স্মার্টফোনে ক্ষতিকর অ্যাপের প্রবেশ ঠেকাতে অ্যান্ড্রয়েডে যুক্ত হচ্ছে নতুন যে সুবিধা
Published: 19th, February 2025 GMT
স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন কৌশলে বোকা বানিয়ে ব্যক্তিগত বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে থাকে সাইবার অপরাধীরা। এ ক্ষেত্রে টেলিফোন ওরিয়েন্টেড অ্যাটাক ডেলিভারি (টিওএডি) কৌশল বেশ ভয়ংকর। কারণ, এই কৌশল কাজে লাগিয়ে ফোনে কথা বলার সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ক্ষতিকর অ্যাপ ইনস্টল করতে প্রলুব্ধ করা হয়ে থাকে। আর তাই টেলিফোন ওরিয়েন্টেড অ্যাটাক থেকে ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখতে ফোনে কথা বলার সময় স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস পরিবর্তনের সুযোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সীমিত করার সুবিধা চালু করছে গুগল।
টেলিফোন ওরিয়েন্টেড অ্যাটাকের মাধ্যমে সাইবার হামলা চালানোর জন্য প্রথমে বিভিন্ন প্রলোভনযুক্ত এসএমএস পাঠিয়ে নির্দিষ্ট নম্বরে ফোনকল করতে বলা হয়। কেউ সেই নম্বরে ফোনকল করলে বিভিন্ন কৌশলে ভুয়া নির্দেশনা দিয়ে বিপজ্জনক অ্যাপ ইনস্টল করানো হয়। এর ফলে অ্যাপটির মাধ্যমে স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে এবং নিয়মিত তথ্য চুরি করে পাঠাতে থাকে। অ্যান্ড্রয়েডের নতুন নিরাপত্তা সুবিধাটি ফোনকল চলাকালীন ব্যবহারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ সেটিং পরিবর্তনের সুযোগ সীমিত করবে। বিশেষভাবে, এই সুরক্ষা ব্যবস্থা ‘অজানা উৎস থেকে অ্যাপ ইনস্টল’ এবং ‘অ্যাকসেসিবিলিটি অ্যাকসেস’ চালুর মতো সংবেদনশীল কার্যক্রম প্রতিরোধ করবে।
আরও পড়ুন‘পিগ বুচারিং’ প্রতারণায় যুক্ত ২০ লাখ অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলল মেটা: কী এই প্রতারণা, কীভাবে নিরাপদ থাকবেন২৪ নভেম্বর ২০২৪গুগলের তথ্যমতে, নতুন এ সুবিধার মাধ্যমে ফোনকলে কথা বলার সময় কেউ যদি স্মার্টফোনের সেটিংস পরিবর্তনের চেষ্টা করেন, তবে অ্যান্ড্রয়েড স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা আটকে দেবে এবং একটি সতর্কবার্তা দেখাবে। এ ছাড়া, ফোনকল চলাকালীন কোনো অ্যাপকে ‘অ্যাকসেসিবিলিটি সার্ভিস’ ব্যবহারের অনুমতিও দেওয়া যাবে না। বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ১৬ বেটা ২ সংস্করণে পরীক্ষামূলকভাবে সুবিধাটি চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঅনলাইনে চাকরির কথা বলে প্রতারণা, যেভাবে বোঝা যাবে১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪এনসিসি গ্রুপ ও ফিনল্যান্ডের জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্রের (এনসিএসসি-এফআই) তথ্যমতে, এসএমএস ও ফোনকলের মাধ্যমে স্মার্টফোনে ক্ষতিকর সফটওয়্যার ইনস্টল করাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। এসব অ্যাপের মধ্যে ভাল্টার নামের একটি ড্রপার অ্যাপও রয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করতে পারে।
সূত্র: দ্য হ্যাকার নিউজ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু, স্ত্রী কারাগারে
চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জাফর আলী চৌধুরী (৪৩) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার উত্তর ইদিলপুর গ্রামের জানে আলম চৌধুরীর ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কদমতলী শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গ্রেপ্তার আসামি হলেন- রোমানা ইসলাম। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার জেলরোড এলাকার মো. ফয়জুল ইসলামের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন। স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে জাফর আলীর স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ফোলা জখম, কানে জমাটবাঁধা রক্ত ও হাতে নখের আঁচড় ছিল। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের ছোট ভাই আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাফর আলী চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্ত্রী রোমানা ইসলাম। তার শ্বশুরও তাকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত ও নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলেও ছোট ভাইকে জানিয়েছিলেন। জাফরের দুই শ্যালক শরীফুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম বিভিন্নসময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রোমানা ইসলাম তার ননদ রোকেয়াকে ফোন করে জানান, জাফর অসুস্থ এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বলেন। বড় বোন রোকেয়া ও তার ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে লাশ রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। বাদী আবুল হাসনাতের অভিযোগ, ‘পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ৫৫ মিনিট সময়ের মধ্যে জাফরকে তার স্ত্রী রোমানা ইসলাম নিজ হাতে কিংবা অন্য কারও সাহায্যে হত্যা করেছেন।’
চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের মাথায় ফোলা রয়েছে ও কানে রক্ত জমাট বাঁধা আছে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। স্ত্রীর দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি সেটি পুলিশকে না জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্ত্রী মুখ খুলছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।