চিকিৎসাধীন ভিসির পদত্যাগের দাবিতে কুয়েট চিকিৎসাকেন্দ্রের বাইরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
Published: 19th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের (ভিসি) পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে চিকিৎসাকেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে তাঁরা সেখানে অবস্থান করছেন। এই চিকিৎসাকেন্দ্রের দোতলায় চিকিৎসাধীন ভিসি মুহাম্মদ মাছুদ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সেখানে আছেন।
অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের একজন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সিয়াম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দাবি হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা। আমাদের মূল দাবি এখন যাঁরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করেছিলেন, তাঁদের বহিষ্কার করতে হবে। ভিসি স্যারকে পদত্যাগ করতে হবে। উনি আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণ আগপর্যন্ত উনি আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। বহিরাগত ব্যক্তিরা ক্যাম্পাসে ঢুকে দা-ছুরি নিয়ে আক্রমণ করেছেন আমাদের ব্যাচমেট, জুনিয়র ও সিনিয়রদের ওপর। অনেকে আহত হয়েছেন। অথচ ভিসি স্যার বলছেন, তিনি ব্যর্থ নন। তিনি জাস্ট দুই ঘণ্টা লেট করেছিলেন। উনি যদি ক্যাম্পাসে ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে না পারেন, তাহলে এমন কোনো ভিসি কুয়েট ক্যাম্পাসে দরকার নাই। এ রকম ভিসির আন্ডারে আমরা কুয়েটকে দেখতে চাই না।’
আরও পড়ুনথমথমে কুয়েট, রামদা হাতে ভাইরাল যুবদল নেতাকে বহিষ্কার২ ঘণ্টা আগেগতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় শতাধিক আহত হন। গতকাল রাতে ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না এবং থাকলে আজীবন বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি; গতকালের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা, বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা নেওয়া; ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাখা; আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করা এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।
কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনার পর আজ অনেক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে দেখা যায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য অবস থ ন পদত য গ আম দ র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা
সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’
সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।
গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।
গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’
হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।
সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।
আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।
সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিবযেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।
দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।
সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী