প্রায় তিন দশক পর পাকিস্তানে কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট হচ্ছে। আজ করাচিতে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। আসর শুরুর এই ক্ষণটিকে পাকিস্তানবাসীর জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি সবাইকে উপভোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আর বিশ্ববাসীকে তাদের খেলা দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগের দিন আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানিয়ে রিজওয়ান বলেন, ‘২৯ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে কোনো বৈশ্বিক ইভেন্ট হচ্ছে। তাই আমি মনে করি, পুরো জাতির উচিত ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উপভোগ করা।’ কেন উপভোগ করা উচিত, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান যথেষ্ট ভুগেছে। তবে এই কঠিন সময়েও আমরা ২০০৯ সালে টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছি, ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছি। এবার ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ এসেছে। অবশ্যই উপভোগ করা উচিত।’

২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পরই বদলে যায় পাকিস্তানের পরিস্থিতি। নিরাপত্তা শঙ্কায় বিদেশি দলগুলো সেখানে যাওয়া কমিয়ে দেয়। এর মধ্যে ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তান এক নিষিদ্ধ দেশে পরিণত হয়েছিল। সেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে ক্রিকেট ফিরেছে পাকিস্তানে। এখন ফিরছে আইসিসি টুর্নামেন্ট।

প্রত্যাবর্তনের এই টুর্নামেন্টটি জিতে স্মরণীয় করে রাখার দিকেও মনোযোগ রিজওয়ানের, ‘নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে আমাদের কোনো শঙ্কা নেই। অবশ্যই ভালো করব। আমরা হয়ত নিজেদের সামর্থ্য (ত্রিদেশীয়) অনুযায়ী খেলতে পারিনি। তারপরও আমি বলতে চাই, এই টুর্নামেন্টটি আমরা দেশের জন্য, দেশের ক্রিকেটপাগল মানুষের জন্য জিততে চাই।’

কয়েক দিন আগে নিউজিল্যান্ডের কাছে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে হেরেছে পাকিস্তান। সেই দলের বিপক্ষেই আজ উদ্বোধনী ম্যাচে তারা মুখোমুখি হবে। পাকিস্তানের জন্য একটা সুখবর হলো, তাদের তারকা পেসার হারিস রউফ ফিট হয়ে উঠেছেন।

ফুরফুরে মেজাজে আছে কিউইরা। ত্রিদেশীয় সিরিজের সব ম্যাচ জিতে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে তারা। গতকাল দলটির সিনিয়র ক্রিকেটার টম লাথামের কণ্ঠে সেটাই ফুটে উঠল, ‘আমরা খুবই ভাগ্যবান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা এখানে আছি। আর গত তিন বছর ধরেই আমরা নিয়মিত পাকিস্তান সফর করছি। যদিও আগামীকাল (আজ) নতুন ম্যাচ এবং পিচও একেবারে নতুন। তাই কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়াই আমাদের চ্যালেঞ্জ।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ক স ত ন ক র ক ট দল র জওয় ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রিকেট ভালোবাসা বিশ্বকে দেখাতে চায় পাকিস্তান

সময় বদলায়, তাকে যে বদলাতেই হয়। শুধু পরীক্ষা নয়, ধৈর্য আর সংযমের পরীক্ষা দিতে হয়। প্রায় তিন দশকের সেই পরীক্ষা শেষে আইসিসির এলিট টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হচ্ছে করাচিতে। ব্যাট-বলের এই উৎসব দেখতে অধীর হয়ে আছে সে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। তারা ক্রিকেট বিশ্বের সামনে নিজেদের ভালোবাসার নিবেদন দেখাতে চায়। আয়োজকরা প্রমাণ করতে চায়, ক্রিকেট সেখানে নিরাপদ।

সর্বশেষ ১৯৯৬ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল লাহোরে। তার পর ২০০৯ সালে লঙ্কান ক্রিকেট দলের বাসে বন্দুকধারীদের হামলা, আহত হয়েছিলেন ছয়জন; পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্ধকার যুগ শুরু তখন থেকেই।

‘আমাদের জন্য দুঃস্বপ্ন ছিল ২০০৯ সালের সেই ঘটনা। সে জন্য আমরা প্রায় ১০ বছর শাস্তি পেয়েছিলাম। কেউ আমাদের এখানে তখন খেলতে আসেনি। এবারের এই আসর সফলভাবে আয়োজন করে আমরা বিশ্ব ক্রিকেটের কাছে এই বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে চাই, আমাদের এখানে ক্রিকেট নিরাপদ। আমাদের মানুষ ক্রিকেট ভালোবাসে।’

রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এভাবেই নিজের কথাগুলো বলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক।

তাঁর মতো সাবেকদের অনেকেই এই আসরটি ঘিরে অধীর হয়ে আছেন। ‘পাকিস্তানের ক্রিকেট স্বাভাবিক করতে এই আসরটি আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। অনেক বছর ধরে প্রশাসনিক কাজের সফলতায় এই আসরটি পেয়েছি আমরা। এখন বিশ্ব ক্রিকেটের কাছে আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরার সময়।’ এএফপিতে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি বর্ণনা করেন রমিজ রাজা।

ইনজামাম জানান, সে দেশের স্কুল, কলেজ, দোকানপাট, অফিস-আদালতে এখন শুধু এই টুর্নামেন্টের চর্চা চলছে। তবে ভারত এই আসরের ম্যাচগুলো খেলবে দুবাইয়ে। ঠিক এখানেই আফসোস সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের।

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের দর্শকরা তাদের মাঠে তারকা ক্রিকেটারদের খেলা দেখতে চায়। ভারত এখানে এলে ভালো হতো।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্রিকেট ভালোবাসা বিশ্বকে দেখাতে চায় পাকিস্তান