রাজনীতি বন্ধ রাখাকে কেন্দ্র করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি বলেছেন, ছাত্রদলের ইতিবাচক রাজনীতিকে শিক্ষার্থীদের কাছে দোষারোপ করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং শিবিরের সন্ত্রাসীরা শুরুতে এ হামলা করেছে। তারপরও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গতকাল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সে জন্য দুঃখপ্রকাশ করছে।

তিনি আরও বলেন, যে হামলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা শুরুতে ছাত্রদলের ওপর করেছে, সে হামলায় যদি তারা অংশগ্রহণ না করত তাহলে এ রকম সংঘাত কখনই ছড়িয়ে পড়তো না।

তবে নাছির অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে যত বড় বড় অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, তার উৎস ছিল ছোট ছোট শর্ট সার্কিট। গতকাল সেই কাজ শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশৃঙ্খল ‘মব’। এটির নেতৃত্ব দিয়েছে কুয়েটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ওমর ফারুক। কেন্দ্রীয়ভাবে সেটি মনিটরিং করেছে হাসনাত আব্দুল্লাহ।


বুধবার কুয়েটের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি গেমস রুমে ছাত্রদল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নাছির উদ্দীন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। এ সময় ছাত্রদলের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে নাছির বলেন, ছাত্রদলের রাজনীতির অংশ হিসেবে কুয়েটে আমরা সদস্য ফরম বিতরণ করেছি। কিন্তু ফরম বিতরণের দুই দিন পরে ছাত্রদলের তিনজন নেতাকর্মীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ওমর ফারুকের নেতৃত্বে এবং শিবিরের সন্ত্রাসীরা অমানবিক নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের মাত্রা এতই ছিল যে তারা দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে হামলা করেছে। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথিত ছাত্রদলের অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর ছাত্রদলের নামে এক ধরনের ‘মব’ তৈরি করা হয়েছে।

নাছির বলেন, বাংলাদেশের যেকোনো সংগঠনে রাজনীতি করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কীভাবে ছাত্রদলের তিনজন নেতার ওপর হামলা করে, সে প্রশ্ন আমরা রাখতে চাই। শিবিরের কাছে আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই কুয়েটে তাদের কমিটি আছে কিনা, গতকাল যে হামলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। আর কোনো ক্যাম্পাসে যদি বিনা কারণে হামলার ঘটনা ঘটে, তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দায় নিতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান ইয়াহিয়ার নেতৃত্বে একটি সরেজমিন তদন্ত টিম খুলনা গেছেন। তাদের প্রতিবেদন ও পুলিশি বা প্রশাসনিক তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগে পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকেই কোনো উপসংহার টানা সম্ভব বা সমীচীন নয়। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বয়ান, সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন, ছবি ও ভিডিও প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুয়েট শাখার আহ্বায়কের উস্কানিতেই হামলার সূত্রপাত ঘটেছে।

রাকিবুল বলেন, গতকালকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি মিছিল থেকে কতিপয় ছাত্রদল সমর্থকের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে অতি সাধারণভাবেই মিছিলটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুয়েট কমিটির আহ্বায়ক ওমর ফারুকের প্রত্যক্ষ উস্কানিতে কতিপয় মিছিলকারী তাদের দিকে অতর্কিতভাবে তেড়ে গিয়ে হামলার সূচনা করে।

ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, কোনোরূপ তথ্য প্রমাণ ছাড়াই স্থানীয় জনতার সঙ্গে কুয়েট শিক্ষার্থীদের ন্যক্কারজনক সহিংসতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রদলের হামলা বলে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

হামলার নিন্দা জানিয়ে রাকিবুল ইসলাম বলেন, যেই জড়িত থাকুক না কেন, সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্রদল তার সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ পেলে বা তা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু তার বিচারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।
 

হামলার সূত্রপাত ঘটানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুয়েটের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা মন্তব্য করে রাকিবুল বলেন, আমরা দেখব তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা দায় স্বীকার করে কিনা। যেভাবে যুবদলের একজনকে চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা গেছে। কিন্তু ফেসবুকে যে ভিডিও সয়লাব হয়েছে বৈষম্যের ভূমিকা তাদের কোনো বক্তব্য পাচ্ছি না।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র র জন ত ন ত কর গতক ল র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সারা দেশে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৮০: আইএসপিআর

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গত সাত দিনে যৌথ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০ থেকে ২৬ মার্চ এই অভিযান চালানো হয়।

আজ শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে চলছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এর ধারাবাহিকতায় ২০ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিটগুলো অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এসব যৌথ অভিযানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, একাধিক মামলার আসামি, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আসামি, মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছে ১০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১৪৩টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ, ককটেল বোমা, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশি-বিদেশি অস্ত্র, পাসপোর্ট, চোরাই মুঠোফোন, ট্যাব, সিমকার্ড, স্বর্ণালংকার, ট্রলার, মোটরসাইকেল, ট্রাক, ড্রেজার, ভেকু, এক্সকাভেটর, ডাম্পার ও অর্থ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নির্বিঘ্নে সড়কে যান চলাচল নিশ্চিতকরণ ও টিকিট কালোবাজারি রোধে সেনাবাহিনী বিশেষ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে কাছের সেনাক্যাম্পে তথ্য দিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ