দ্রুততম সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-সম্পর্কিত সব সেবায় চালু হওয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা অনলাইনে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের সংখ্যা এক লাখ অতিক্রম করেছে।

বুধবার (২ জানুয়ারি) এনবিআরের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ বলেন, এনবিআরের আওতাধীন সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম এরইমধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের সংখ্যা ১ লাখের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এই মাইলফলক অতিক্রম করার সহযোগী হিসেবে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে গো-লাইভে যাওয়া বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ), বিস্ফোরক অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে এনবিআরের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আমদানি ও রপ্তানি পণ্যচালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে অবশিষ্ট ১২টি সংস্থা সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট এই সিস্টেম থেকে অনলাইনে প্রদান করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছে এনবিআর। যেকোনো প্রয়োজনে কল সেন্টার (হটলাইন-১৬১৩৯) ফোন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে সেবাগ্রহীতারা।

গত ২ জানুয়ারি বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) চালু করে এনবিআর। আমদানি ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগের অধীনে ৭টি কাস্টমস এজেন্সিকে একক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে। ২০১৭ সালে গৃহীত এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো কাস্টমস সংক্রান্ত ১৯টি সংস্থার কার্যক্রমকে একত্রিত করা। এটি ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ সহজতর করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিকমান বজায় রাখার লক্ষ্যও বহন করে।

বর্তমানে বিএসডব্লিউ-এর আওতায় আসা সাতটি সংস্থা হলো- পরিবেশ অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।

এসব সংস্থা এরইমধ্যে তাদের অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইনে আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত সকল প্রকার প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স এবং পারমিট পেতে পারবেন। ফলে, কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য আর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডোর সুবিধা

২০১৭ সালে এনবিআর ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ প্রকল্প চালু করে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন থেকে এটি বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো নামে পরিচিত হবে। এর লক্ষ্য কাস্টমস-সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমকে একটি প্ল্যাটফর্মের অধীনে নিয়ে আসা। এটি কাগজপত্রের ঝামেলা দূর করে এবং সময় বাঁচিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম আরো সহজ করে তুলবে।

এ প্ল্যাটফর্ম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-সম্পর্কিত পারমিট, লাইসেন্স, প্রশংসাপত্র এবং শুল্ক ঘোষণার প্রক্রিয়াগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করবে। আশা করা হচ্ছে, এটি ব্যবসায়ীদের কাগজপত্র, সময় এবং খরচ কমাতে সাহায্য করবে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নির্মিত এ প্ল্যাটফর্ম কর ফাঁকি রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এ সিস্টেমের মাধ্যমে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকেরা একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিয়ে প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স ও পারমিট পেতে পারবেন। জমা দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইস্যু করা প্রশংসাপত্রের মাধ্যমে পণ্য দ্রুত খালাস করা সম্ভব হবে।

সিস্টেমের কাঠামো

বিএসডব্লিউ সিস্টেম দুটি মূল অংশ নিয়ে গঠিত- বিএসডব্লিউ (বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো) সফটওয়্যার এবং এআরএমএস (অ্যাডভান্স রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম)। টিএফ চুক্তির ধারা ১০.

৭ অনুসারে এ সিস্টেম কার্যকর করা হয়েছে।

এআরএমএস সরাসরি বিএসডব্লিউ সফটওয়্যারের সঙ্গে সংযুক্ত। যখন কোনো ব্যবসায়ী বিএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মে প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স বা পারমিটের (সিএলপি) জন্য আবেদন করেন, তখন আবেদনটি এআরএমএস সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদনকারীর ট্র্যাক রেকর্ড বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর ট্র্যাক রেকর্ড সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

ঢাকা/এনএফ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ স ঙ গ ল উইন ড প ল য টফর ম আমদ ন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধারা জাতির গর্ব: সেনাপ্রধান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধারা জাতির গর্ব হিসেবে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, এই আন্দোলনে তরুণ সমাজ শুধু অংশগ্রহণই করেনি বরং কীভাবে সত্য ও সঠিক পথে ন্যায় সংগত দাবী আদায় করা যায় সেই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসস্থ ‘আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স’-এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা ও শহীদ যোদ্ধাদের পরিবারদের সম্মানে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৭২ জন আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জুলাই যোদ্ধাদের স্বপ্নপূরণে সব সময় পাশে থেকেছে। সেনাপ্রধান অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ‘সমরে আমরা, শান্তিতে আমরা, সর্বত্র আমরা দেশের তরে’—এই মূলমন্ত্র বুকে ধারণ করে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও দেশমাতৃকার কল্যাণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় পাশে থাকবে।

দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, সততা, মানবিকতাবোধ ও নিয়মানুবর্তিতার সমন্বয়ে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করলে এই দেশ সমৃদ্ধির শিখরে আরোহণ করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন সেনাপ্রধান। তিনি সেই স্বপ্নপূরণে সবাইকে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানান।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের ও নিহত যোদ্ধাদের প্রতিটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ