আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি তার ঘর পুড়িয়ে দেয়ার পর ‘বিপ্লবী সরকার’ গঠনের ডাক দেয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেন। তবে সেই সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরে এসেছেন। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস, বাংলাভাষী অঞ্চলে এ দিনটি গুরুত্বপূর্ণ, তাই তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। 

তার ঘর পোড়ানোর মামলা দ্রুত তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। তবে আগামী রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পটুয়াখালী ডিসি অফিসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করবেন কাফি।

নুরুজ্জামান কাফি সাংবদিকদের বলেন, ‘‘আমার দেয়া সাত দিনের আল্টিমেটাম শেষ হলেও কোনো সূরাহা হয়নি এবং এটা দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার জন্যই সিআইডিতে মামলা ট্রান্সফার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ইনভেস্টিগেশন করা শুরু করছে সিআইডি। তাই আমি এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে আরো সময় নিয়েছি।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আর মাত্র ২ দিন পর ২১ ফেব্রুয়ারি। দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সবার কাছে তাই আমি আপাতত সময় নেবো। তবে আমি রবিবার পটুয়াখালীর ডিসি অফিসের সামনে আবারো সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে আপডেট দেবো।’’

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জুয়েল ইসলাম বলেন, কাফির বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলা অধিকতর তদন্ত করার জন্য সিআইডিতে ট্রান্সফার করা হয়েছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির পটুয়াখালী কলাপড়া উপজেলার রজপাড়া এলাকার গ্রামের বাড়ি গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ২টার দূর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এতে বাড়ি পুড়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই সংবাদ সম্মেলনে করেন কাফি। এ সময় তিনি এ ঘটনার জন্য দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন। সাত দিনের মধ্যে ঘর পুনঃনির্মাণ এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করা হলে ‘বিপ্লবী সরকার’ গঠনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

ঢাকা/ইমরান/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য স আইড সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পবিত্র রমজানের শিক্ষা বিস্তৃত হোক জীবনব্যাপী

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ হলো সালাত বা নামাজ। ইমানের পরেই নামাজ। পবিত্র রমজান মাস হলো নামাজের মাস, যেমন তারাবিহর নামাজ ও কিয়ামুল লাইল নামাজের পাশাপাশি পবিত্র রমজানে সাহ্‌রির বদৌলতে তাহাজ্জুদ নামাজের অভ্যাস গড়া সহজ হয়; এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে পড়ার সুযোগ বৃদ্ধি পায়। ফজরের নামাজ আগেভাগে পড়ে ঘুমানোর কারণে সকালে ইশরাক নামাজ পড়ার সুবিধা হয়।

পবিত্র রমজানের কারণে কাজের চাপ কম থাকায় চাশত নামাজ ও জোহরের আগে আওয়াবিন নামাজ আদায়ের সুযোগ হয়। বিকেলে অফিস বা কর্মস্থল থেকে আগে ফেরার কারণে আসরের নামাজ জামাতে পড়া যায়। একসঙ্গে ইফতার করার সুবাদে মাগরিবের নামাজের জামাতও পাওয়া যায়। অন্যান্য নফল নামাজও বেশি পড়া হয়। পবিত্র রমজানেই নামাজের পূর্ণতা আসে।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় স্তম্ভ হলো জাকাত। সাহাবায়ে কিরাম পবিত্র রমজানেই জাকাত প্রদান করতেন। পবিত্র রমজানে জাকাত প্রদানে চান্দ্রবর্ষের হিসাব অনুযায়ী সঠিকভাবে জাকাত প্রদান করা সহজ হয়।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের চতুর্থ স্তম্ভ হলো হজ। পবিত্র রমজানে ওমরাহ পালন করলে নবীজি (সা.)–এর সঙ্গে হজ করার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের পঞ্চম স্তম্ভ হলো সিয়াম বা রোজা। রোজা হলো পবিত্র রমজানের প্রধান অনুষঙ্গ। আগুন যেমন সোনাকে বিশুদ্ধ করে, তেমনি রোজা ইমানদারের কামনা–বাসনাকে দহন করে তাঁকে খাঁটি বান্দায় পরিণত করে।

রোজার ফিদইয়া পবিত্র রমজানেরই অংশ। রোজা একটি শারীরিক ও মানসিক ইবাদত। কিন্তু অসুস্থ ও দুর্বল ব্যক্তির জন্য কাজার পাশাপাশি অপারগতায় ফিদইয়ার বিধান রাখা হয়েছে, যা আর্থিক ইবাদত। এতে বোঝা যায় রোজার পরিধি কত ব্যাপক।

রোজার কাফফারা পবিত্র রমজানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রোজা শারীরিক ইবাদত হওয়া সত্ত্বেও দুর্বলচিত্তের ব্যক্তি যদি রোজা ভঙ্গ করেন, তবে তাঁর জন্য কাফফারার বিধান রয়েছে। এটি হলো দাস মুক্তি দেওয়া অথবা ৬০ জন গরিবকে দুই বেলা পরিপূর্ণ আহার করানো অথবা একাধারে ৬০টি রোজা রাখা। অর্থাৎ যদি কেউ রমজান মাসের একটি রোজা ভঙ্গ করেন, তবে তাঁকে ৬০ দিনের রোজা রাখতে হবে অথবা কাফফারা আদায় করতে হবে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, দান–খয়রাত ও সমাজকল্যাণই পবিত্র রমজানের অন্যতম উদ্দেশ্য।

রোজা শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়। দাতা ও গ্রহীতার সুবিধার্থে পবিত্র রমজানেও এটি প্রদান করা যায়। ঈদের সঙ্গে ফিতরার সম্পৃক্ততার কারণে এর নাম হয়েছে ঈদুল ফিতর। সদকাতুল ফিতর হলো ঈদের আনন্দ সর্বজনীন করার উপায়। ধনী–গরিব সবাই যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন, সে জন্য এই ব্যবস্থা। সদকাতুল ফিতর পবিত্র রমজানে রোজা পালনের শুকরিয়াস্বরূপ এবং এটি রোজাকে পূর্ণতা দেয়।

পবিত্র রমজানের বিশেষ উপহার হলো ইতিকাফ। মানবজীবনে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো ইতিকাফ। পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। এখান থেকেও পবিত্র রমজানের মহিমা বোঝা যায়। এক দশকের কম সময়ের ইতিকাফ নফল হলেও এই ইতিকাফ অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি ফজিলতের। ইতিকাফ বছরের যেকোনো সময় করা যায়, তবে সর্বনিম্ন সীমা হলো এক দিন অর্থাৎ সূর্যাস্তের আগে থেকে পরের দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

পবিত্র রমজানের অনন্য উপহার হলো শবে কদর। এটি এমন এক রাত, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। হাজার মাস মানে প্রায় ৮৩ বছর ৪ মাস, যা একটি মানবজীবনের সময়ের সমান। সুতরাং পবিত্র রমজানের সুফল জীবনব্যাপী।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ