গর্ভধারণের আগে অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ জরুরি কেন
Published: 19th, February 2025 GMT
গর্ভধারণের আগে কারও অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকলে, গর্ভকালে নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হতে পারে, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
গর্ভধারণে দেরি হওয়া
অতিরিক্ত ওজনের কারণে নারীদের ওভুলেশনের প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে। এতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়। এটি মূলত হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ঘটে, যার ফলে ডিম্বাণুর পরিপক্বতা ও পরবর্তী গর্ভধারণের প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
স্থূলতা গর্ভকালে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এতে শিশুর জন্মকালে অতিরিক্ত ওজন, জন্মগত ত্রুটি বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম দিতে হতে পারে।
আরও পড়ুনকৈশোরে সঠিক পুষ্টি কেন জরুরি২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪উচ্চ রক্তচাপ ও প্রি-একলাম্পশিয়া
স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপ বা প্রি-একলাম্পশিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এটি মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, প্রসবকালে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভপাতের ঝুঁকি
অতিরিক্ত ওজনের কারণে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। এটি বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে বেশি দেখা যেতে পারে।
শিশুর বিকাশগত সমস্যা
অতিরিক্ত ওজনের কারণে শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সঠিকভাবে না–ও পাওয়া যেতে পারে। এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও পড়ুনসিজারিয়ান শিশুরা কি বেশি বুদ্ধিমান হয়?০৪ ডিসেম্বর ২০২৪প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা যা হতে পারেখাদ্যাভ্যাস
গর্ভধারণের পরিকল্পনা থাকলে আগেই সচেতন হোন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। বেশি করে শাকসবজি, ফল, পূর্ণ শস্য, স্বাস্থ্যকর প্রোটিন ও চর্বিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমাতে হবে।
শারীরিক ব্যায়াম
শারীরিক ব্যায়াম গর্ভধারণের আগে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হাঁটা, সাঁতার কাটা, যোগব্যায়াম ইত্যাদি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং গর্ভধারণে শরীরকে প্রস্তুত করে।
ডায়েট ও শারীরিক কার্যকলাপ গর্ভধারণের আগে পরিকল্পিত ডায়েট ও শারীরিক কার্যকলাপ শুরু করা উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মায়ের শরীরকে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে।
আরও পড়ুনজন্মের পর শিশুর প্রথম কান্না কেন জরুরি২০ জুলাই ২০২৩মনোসামাজিক সহায়তা
অতিরিক্ত ওজন কমানো মানসিক চাপ ও শারীরিক দিক থেকেও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এ জন্য মনোবিদ বা কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ
গর্ভধারণের আগে বা গর্ভধারণের পরিকল্পনার সময় একজন গাইনোকোলজিস্ট বা প্রজনন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তাঁরা মায়ের শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করেন এবং গর্ভধারণের জন্য নিরাপদ পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন।
ডা.
শারমিন আব্বাসি, বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ ও গাইনোকোলজিস্ট, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
হাইওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ডিবির ৫ সদস্য
বগুড়ায় দুই তরুণকে তুলে নিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে হাইওয়ে পুলিশ। গত রোববার রাত ৩টার দিকে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার পুলিশ বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের বীরগ্রাম এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালককেও গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে মুক্তিপণের নগদ দুই লাখ টাকা, ডিবির পোশাক, পরিচয়পত্র ও একটি ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার এসআই শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, কনস্টেবল আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল মাহবুব আলম, কনস্টেবল বাশির আলী এবং তাদের মাইক্রোবাসের চালক মেহেদী হাসান।
পুলিশ সূত্র জানায়, আরএমপির গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্য রোববার রাতে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আসেন। তারা জুয়া খেলার অভিযোগে চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘরকান্দি গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে রাব্বী হাসান ও একই এলাকার শেরবান খানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে গাড়ি থামিয়ে তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দরকষাকষি করে দুই তরুণের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।
বগুড়া জেলা পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে শেরপুর ও শাজাহানপুর থানা এলাকায় ডিবির মাইক্রোবাসটি থামানোর চেষ্টা করে। না পেরে তারা কুন্দারহাট হাইওয়ে থানাকে বিষয়টি জানায়। পরে হাইওয়ে পুলিশের এসআই মাসুদ রানার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় গাড়িটি আটক করা হয়। এ সময় ডিবির পাঁচ সদস্য তাদের পরিচয় দিয়ে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেন। হাইওয়ে পুলিশ আরএমপির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়, ওই পাঁচজন কাউকে না জানিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে বগুড়ায় গিয়েছিলেন। এর পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ডিবির পাঁচ সদস্যকে ওই রাতেই কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা হয়ে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সোমবার তাদের নেওয়া হয় ধুনট থানায়। সেখানে অপহরণের শিকার রাব্বি হাসানের বাবা সেলিম হোসেন তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা করেন। ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
আটক পাঁচ ডিবি সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করে আরএমপি মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন জানান, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।