২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-০৮ এর আওতায় ৫০ হাজার মে.টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এ চাল সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৬৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার উদ্দেশ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উৎস থেকে চাল সংগ্রহ করে থাকে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ১০ লাখ মে.

টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির’ অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। 

ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ মে. টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং জি টু জি পদ্ধতিতে মায়ানমার থেকে ১ লাখ মে.টন, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মে.টন ও ভিয়েতনাম থেকে ১.০০ লাখ মে.টন আতপ চালসহ মোট ৬.০০ লাখ মে.টন চাল ক্রয়ের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। 

এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মে.টন চাল আমদানির জন্য চুক্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। চুক্তির বিপরীতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১,৬৪,১৬২ মে.টন এবং জি টু জি ভিত্তিতে মায়ানমার থেকে ৮২ হাজার মে.টন চাল বন্দরে পৌঁছেছে। তার মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৯৫,৬৯৬ মে.টন এবং জিটুজি ভিত্তিতে মায়ানমার থেকে ৮১,৮৯৯ মে.টন চাল খালাস হয়েছে। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র, জি টু জি পদ্ধতি এবং বৈদেশিক উৎস থেকে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে আরো চাল আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সূত্র জানায়, চাল আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক চাল ক্রয়ের জন্য গত ২৯ জানুয়ারি তারিখে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র (প্যাকেজ-৮) আহ্বান করা হয়। এতে মোট ১১টি দরপত্র বিক্রি হলেও মোট ৮টি সরবরাহকারী দরপত্র দাখিল করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সবগুলো দরপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভারতীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইটে লিমিটেডকে সর্ব নিম্ন দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মে.টন চালের দাম ৪৩৪.৫৫ মা.ডলার দাম উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এই চাল সরবরাহ করবে।  

বিদেশ থেকে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্য আগমনের পর পণ্য খালাসের পূর্বেই দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা খাদ্য অধিদপ্তরের স্থানীয় পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয় এবং পরে সংগৃহীত নমুনা কম্পোজিট করে এক প্যাকেট পরীক্ষার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করে গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়। দরপত্রে উল্লিখিত বিনির্দেশের কোনো প্যারামিটারের সঙ্গে পণ্যের প্রাপ্ত গুণগত মান নিম্নমানের হলে দরপত্রে উল্লিখিত সমুদয় চাল প্রত্যাখ্যান করার বিধান রয়েছে। এই শর্ত মেনেই সর্বনিম্ন দরদাতা ৬০ হাজার মে.টন চাল সরবরাহ করবে।

জানা গেছে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ৮টি প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য দরদাতা ঘোষণা করে। গ্রহণযোগ্য দরদাতাদের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড  কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্রে ৫০,০০০ মে. টন নন বাসমতি সিদ্ধ চালের জন্য উদ্বৃত্ত দর প্রতি মে. টন ৪৩৪.৫৫ মা.ডলার। যা উৎস দেশসগুলো গড় দর (৪৫৫.৮১ মা.ডলার) অপেক্ষা (৪৫৫.৮১-৪৩৪.৫৫)= ২১,২৬ মা.ডলার কম। এ ছাড়া মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক প্রদত্ত দর বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত প্রতি মে. টন ৪৩৪.৫৫ মা.ডলার, যা বাজার দর যাচাই কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম হওয়ায় উক্ত দর গ্রহণের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে। মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তর উক্ত সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে ক্রয় প্রস্তাব পাঠায়।

সূত্র জানায়, প্রতি মে. টন ৪৩৪.৫৫ মা. ডলার (প্রতি কেজি ৫৩.০১৫১ টাকা) হিসেবে ৫০ হাজার মে. টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের জন্য ২ কোটি ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ মা.ডলার অর্থাৎ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ডলারের বিনিময় হার প্রতি দা. ডলার ১২২ টাকা (সম্ভাব্য) হিসেবে ২৬৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে।

এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল আমদ ন র ন ম ন দরদ ত ৫০ হ জ র ম ন র জন য সরবর হ পর ক ষ কর ত ক টন চ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষির উন্নয়নে প্রয়োজন প্রযুক্তিগত সহযোগিতা

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। তাই কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মেরুদণ্ড বলা হয়। আমাদের সংবিধানে কৃষিবিপ্লবের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, জনগণের  স্বাস্থ্যের মান উন্নয়নকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কৃষি বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কৃষিকাজকে বাদ দিয়ে এ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশের জনসংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে কৃষি খাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা। 


উৎপাদনশীলতা ও আয় বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বিশাল জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধির জন্য কৃষির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দেশের জিডিপিতে কৃষি খাত অর্থাৎ ফসল, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ এগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। শ্রমশক্তির প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মসংস্থান জোগান এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কাঁচামাল সরবরাহ করে। কৃষি সামাজিক কর্মকাণ্ডের এক বিশেষ ক্ষেত্র, যা জনগণের খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা, আয়ের সুযোগ সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এ ছাড়া কৃষি বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য গ্রামীণ এলাকায় ভোক্তাদের বাজারের চাহিদাভিত্তিক পণ্যের উৎস হিসেবে কাজ করে।

পশুপালন, মুরগি পালন, ধান, পাট, রবিশস্যসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন, মৎস্য, প্রাণিসম্পদের মতো খাতগুলোর সমন্বিত রূপ হচ্ছে কৃষি খাত। বাংলাদেশের কৃষিতে ফসল খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং সরকারের কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে ফসল খাত সর্বাধিক গুরুত্বের দাবিদার। প্রতিবছর দেশে কৃষিজমির পরিমাণ প্রায় ১.২০ শতাংশ হ্রাস পাচ্ছে এবং মাটির অবক্ষয় ও উর্বরতা হ্রাস এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে এর গুণাগুণ কমছে। এ ছাড়া পানিসম্পদও সংকুচিত হচ্ছে। ক্রমহ্রাসমান জমিতে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর জন্য বেশি খাদ্য উৎপাদন ও কৃষিজাত শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের প্রয়োজনে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নিবিড়করণ ও বহুমুখীকরণ প্রয়োজন। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষির সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশ সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসরত জনগোষ্ঠী ৫১ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা। এ ছাড়া দেশে একটি নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার জন্য কৃষি উন্নয়ন এবং গ্রামীণ কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অকৃষি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের ভোক্তাদের সঙ্গে কৃষকের সরবরাহ চেইন অব কমান্ড সৃষ্টির  মাধ্যমে কৃষিতে জিডিপির উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। এর ফলে দেশে দরিদ্রতা হ্রাসের পাশাপাশি জনগণের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।


কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশে ছোট খামারের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ও পল্লি অঞ্চলে দারিদ্র্য হ্রাস এবং জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে  গতিশীল ও সাসটেইনেবল করতে বাণিজ্যিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার প্রচলন অপরিহার্য। প্রযুক্তি পরিবর্তনের মাধ্যমে সাসটেইনেবল কৃষি ঘনত্বকরণ ও বহুমুখীকরণের জন্য প্রয়োজন কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণের সম্মিলিত দক্ষ ও কার্যকর কৃষি প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা। এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার সহায়তা প্রয়োজন। সরকারের পক্ষ থেকে সহজ শর্তে কৃষকদের মাঝে উন্নত প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করা অপরিহার্য। কৃষিকে সক্ষমভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য উৎপাদনশীলতা, সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা, যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার, গবেষণা ও গবেষণামূলক কাজের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ দক্ষ মানবসম্পদ সরবরাহ বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে কৃষির সর্বাধিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন অধিকতর প্রযুক্তিগত সহযোগিতা।

ফসল উৎপাদনের জন্য সাধারণত সারাবছর অনুকূল কৃষি জলবায়ু, খামার পর্যায়ে প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য গবেষণা সম্প্রসারণ পদ্ধতি, কৃষি গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য বিশেষজ্ঞ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। প্রধান প্রধান শস্য উৎপাদনের জন্য যুক্তিসংগত প্রযুক্তি, দেশব্যাপী কৃষি উপকরণ সরবরাহ নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী ও সৃজনশীল কৃষক আমাদের কৃষি খাতের সক্ষমতা। কৃষি কর্মকাণ্ডের জন্য পর্যাপ্ত শ্রমশক্তি, বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক জীববৈচিত্র্য, সেচের প্রাপ্যতা, বিদ্যমান সহায়তামূলক প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো, সরকারের বিদ্যমান আর্থিক সহায়তা, দেশব্যাপী বিস্তৃত কৃষি ব্যবস্থাপনা মনিটরিং নেটওয়ার্ক, বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলের মাঠ পর্যায়ের সরকারি অফিস, ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদের ব্যবহার উপযোগী নির্দেশিকা আমাদের দেশের কৃষকের পারদর্শিতা হিসেবে চিহ্নিত। 


দুর্বল কৃষি বিপণন ব্যবস্থাপনা, ফসল কাটার পর অধিক ক্ষতি, অনেক সময় ফসল কাটার সময় প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে মাঠ থেকে ফসল ঘরে আনা যায় না। ফলে জমিতে অরক্ষিত অবস্থায় ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় কৃষকদের কিছুই করার থাকে না বিধায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। কৃষি কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য কৃষকের নিজস্ব মূলধনের অভাব, সীমিত সরকারি কৃষিঋণ, কৃষক সংগঠনের সক্রিয়তার অভাব, উপকরণ ব্যবহারের সীমিত দক্ষতা– এগুলো আমাদের কৃষি খাতের অক্ষমতা। রপ্তানি বাজারের চাহিদা পূরণে মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির অভাব, প্রতিকূল পরিবেশে উপযোগী প্রযুক্তির অপর্যাপ্ততা রয়েছে। অগ্রসরমাণ কৃষিবিজ্ঞানে প্রশিক্ষিত গবেষক, অবকাঠামোমূলক অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা কৃষি খাতের দুর্বল দিক। কৃষিতে বছরে বহুমুখী ফসল ফলানোসহ কৃষি উপকরণের মান নিয়ন্ত্রণে দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আমাদের কৃষি খাতকে ক্ষীণ করে তুলছে। এ ছাড়া কৃষিজাত পণ্যের সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। 


কৃষি গবেষণার মাধ্যমে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই কৃষি উন্নয়নের জন্য একটি সুসমন্বিত গবেষণা পরিকল্পনা অপরিহার্য। গবেষণার মাধ্যমে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব। এতে কৃষিকে চাহিদাভিত্তিক করা সম্ভব হবে। এ জন্য উৎপাদন মাত্রার চেয়ে বেশি প্রয়োজন উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধি করা। কৃষি ফার্মগুলোতে উৎপাদনশীলতা ও কৃষকের আয় বৃদ্ধির জন্য নতুন প্রযুক্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারকে কৃষি সম্প্রসারণকে একটি সেবা প্রদানকারী ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, যা বর্ধিত কৃষি উৎপাদনের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষককে উপযুক্ত কারিগরি ও ফার্ম ব্যবস্থাপনাবিষয়ক তথ্য সরবরাহ, পরামর্শ প্রদানসহ নতুন প্রযুক্তির সহযোগিতা উন্নত ফার্ম পদ্ধতি এবং কৌশলগত বিষয়ে সহযোগিতা দেবে।

 
অতএব, কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার তাগিদে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা বেশি। সে প্রেক্ষাপটে গবেষণা ও সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনে কৃষকের সঙ্গে মতবিনিময়সহ সমস্যা সমাধান এবং কৃষকের সামগ্রিক উন্নয়নে সরকার ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে কৃষকদের কার্যকর সহযোগিতা দেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষি উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সুযোগ না থাকলে কৃষি উন্নয়ন অনেকটা তলানিতে ঠেকে যাবে। তাই কৃষি উন্নয়নে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। 


ড. বি এম শহীদুল ইসলাম: শিক্ষাবিদ ও গবেষক
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে
  • পানি নেই ঝিরি-ঝরনায় সংকটে দুর্গম গ্রামবাসী
  • আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু
  • আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, লোডশেডিং বাড়তে পারে
  • গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
  • যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্কযুদ্ধে কতটা বাড়বে আইফোনের দাম
  • রংপুরে পাইপলাইনে গ্যাস কতদূর
  • গরমে লোডশেডিং হলে আগে ঢাকায় হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
  • রোগা গরু সরবরাহ, তোপের মুখে বিতরণ স্থগিত
  • কৃষির উন্নয়নে প্রয়োজন প্রযুক্তিগত সহযোগিতা