জবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতার মিথ্যা মামলা
Published: 19th, February 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী সাগর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার এলাকার এক আওয়ামী লীগ নেতা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান ভুক্তভোগী সাগর চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, “২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমার বাবা একজন সেনা সদস্য ছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটা মামলা করি। কিন্তু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাদের ৩০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মামলাটি উঠিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু আমরা তা না করে আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। এরপরে আমার বাবার হত্যার ২ মাস আগে পাশে গ্রামের একটা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আমাকে আসামী করে চার্জশিট তৈরি করিয়েছে কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি আরো বলেন, “আমার এ হত্যার সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় থাকি কখনো এলাকায় সেভাবে থাকা হয়নি। আমি জুলাই বিপ্লবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি অংশগ্রহণ করি। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী সরকার পতন হওয়ার পর আমাকে সিআইডি ও বিভিন্ন সরকারি তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে হয়রানিমূলক মামলায় আসামী করে চার্জশিটে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে আমার বাবার হত্যাকারী কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে। সে এখন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে আছে। আমি এ হয়রানিমূলক হত্যা মামলা থেকে মুক্তি চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১০ম আবর্তনের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ বলেন, “সাগর জুলাই আন্দোলনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ছিল। সে পুরান ঢাকায় থাকত। তার বাসা গোপালগঞ্জে খুব কমে যেত, ২০২৩ সালে সে ঢাকাতেই ছিল। তাকে মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ মামলা থেকে তার নিঃশর্তে মুক্তি চায়।”
তিনি আরো বলেন, “মামলার বাদী গোপালগঞ্জ কাশিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এখনো বহাল তবিয়তে এলাকায় বিচরণ করছে। তার ছেলে পুলিশের এসআই থাকায় সে এ কাজগুলো এখনো করে বেড়াচ্ছে। আমরা তারও বিচার দাবি করছি।”
এ বিষয়ে হয়রানির শিকার সাগর চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন য ন আওয আম র ব ব
এছাড়াও পড়ুন:
এবার যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কার কথা জানাল ফেডারেল রিজার্ভ সান ফ্রান্সিসকো
সম্প্রতি কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এই বেকারত্ব বৃদ্ধির হার মন্দার আশঙ্কার লক্ষণ, যদিও বিষয়টি তেমন একটা নজরে আসে না। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের এক গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারের এই গোপন বিষয় উঠে আসছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে দুটি ঝুঁকি জড়িয়ে আছে; একটি হলো মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা, আরেকটি হলো বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা। খবর রয়টার্স।
অতীতে অনেক মন্দার আগে দেখা গেছে, যে মানুষেরা কাজের বাইরে ছিলেন, তাঁদের পক্ষে শ্রমবাজারে ফিরে আসা সময়সাপেক্ষ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের বেকারত্বের মেয়াদ বেড়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ সান ফ্রান্সিসকো গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অতীতে বেশ কয়েকবার মন্দার আগে মানুষের মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। এর অর্থ হলো, এসব লক্ষণ মন্দার ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত হয়।
তথ্যে দেখা যায়, কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার ধীরে ধীরে বেড়েছে; ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে যেখানে বেকারত্বের হার ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ; গত মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। ফেডের অনেক নীতিপ্রণেতা মনে করছেন, বেকারত্বের হার তুলনামূলকভাবে এখনো কম থাকার অর্থ হলো, শ্রমবাজার শক্তিশালী।
গুরুতর বিষয় হলো, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বেকার মানুষের পক্ষে চাকরি পাওয়ার হার কমছে। এই প্রবণতা অতীতে বিভিন্ন মন্দার সময় দেখা গেছে।
একই সময় দেখা গেছে, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে এই বেকারদের বেকারত্বের গড় সময় ৮ সপ্তাহ থেকে বেড়ে ১০ সপ্তাহে উন্নীত হয়েছে। ২০০৭-০৯ সালের আর্থিক সংকটের সময় বেকারত্বের মেয়াদও ছিল এর সমপরিমাণ। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি বেকারত্ব বৃদ্ধির হার অতীতের তুলনায় কম; এই তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে এখনই সচেতন হওয়া দরকার। এই প্রবণতা মন্দার সম্ভাব্য লক্ষণ বলেই তারা মনে করছে।
এদিকে ৫ এপ্রিল মন্দার পূর্বাভাস দিয়েছে জে পি মরগান। পূর্বাভাস দিতে যেমন বেশি সময় লাগেনি তাদের, তেমনি মন্দা আসতেও বেশি সময় না-ও লাগতে পারে বলে তাদের পূর্বাভাস। চলতি বছরেই মার্কিন অর্থনীতি মন্দার মুখোমুখি হতে পারে বলে তাদের অনুমান।
মন্দা হলে তার সঙ্গে বেকারত্বও বাড়বে বা উল্টোভাবে বললে, বেকারত্ব বাড়বে বলেই মন্দা আসবে। জে পি মরগান সেটাই বলেছে। কোম্পানির প্রধান অর্থনীতিবিদ মাইকেল ফেরোলি বলেছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্টস বা জিডিপি) সংকুচিত হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা হলে তার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়বে। সারা বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ, জানিয়েছে জে পি মরগান। এর আগে তাদের পূর্বাভাস ছিল, মন্দার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ। অবশ্য ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিতের ঘোষণার পর আগের অবস্থানে ফিরে গেছে জে পি মরগান। অর্থাৎ তখন তারা বলেছে, মন্দার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ।