নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ধনাইয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে কে বা কারা এবং কী কারণে তাঁকে হত্যা করেছে, তা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ওই ব্যবসায়ীর নাম কবির উদ্দিন (৩৬)। তিনি উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ধনাইয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় শিবপুর বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।

কবিরের স্বজন ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কবির গতকাল রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে ধনাইয়া ব্রিজ এলাকায় পৌঁছার পর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আজ সকালে ওই পথে চলাচলের সময় স্থানীয় কয়েকজন সেখানে তাঁর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পরিবারের সদস্যেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটিকে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে শিবপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহত কবির উদ্দিনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের ছয়টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তাঁর বাঁ পাঁজরের নিচে, কোমরের পেছনে ও বুকের ডান পাশের আঘাত ছিল গুরুতর। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফজাল হোসাইন জানান, বাড়ি ফেরার পথে ওই ব্যবসায়ীকে কে বা কারা উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

পুকুর, টিলা কি কিছুই থাকবে না

দেশের বড় শহর ছাড়িয়ে জেলা শহর, এরপর উপজেলা সদর এলাকাগুলোও এখন পুকুরশূন্য হয়ে পড়ছে। জলাশয় সুরক্ষায় দেশে কঠোর আইন আছে। ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা পুকুর ভরাটের ওপরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে আইনে। দুঃখজনক হচ্ছে কেউ আইন মানছে না। যাদের আইন প্রয়োগ করার কথা, তাদেরও সে ব্যাপারে তেমন তৎপরতা নেই। আছে নানা সংকট ও সীমাবদ্ধতাও। যে কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় গত কয়েক মাসেই ডজনখানেক পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।    

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের নিকট দূরত্বেই কয়েক দশকের পুকুর ভরাট হয়ে গেছে সম্প্রতি। এখন সেখানে গেলে পুকুরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। বিপণিবিতান নির্মাণে পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। এভাবে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণসহ নানা কাজে কয়েক মাসে এই উপজেলায় ১০–১২টি বড় পুকুর ভরাট করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের খুব কাছে পুকুর ভরাট চললেও রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কয়েক মাসে এভাবে অবাধে একের পর এক পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। পুকুরের পাশাপাশি মাটি ফেলে ফসলি জমিও ভরাট করা হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও ভরাটের জন্য টিলা কেটে মাটি নেওয়া হচ্ছে। এতে ফসলি জমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, বেশির ভাগ মাটির কাটার কাজ রাতে চলে। তাঁরা পৌঁছানোর আগেই দুষ্কৃতকারীরা সংবাদ পেয়ে যান। তাঁরা শুধু ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পারেন; কিন্তু পরিবেশ বা কৃষি বিভাগ যাঁরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিতে পারেন। তাঁরা এগিয়ে এলে এই সমস্যাগুলোর একটি সমাধান হবে। তবে জড়িত ব্যক্তিদের দাবি, স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই পুকুর ও ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে, যা ইউএনওর বক্তব্যের বিপরীত বাস্তবতা এখানে হাজির করছে। তা ছাড়া এমন অভিযোগ গুরুতর।

জেলা প্রশাসকের বক্তব্য, বিজয়নগরে অনেক এলাকায় পুকুর ও ফসলি জমি ভরাটের কাজ চলছে। উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেট আছেন মাত্র একজন, এসি ল্যান্ড নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন হয়েছেন। সমস্যাগুলো সমাধানে অভিযান চালানো হবে।

আমরা জেলা প্রশাসকের বক্তব্যে আস্থা রাখতে চাই। পরিবেশ ও কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে আরও সক্রিয় হবে আশা রাখছি। বিজয়নগরের স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগেরও তদন্ত করা হোক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুকুর, টিলা কি কিছুই থাকবে না