মাছ ছাড়া বাঙালির চলে না। দামের কারণে অনেকেরই ইলিশ–রুই-কাতলা খুব একটা পাতে তোলা হয়ে ওঠে না। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত অনেক পরিবারের ভরসা তাই পাঙাশ। কম দাম হওয়ার কারণে অনেকেই মনে করেন যে পাঙাশ মাছে তেমন কোনো পুষ্টি উপাদান নেই। তাই এই মাছ খেলে তেমন কোনো উপকারিতাও পাওয়া যাবে না। কিন্তু অনেকেই জানেন না, ১০০ গ্রাম কাঁটা ছাড়া পাঙাশ মাছে আছে ৬৭৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১৫ গ্রাম আমিষ, ১১ গ্রাম ফ্যাট, ১৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২৯ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম, ১৩০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১ দশমিক ৮৫ মিলিগ্রাম জিংকসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান।

পাঙাশ মাছের উপকারিতা

১.

পাঙাশ মাছ ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ভালো উৎস হওয়ার কারণে দেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ঘাটতি পূরণ করে দাঁত ও হাড়ের গঠন মজবুত রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. পাঙাশ মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি আসিড ইপিএ ও ডিএইচএ পাওয়া যায়। এসব উপাদান স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে, স্মরণশক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় ঠিক রাখতেও এগুলো কার্যকর।

আরও পড়ুনপেট ফাঁপা কমাতে যে ৫টি ফল খাবেন০৭ জানুয়ারি ২০২৫

৩. মাছের ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, যা অস্টিওপোরোসিস ও এথেরোস্ক্লেরোসিসের বিকাশকে প্রতিহত করে।

৪. খনিজ উপাদানগুলো মস্তিষ্কের কার্যকলাপ স্বাভাবিক করে। স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।

৫. এ ছাড়া পাঙাশ মাছে থাকা জৈব অ্যাসিড দৃষ্টিশক্তি শক্তিশালী করতে, নখের ভঙ্গুরতা দূর করতে এবং চুল পড়া রোধে সাহায্য করে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো ফ্রি র‍্যাডিকেলকে প্রতিহত করে প্রাথমিক টিস্যু ও কোষের বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।

৬. আমিষে ২০ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, এর মধ্যে কিছু অত্যাবশ্যকীয়। খাবারে কোন অ্যামাইনো অ্যাসিড কতটুকু আছে, তার ওপর নির্ভর করে আমিষের গুণমান। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বাঙালিরা যেসব মাছ খেয়ে থাকে, তার মধ্যে পাঙাশ মাছে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড বেশি পাওয়া যায়। এরপর তেলাপিয়া ও রুই মাছ। এক গ্রাম আমিষে ২৭৭ মিলিগ্রাম অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকা উচিত। সেখানে পাঙাশে আছে ৪৩০ মিলিগ্রাম। তাই পাঙাশ মাছ গ্রহণ করার মাধ্যমে দেহে আমিষের চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব।

আরও পড়ুনকেন খাবেন সকালে এই পাঁচ পানির যেকোনো একটি ২১ জানুয়ারি ২০২৫সাবধানতা

বেশির ভাগ পাঙাশ মাছ এখন কৃত্রিমভাবে পুকুরে চাষ করা হয়। চাষের সময় যে খাবার দেওয়া হয়, সেগুলোর কারণে পাঙাশ মাছ ক্ষতিকর হতে পারে। পাঙাশ মাছ সংরক্ষণের জন্য প্রচুর প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। কীটনাশক বা রাসায়নিক যেসব পদার্থ ব্যবহার করা হয়, তা দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই তাজা মাছের বদলে সংরক্ষিত পাঙাশ মাছ গ্রহণের ফলে দেখা দিতে পারে শারীরিক জটিলতা।

আবার পাঙাশ মাছে যেহেতু অতিরিক্ত তেল থাকে, সে জন্য অতিরিক্ত গ্রহণে রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে বা দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা।

রান্নার পদ্ধতি স্বাস্থ্যসম্মত না হলে এই মাছ গ্রহণের ফলে শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুনমুক্তাগাছার জমিদারবাড়িতে কীভাবে ইলিশ মাছ কাটা হতো জানেন?৩১ আগস্ট ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য ম ইন উপ দ ন গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলা একাডেমিতে চলছে সাত দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ও বাংলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে বাংলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী ‘বৈশাখী মেলা-১৪৩২’।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম।

বৈশাখী মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “পাহাড় থেকে সমতল, সারা দেশে আজ নববর্ষের আমেজ। বাংলাদেশের মানুষ আজ এক হয়ে পালন করছে নববর্ষ। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলছে সারা দেশে। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে ফ্যাসিবাদোত্তর বাংলাদেশে দাঁড়িয়েছি। আমরা এই উৎসব ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।”

উপদেষ্টা আরো বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, হস্তশিল্প, খাদ্যজাত পণ্যের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উদ্যোক্তারা এই মেলার মাধ্যমে এসকল পণ্য বিদেশে রপ্তানিযোগ্য করে তুলবে। উদ্যোক্তারা যেভাবে ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে আরেকটি শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাবে দেশ।” 

বাংলা একাডেমি আয়োজিত এই মেলা উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “আমরা ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। আজকের র‌্যালিতে সব জাতিগোষ্ঠী একসাথে অংশগ্রহণ করেছে এবং একসাথে আনন্দ করছে। এটা একটা অন্তর্ভূক্তিমূলক ও রঙিন উৎসব। মেলা এমন একটা জায়গা যেখানে দুইপক্ষ খুশি থাকে। একজন ক্রয় করে এবং অন্যজন বিক্রি করে। মেলার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে।”

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, “বৈশাখী মেলার আয়োজন আমাদের জন্য একটা ভালো উদ্যোগ। বাংলা নববর্ষ আমরা উদ্‌যাপন করবো জাতীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে। আমাদের উজ্জ্বল অতীত ছিল, সমৃদ্ধ আগামী গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আমাদের পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন করতে হবে।”

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান।

ঢাকা/এএএম/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ