টাঙ্গাইলে হেনাকে খুঁজে পেলেন বাপ্পারাজ
Published: 19th, February 2025 GMT
‘চাচা, হেনা কোথায়?’ সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত সংলাপ। এ নিয়ে অনেক হাস্যরসও হয়েছে। অবশেষ হেনাকে খুঁজে পেলেন বাপ্পারাজ। দুজনের দেখা হলো টাঙ্গাইলে। আজ অভিনেতা নাঈম তাঁর নিজ বাড়ী টাঙ্গাইলের সাহেব বাড়ীতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। সোখানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাপ্পারাজসহ অনেকেই। এসময় নাঈমের সঙ্গে থাকা শাবনাজকে দেখে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন বাপ্পারাজ।
দুজনে কুশল বিনিময় করেন। তাদের চোখের কোনে ঝড়ে আনন্দ অশ্রু। এরপর চলে নানা রসিকতা। এক পর্যায়ে নাঈমকে বাপ্পারাজ জিজ্ঞেস করেন ‘নাঈম ভাই হেনা কোথায়? নাঈমের উত্তর, ‘বাপ্পা তুই অনেক দেরী করে ফেলেসিস। হেনার তো আমার সঙ্গে অনেক আগে বিয়ে হয়ে গেছে’। বাপ্পারাজ চিৎকার করে বলে না আমি বিশ্বাস করি না.
১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় সংলাপটি ছিল। পর্দায় ছিলেন আনোয়ার হোসেন ও বাপ্পারাজ। আর ছবিতে হেনা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শাবনাজ। এই ছবির আরেকজন নায়ক ছিলেন অমিত হাসান। সিনেমাটির নির্মাতা ইফতেখার জাহান। আর ছবির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ‘প্রেমের সমাধি’ ছবির সেই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, ‘সিনেমার এক পর্যায়ে নায়ক বকুল (বাপ্পারাজ) দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে তাঁর প্রেমিকা হেনার (শাবনাজ) বাড়ি সাজানো দেখতে পান।
তিনি হেনার বাবাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘চাচা, বাড়িঘর এত সাজানো কেন? আর হেনা কোথায়? চাচা, কথা বলছেন না যে। চুপ করে আছেন কেন?’ জবাবে চাচা বলেন, ‘হেনাকে তুমি ভুলে যাও, হেনার বিয়ে হয়ে গেছে।’ বকুল তখন আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘না না, হেনার বিয়ে হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি না, আমি বিশ্বাস করি না।’ দীর্ঘদিন পর এ সংলাপটি সামাজিক মাধ্যমে পুনরায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই এই দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করছেন এবং নিজেদের মতামত ও অনুভূতি প্রকাশ করছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী ভাইডেল চীনা ভাষায় অনর্গল কথা বলেন
জার্মানির রাজনৈতিক দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) সহনেতা অ্যালিস ভাইডেল বিভিন্ন কারণেই ব্যতিক্রমী একজন ব্যক্তি। একদিকে তাঁর উগ্র ডানপন্থী দলে রয়েছে পুরুষের আধিপত্য। অন্যদিকে, অভিবাসনবিরোধী দলটি নিজেকে প্রথাগত পারিবারিক মূল্যবোধ ও সাধারণ মানুষের রক্ষাকর্তা হিসেবে তুলে ধরে থাকে। তবে আপাতদৃষ্টিতে ভাইডেলের সঙ্গে এসব সাংঘর্ষিক।
৪৬ বছর বয়সী ভাইডেলের জীবনসঙ্গী শ্রীলঙ্কায় জন্মগ্রহণকারী এক নারী। তাঁরা দত্তক নেওয়া দুই সন্তানকে একসঙ্গে লালন-পালন করছেন।
ভাইডেলের চলচ্চিত্রকার হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে। অর্থনীতি নিয়ে পিএইচডি করেছেন চীনে। ইংরেজি ও মান্দারিন ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন তিনি।
ভাইডেলের জন্ম পশ্চিম জার্মানিতে। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বাধীন এএফডি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সাবেক পূর্ব জার্মানিতে, যা সাবেক কমিউনিস্ট জার্মানি হিসেবেও পরিচিত। রাজনীতি শুরুর আগে ভাইডেল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস ও জার্মানির অ্যালিয়ানজ গ্লোবাল ইনভেস্টরসে চাকরি করেছেন। তা ছাড়া কিছুদিন ফ্রিল্যান্স বাণিজ্য পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
ব্যতিক্রমী কর্মজীবনের কারণেই ভাইডেল এএফডির জন্য ‘সম্পদে’ পরিণত হয়েছেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, জার্মানির কর্তৃপক্ষগুলো এএফডিকে গণতন্ত্রবিরোধী মনে করে। কিন্তু ভাইডেলের উদার মনোভাবের কারণে দলটি সমাজের বহু মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে।
ভাইডেলকে প্রায় সময় কালো স্যুট, সাদা শার্ট ও গলায় মুক্তার মালা পরতে দেখা যায়। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের কিছু সহকর্মীর চেয়ে নানা বিষয়ে তিনি বেশি দক্ষ। তবে সমালোচকেরা তাঁকে ভয়ানক সুবিধাবাদী ও ‘ভালো মানুষের মুখোশধারী’ বলে মনে করেন।
এএফডি বেশি পুরোনো দল নয়। ১২ বছর আগে যাত্রা শুরু করা দলটি জার্মানির আজ রোববারের নির্বাচনে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দলটি জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনকি এ আশঙ্কাও করা হচ্ছে দলটি ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির শাসনব্যবস্থাকে জটিল করে তুলতে পারে।
জার্মানির বোখুম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অলিভার লেম্বকে বলেন, ‘ভাইডেল এমন এক ব্যক্তি, যিনি এএফডির প্রথাগত রাজনৈতিক এলাকার বাইরে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ও মধ্যবিত্ত বুর্জোয়া শ্রেণির কাছে আবেদন তৈরি করতে পারেন। [দলটির] উন্মাদ ও চরমপন্থীদের আখড়ায় শুধু তাঁকেই পরিপক্ব বলে মনে হয়।’
এএফডির এ নেতার আমলে গত কয়েক বছরে দলটির সমর্থক বেড়েছে। এ সময় মূলত অভিবাসনবিরোধী মনোভাব ও চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের ভঙ্গুর জোটের কার্যক্রমে সৃষ্ট হতাশা থেকে লাভবান হয়েছে দলটি। শলৎজের নেতৃত্বাধীন জোট গত নভেম্বরে ভেঙে গেছে।
জার্মানিতে সাম্প্রতিক নির্বাচনী প্রচারে বেশ কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ক্ষোভ উসকে দিয়েছেন ভাইডেল। সহিংসতার ঘটনায় একাধিক অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজকের নির্বাচন নিয়ে চালানো কিছু জরিপে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ২৯ শতাংশ সমর্থন রয়েছে রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ)। ২১ শতাংশ নিয়ে এরপরই রয়েছে এএফডি। ১৬ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় স্থানে শলৎজের নেতৃত্বাধীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি)।
এএফডি এবারের আগে কখনো চ্যান্সেলর প্রার্থী দেয়নি। ভাইডেল এরই মধ্যে স্বীকার করেছেন যে এখনই তাঁর দলের সরকারের শরিক হওয়ার তেমন একটা সম্ভাবনা নেই। তাঁর এ মন্তব্যের কারণে অন্যান্য দলগুলো এএফডির সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফলে এএফডিকে ঘিরে একধরনের সহযোগিতা না করার মনোভাব গড়ে উঠেছে।
এসপিডি প্রধান ওলাফ শলৎজের (বাঁয়ে) নির্বাচনী প্রচারণার পোস্টার ও এএফডি প্রধান অ্যালিস ভাইডেলের নির্বাচনী প্রচারণার পোস্টার। জার্মানির হামবুর্গে, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫