ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। ২০২২ সালের নির্বাচনে নিজের পরাজয়ের পর অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বলসোনারোর পাশাপাশি আরও ৩৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছে।

৬৯ বছর বয়সী বলসোনারো এবং ওই ৩৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলোর সবই বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকে ক্ষমতা গ্রহণ থেকে দূরে রাখাসংক্রান্ত।

ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেল পাওলো গোনেত ব্রাঙ্কো বিভিন্ন নথি ও আদান-প্রদানকৃত বার্তার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগগুলো দায়ের করেছেন। তাঁর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অভিযোগগুলোর মধ্যে ‘সশস্ত্র অপরাধমূলক সংগঠন’ পরিচালনাসংক্রান্ত একটি অভিযোগ আছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, বলসোনারো এবং তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ওয়াল্টার ব্রাগা নেতোর নেতৃত্বে সংগঠনটি পরিচালিত হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বেসামরিক ও সামরিক কর্মীরাসহ অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সমন্বিতভাবে ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফলাফলকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া ৮০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কৌঁসুলির কার্যালয় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই বছরের তদন্তের পরে গত বছর ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বলা হয়েছে, ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখতে ‘পুরোপুরি সচেতনভাবে ও সক্রিয়ভাবে’ ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিলেন বলসোনারো।

বলসোনারো তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, তিনি নিগ্রহের শিকার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো লিখেছেন, ‘অভ্যুত্থানচেষ্টার অভিযোগটি মনগড়া। বলসোনারোর বিরুদ্ধে একেবারেই কোনো প্রমাণ নেই।’

বলসোনারোকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার ঘোষণা আসার পর তাঁর আইজীবী দল এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, বলসোনারো কখনোই এমন পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রাঙ্কোর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থায় আক্রমণের মধ্য দিয়ে ২০২১ সালে এ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণের সময় বিরোধী দলের প্রার্থীদের ভোট দেওয়া থেকে ভোটারদের বিরত রাখার জন্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে মোতায়েন করা হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্ট এখন অভিযোগগুলো যাচাই করবে এবং বলসোনারোর বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু করবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবে।

অভিযোগ দায়েরের কয়েক ঘণ্টা আগে, বলসোনারো ব্রাসিলিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, অভিযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর কোনো ধরনের মাথাব্যথা নেই।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চবির শাটলে সিনিয়রকে জুনিয়রদের হামলা, বিচার দাবি

তুচ্ছ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে এক সিনিয়রের ওপর জুনিয়রদের হামলার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে হামলাকারীদের শাস্তি চেয়ে এ বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা।

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভংকর দে।

আরো পড়ুন:

অপহৃত শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকে গোপন স্থানে ডেকেছে অপহরণকারীরা

খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে অপহরণ

অভিযুক্তরা হলেন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের (আইএমএল) রোহান তাহিন, সোহেল ও মামুনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আমরা ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তুচ্ছ ঘটনায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের শাটলে আমাদের শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভংকর দে এর সঙ্গে চবির আইএমলএল বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তর্ক শুরু হয়। এর একপর্যায়ে শুভংকরের ওপর ওই শিক্ষাবর্ষের রোহান তাহিন, সোহেল, মো. মামুনসহ কয়েকজন মিলে বর্বরোচিত হামলা করে এবং শাটল থেকে মারধর করে নামিয়ে দেয়।”

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। বর্তমানে তার চলমান চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাও অনিশ্চিত। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আসাদ নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, “শাটলে সিটে বসার পর পায়ের সঙ্গে পা লাগা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এটি নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভাইটি কথা কাটাকাটির মাঝে জুনিয়র ছেলেকে তীব্রভাবে বল প্রয়োগ করলে জুনিয়র ছেলেটিও পাল্টা বলপ্রয়োগ করে। এরপর জুনিয়র ছেলেটির কিছু সহপাঠী এসে সিনিয়র ভাইয়ের ওপর চড়াও হয়। এর মধ্যে দুইজন ছেলে খুবই আক্রমণাত্মক ছিল।”

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “আমাদের কাছে আজ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবেন।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টিপকাণ্ডে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত কনস্টেবলের মামলা
  • টিপকাণ্ড: লতা সমাদ্দার, সুবর্ণা মোস্তফাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • শেখ হাসিনার মতো এখনও নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে: আব্দুস সালাম
  • চবির শাটলে সিনিয়রকে জুনিয়রদের হামলা, বিচার দাবি
  • ওয়াক্‌ফ আইন মুসলমানদের ছন্নছাড়া করার ষড়যন্ত্র
  • ইসরায়েলিদের বাকিংহাম প্যালেসে কেন ঢুকতে দিতেন না রানি এলিজাবেথ
  • ‘জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে ৫ মিনিটে পরিণতি ভয়াবহ হবে’
  • শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না প্রাইম ফাইন্যান্স
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে সরকার, আবেদন শুরু
  • বিরল জাতের বিড়ালজাতীয় প্রাণী অনলাইনে বিক্রির সন্দেহে স্পেনে দম্পতি গ্রেপ্তার