প্রস্তুতি ম্যাচের হারে প্রভাব পড়বে না: শান্ত
Published: 19th, February 2025 GMT
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নামবে নাজমুল শান্তর দল। ওই ম্যাচের আগে দুবাইতে পাকিস্তান শাহিন্স বা ‘এ’ দলের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
তবে ওই হারের প্রভাব ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে পড়বে না বলে মনে করেন টাইগার অধিনায়ক শান্ত। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে হারের প্রভাব (ভারতের বিপক্ষে) পড়বে না। প্রস্তুতি ম্যাচ অনুশীলনের জন্যই করা, এটার প্রভাব খুব একটা পড়বে না।’
বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে লম্বা বিপিএল মৌসুম পার করেছে। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে গত বছরের ডিসেম্বরে। তবে খেলার মধ্যে থাকায় এবং দলের ক্রিকেটাররা পারফর্ম করায় ওয়ানডে না খেলার প্রভাব পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন শান্ত।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক ক্রিকেট খেলেছি। বিপিএল খেলেছি, সেখানে ব্যাটাররা ভালো করেছে। অনেকে রান করেছে। এটা আত্মবিশ্বাস দেবে। আমি মনে করি না, মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে।’
ভারত তাদের পুরো টুর্নামেন্ট খেলবে দুবাইয়ে। তবে বাংলাদেশকে গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচ খেলতে হবে পাকিস্তানে। অল্প সময়ে দুই দেশের কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। তবে মানিয়ে নিতে হবে বলেই মন্তব্য করেছেন শান্ত, ‘কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। পাকিস্তানের মতো বড় রান এখানে (দুবাইতে) হয়তো হবে না। রাওয়ালপিন্ডিতে আমরা টেস্ট জিতেছি, সেখানকার উইকেটের আচরণ নিয়ে ধারণা আছে। দুই ভেন্যুতে ভালো খেলতে মুখিয়ে আছি।’
দুই দেশের দুই কন্ডিশনে উইকেটের আচরণ অনুযায়ী ব্যাটিং করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত। ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন বড় রানের ম্যাচ হয়। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির উইকেট আবার ফ্লাট। শান্ত জানিয়েছেন, যেন বড় রান হয় সেভাবেই খেলবেন তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় সাংবাদিককে দাপট দেখালেন শিক্ষিকা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার অশালীন আচরণের শিকার হয়েছেন স্থানীয় একজন সাংবাদিক।
বুধবার ((২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে এক ফাঁকে প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার মিলির কাছে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন মেজাজ হারান; সাংবাদিকদের ‘তুই, তোকারি’ করে লাঞ্চিত করার হুমকি দিতে থাকেন তিনি।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে দেখা যায় শিক্ষিকা মিলির মুখোমুখি ছিলেন সাংবাদিক মামুনুর রশীদ। এক পর্যায়ে মামুনুর রশীদকে হুমকি দিতে দেখা যায়; তাকে জুতা পেটা করার হুমকি দেওয়া হয়।
রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে আসা ভিডিওতে অন্য সাংবাদিকদের দেখা যায়নি। তবে শিক্ষিকা মিলি শুধু মামুনুর রশীদের দিকেই নন, তাদের কাছাকাছি আরো কয়েকজনের উদ্দেশে অশালীন বাক্য ছুড়ছিলেন।
মামুনুর রশীদের দাবি, “নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন তিনি। এক পর্যায়ে গালিগালাজসহ পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারাপিট করার হুমকিও দেন তিনি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিকা মিলি বলছেন, তুই এখান থেকে যা, তোকে আমি স্যান্ডেল খুল মারব। যদি ভালো চাস এখান থেকে যা। অপমান আরো করব আমি। স্যান্ডেল খুলে মারব।”
তখন মামুনুর রশীদ বলেন, আপনি আমাকে মের দেখান দেখি। মারেন, হিট মি।”
শিক্ষিকা মিলি বলেন, “লেট মি, তুই এখান থেকে যা।”
এরপর স্কুল ভবনের প্রবেশ গেটের গ্রিলের ওপার থেকে মামুনুর রশীদকে আবার অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেন ফাতেম আক্তার মিলি। তিনি বলেন, তোর মতো মামুনের স্যান্ডেল দিয়ে মুখ ফাঁটাব আমি।”
তখন মামুন বলেন, আপনি যদি আমার একটা চুল ছিড়তে পারেন, তাহলে… আপনার মতো ফাতেমাকে আমি গুনি না; আপনি তো মহিলা বলে বেঁচে গেলেন।”
মামুনুর রশীদ দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক। ঘটনার পর কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ বলেন, “আমি এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করব।”
অভিভাবক ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মামুনুর রশীদ বলছেন, তার কাছে অভিযোগ রয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর খোঁজ ছিল না প্রধান শিক্ষিকা মিলির। এমন কী ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারিতে পতাকা উত্তোলন করেননি তিনি।
মামুনুর রশীদের বলছেন, সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিলি সুন্দরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের শ্যালিকা। তার দুলাভাইয়ের দাপটে চলতেন তিনি। অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু মন্ডল বলেন, একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এত নোংরা ভাষায় কথা বলাটা দুঃখজনক। আমি সামনে থেকে যা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে, উনি কোনোভাবেই শিক্ষক হওয়ার যোগ্য না।
নুরুজ্জামান নামে আরেক অবিভাবক বলেন, এই প্রধান শিক্ষকের প্রতিষ্ঠানে আমার বাবা নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরি শেষের দিকে এলে এনআইডি কার্ডে বয়সের ভুল ধরে বেতন বন্ধ করে দেন।
“আমার বাবা আব্দুর রহমান মারা গেছেন চার বছর হলো অথচ এখনো তিনি (প্রধান শিক্ষিকা) বেতন উত্তোলনে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুরাহা হয়নি,” অভিযোগ নুরুজ্জামানের।
ঘটনার ভিডিও হাতে আসার পর প্রধান শিক্ষিকা মিলির বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে কলা দিলে তিনি তা কেটে দেন। ফলে তার বক্তব্য নিতে পারেনি রাইজিংবিডি ডটকম।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে এমন আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। অবশ্যই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা চাইব। আর তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আছে, সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ঢাকা/লুমেন/রাসেল