গুলি ছুড়তে ছুড়তে টোলঘরে ঢোকে। তার দুই শ্রমিককে মারধর করে খুঁটিতে বেঁধে রাখে। এক পর্যায়ে আমার পায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। পরে প্রায় দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ফের গুলি ছুড়তে ছুড়তে গড়াই নদীর তীর ধরে চলে যায় ডাকাতরা।
আহত শ্রমিক আরজু হোসেন বলেন, বন্দুক নিয়ে ডাকাতরা এসে আমাকে ও আরেক শ্রমিককে জিম্মি করে। পরে মারধর করে খুঁটিতে বেঁধে রাখে এবং ম্যানেজারের পায়ে গুলি করে।
বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ঘাট থেকে বালু সরানো বন্ধ। টিনশেড টোলঘরের বেড়ায় ছোট ছোট ছিদ্র। পড়ে আছে গুলির খোসা। ওই সেতুর নিচে মুদি দোকানি আলম হোসেন বলেন, এত বছর দোকানদানি করতেছি। তবে এমন কাম কোনো দিন ঘটেনি। খুব ভয়ে আছি।
ইজারাদার প্রিয়াংকা ব্রিকসের ব্যবস্থাপক রাকিব হাসান বলেন, ঘাটে গুলি ছুড়ে, মারধর ও ভাঙচুর করে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ব্যবস্থাপককে গুলিও করেছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।
কুমারখালী থানার ওসি সোলায়মান শেখ বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল থেকে কিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এটি ডাকাতি, না পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ হামলা করেছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ স ন বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টে শিশুর জীবন বিপন্ন
সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড ফজর আলী গার্ডেন সিটি ভবনে এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মাইমুনা সুলতানা নামে ৪ বছরের এক শিশুর রক্তের ইনফেকশন পরিমাণ নির্ণয় পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। ফলে শিশুটির জীন বিপন্ন হওয়ার পথে।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি পাইনাদী এলাকার বাসিন্দা মো. শফিকের ৪ বছরের মেয়ে মাইমুনা সুলতানা জ¦রে আক্রান্ত হলে তাকে ১৫ এপ্রিল হাতুড়ে ডাক্তার ফিরোজ আলমের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
তখন ডাক্তার ফিরোজ আলম শিশুটিকে হেমাটোলজি ও সেরোলজি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। পরে শিশুটিকে নিয়ে তার পিতা এস. আলম ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা করান।
সেরোলজি পরীক্ষায় শিশুটির সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন(সিআরপি) পরীক্ষার রিপোর্টে রক্তের পেণ্টামেরিক প্রোটিন ৫০ দশমিক ২ এম.জি/এল পরিমাণ দেখানো হয়।
রিপোর্টে এম.ফিল সি প্যাথলজি ডাক্তার মো. শাহাদাত হোসেন ও ডিপ্লোমা ইন ল্যাবরেটরি মেডিসিন ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার সাকিল পারভেজের স্বাক্ষর রয়েছে।
সে রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে হাতুড়ে ডাক্তার ফিরোজ আলম শিশুটিকে ইনজেকশন ও ওষুধ দেন। এতে শিশুটির শারীরিক অবস্থা চরম অবনতি হয়।
শিশুর পিতা শফিকুল বলেন, মেয়ের অবস্থা খারাপ হলে আমি অন্য একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাই। তখন এ রিপোর্ট দেখে ওই ডাক্তার অবাক হয়ে বলেন, মানুষের রক্তে ইনফেকশনের পরিমান কখনো ৫০ দশমিক ২ এম.জি/এল হতে পারে না।
তাই তিনি আবার পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। তখন আমি ১৭ এপ্রিল মেয়েকে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে আবার পরীক্ষা করাই।
সেখানে পরীক্ষা রিপোর্টে রক্তের পেণ্টামেরিক প্রোটিন পরিমাণ আসে ১৫ দশমিক ১ এমজি/এল। তখন আমি প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের রিপোর্টে স্বাক্ষরকারী ডাক্তার মো. মামুন অর রশিদ ও রেহানা আক্তার সোনিয়াকে এস. আলম ডায়গনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট দেখালে তারাও অবাক হয়ে বলেন এটা অসম্ভব। রিপোর্টটি সঠিক হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এস.আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক একাডেমিক শিক্ষাগত ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার, ডিপ্লোমা প্রাপ্ত নার্স ও রোগী দেখার জন্য নিয়মিত এমবিবিএস ডাক্তার নেই।
প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কর্মকর্তারা নিজেরাই মনগড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা রিপোর্ট তৈরি তাদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নামি-দামি সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের এমবিবিএস ডাক্তার ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর দিয়ে রোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। তাদের এ ভুল রিপোর্টে চিকিৎসা করে রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, একদিন আগে পরের রিপোর্ট কিছু ব্যবধান হতেই পারে। তাই বলে ৩৫ পার্সেন্ট প্রশ্ন করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে গিয়ে ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার সাকিল পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
ডাক্তার সাকিল পারভেজ বলেন, আমাদের রিপোর্ট ভুল নয়। আমাদের রিপোর্টের দুদিন পর ওই রিপোর্ট করা হয়েছে। দুদিন ওষুধ সেবন করায় শিশুটির রক্তের প্রোটিন পরিমাণ কমে গেছে।