অবশেষে করাচিতে উড়ল ভারতের পতাকা
Published: 19th, February 2025 GMT
খোলা চোখে ব্যাপারটাতে বিশেষ কিছু নেই। করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে উড়ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পতাকা। সাধারণত, যেকোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে আয়োজক দেশে এমনটা স্বাভাবিক দৃশ্য।
তবে আজ করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আট দলের পতাকার মধ্যে ভারতের পতাকার উপস্থিতি বিশেষ ঘটনা। ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে যাচ্ছে না বলে দেশটিতে ভারতের পতাকা রাখা হয়নি বা হচ্ছে না—এমন একটি বিতর্ক যে বেশ আলোড়ন তুলেছে সম্প্রতি।
দুই দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার ভিডিওতে দেখা যায়, লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম ও করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অন্য সব দেশের পতাকা থাকলেও ভারতের তেরঙা নেই। এ নিয়ে ভারতীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কথা বলেন ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজীব শুক্লাও। অবশেষে আজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর দিন করাচিতে ভারতের পতাকা দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পাকিস্তানের সাংবাদিক ফরিদ খান একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ভারতের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কী চমৎকার এক মুহূর্ত।’ সেই পোস্টে পাকিস্তানিদের ‘বড় মনের মনুষ’ উল্লেখ করে ফরিদ লিখেছেন, সাত ভারতীয় সাংবাদিককে ভিসা দেওয়া হয়েছে।
করাচিতে অন্যান্য পতাকার সঙ্গে ভারতের তেরঙ্গা পতাকা থাকার ভিডিও ও ছবি পোস্ট করেছেন আরও অনেকেই। এর আগে মঙ্গলবার পিসিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে আইএএনএসকে বলেছিলেন, আইসিসির নির্দেশনা অনুসারে স্টেডিয়ামে শুধু আইসিসি ও আয়োজক পিসিবি এবং ম্যাচের দুই দলের পতাকা উত্তোলন করার নিয়ম আছে। ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য পাকিস্তানে না যাওয়ায় দেশটির পতাকাও রাখা হয়নি।
এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের অবস্থান জানতে লাইভমিন্ট থেকে ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব শুক্লাকে জিজ্ঞেস করা হয়। মঙ্গলবার দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমাদের নিশ্চিত হতে হবে ভারতের পতাকা সেখানে আছে কি নেই। যদি না থাকে, তাহলে অবশ্যই থাকা উচিত। অংশগ্রহণকারী সব দেশের পতাকাই সেখানে থাকা উচিত।’
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান হলেও ভারতের সব ম্যাচ হবে দুবাইয়ে। ভারতের কারণেই বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান নিজেদের গ্রুপপর্বের একটি করে ম্যাচ সেখানে খেলবে। একটি সেমিফাইনাল ও ফাইনালও হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আগামীকাল ভারত তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। এরপর রোহিত শর্মারা দুবাইয়ে থেকে গেলেও বাংলাদেশ দল পরের ম্যাচের জন্য পাকিস্তানে চলে যাবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হামাসের মুখপাত্র কানুয়া নিহত
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মুখপাত্র আবদেল-লতিফ আল–কানুয়া নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে হামাস পরিচালিত গণমাধ্যমের খবরে এমনটা বলা হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি ইসরায়েলের নতুন অভিযান শুরু হওয়ার পর নিহত হামাস নেতাদের তালিকায় আরেকটি নাম যুক্ত হলো।
হামাস পরিচালিত আল–আকসা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, জাবালিয়ায় আল–কানুয়ার তাঁবু লক্ষ্য করে হামলা চালানো হলে তিনি নিহত হন। চিকিৎসাকেন্দ্র–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, একই হামলায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। আর গাজা নগরীতে আলাদা হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ছয়জন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজার খান ইউনিস এলাকায় হামলার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সদস্য ইসমাইল বারহুম ও আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা সালাহ আল-বারদাউইল নিহত হন।
বারদাউইল ও বারহুম দুজনই হামাসের ২০ সদস্যবিশিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের সদস্য ছিলেন। হামাস সূত্রের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সংগঠনটির সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের ১১ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
গাজা উপত্যকায় দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত সপ্তাহে ইসরায়েল নতুন করে সেখানে বোমা হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে। জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য হামাসের ওপর চাপ জোরদার করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৮ মার্চ গাজায় ইসরায়েল নতুন করে বড় ধরনের সামরিক হামলা শুরু করার পর থেকে কমপক্ষে ৮৩০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের অর্ধেকই শিশু ও নারী।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দায়ী করে থাকে। গত জানুয়ারি থেকে গাজায় এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের তথ্য অনুসারে, সেদিন হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে। মাঝে কিছু বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হলেও এখনো ৫৯ জন আটক আছেন।
হামাসের অভিযোগ, যুদ্ধ বন্ধের জন্য স্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচনার জন্য মধ্যস্থতাকারীরা যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা বিপন্ন করছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তিনি হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার তিনি আবারও হুমকি দিয়েছেন যে হামাস বাকি জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজা উপত্যকা দখল করা হবে।