খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অনলাইনে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন কুয়েটের সহ-উপাচার্য (প্রোভিসি) প্রফেসর ড.

এস কে শরিফুল আলম।

আরো পড়ুন: কুয়েটের প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা

তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম এম এ হাসেমকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) শাহ মুহাম্মদ আজমত উল্লাহ। অন্য দুইজন সদস্য হলেন- শহীদ স্মৃতি হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আবু ইউসুফ ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবু জাকির মোর্শেদ।

কুয়েট সূত্র জানায়, জরুরি সিন্ডিকেট সভায় গত বছরের ১১ আগস্ট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সব শিক্ষক ও কর্মচারীকে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধকরণ, আইন অমান্যকারীদের চাকরিচ্যুতসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

সভায় সংঘর্ষে আহত সব শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবেন বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মাছুদ।

এর আগে, আজ দুপুর দেড়টার দিকে উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে কুয়েটের প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কুয়েট উপাচার্য এখনো অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সকাল থেকেই অনেক শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে যারা ভাড়া রয়েছেন তাদের ভেতর ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা রয়েছেন উদ্বিগ্ন।

উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে বিরোধের জেরে গতকাল মঙ্গলবার কুয়েটে ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য এক ড ম ক র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে নানা ধরনের অস্থিতিশীলতার চেষ্টা চলছে: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দেশে নানা ধরনের অস্থিতিশীলতার চেষ্টা চলছে। এই ধরনের অস্থিতিশীলতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যহত করতে পারে। এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আমাদের কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। 

রোববার সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি হলে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যাতে অব্যহত থাকে সেজন্য সব রাজনৈতিক পক্ষ, সব ব্যক্তিবর্গ এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, আমাদের সকলকে এমন ভূমিকা নেওয়া উচিত, যাতে করে এদেশের মানুষের স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করতে পারি। যারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করছেন তারা যেন দায়িত্বশীল আচরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শেখ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে নারী ও শিশুকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাসহ যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, নানানভাবে ষড়যন্ত্র চলছে, তৌহিদী জনতার নামে মব আক্রমণ চলছে, বিভিন্ন  গোষ্ঠীর ওপর হামলা হচ্ছে, নারী এবং বিভিন্ন মাজারে হামলা চলছে, ধর্মীয় কিংবা সংখ্যালঘুরাও বাদ যাচ্ছে না। এই রকম কাজ বাংলাদেশকে ভারতীয় মিডিয়া ও ভারতের শাসকদল যেভাবে সারা দুনিয়ায় হাজির করতে চায়, সেই চেষ্টাকে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্য নানাভাবে তৈরি করা হচ্ছে।  

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ৯০ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছিল। মানুষ গণতন্ত্রের আশা করলেও আমরা দেখেছি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয়নি। যথার্থভাবে লক্ষ্য ও কর্মসূচি হাজির না থাকায় ৯০ পরবর্তী সরকারগুলো একই রাষ্ট্র কাঠামোয় এসে মানুষের ভোটের অধিকার এবং জনগণের যে ক্ষমতা তা কেড়ে নিয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে নিজেদের দাবি করা তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তুলে দেয়। সমস্ত রাষ্ট্র যন্ত্রকে পকেটে ভরে মানুষের  ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদি কায়েম করেছে। 

গণসংহতি আন্দোলন রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলা আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান, সদস্য সচিব মুফাখখারুল ইসলাম মুন, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা রফিকুল ইসলাম, আল মেহেদী প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ