কুষ্টিয়ায় গড়াই নদের বালুঘাটে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে বালুঘাটে থাকা এক ব্যক্তি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রাতেই তাঁকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া বালুর ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সবুজ আলী (৪২) ওই ঘাটের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। তিনি কুষ্টিয়া পৌর এলাকার ঢাকা-মিনা এলাকার শহিদুল বিশ্বাসের ছেলে।

এদিকে বালুঘাটে হামলা ও গুলিবর্ষণের একটি ভিডিও রাতেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কুমারখালী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

বালুঘাটের ইজারা নেওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহিদুল ইসলাম জানান, কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকায় কয়া-রায়ডাঙ্গা এলাকায় গড়াই নদে খনন করা বালুর স্তূপ অপসারণের জন্য ইজারা নেয় তাঁর প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ৩০ জুন অনুমোদন পেলেও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেন। যত দিন অপসারণ না হবে, তত দিন বালু তোলার কাজ চলবে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত সবুজ আলীর ভাষ্য, গতকাল রাত ১১টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে বালুর ঘাটে আসেন। তাঁদের সবার মুখে মুখোশ ছিল। ঘাটে এসেই তাঁরা তাঁর পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। তিন থেকে চারজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাঁরা এলোপাতাড়ি গুলিও ছোড়েন। ঘরে থাকা প্রায় দুই লাখ টাকা নিয়ে নেন তাঁরা।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বালুঘাটে দুটি ট্রাক বালু তোলার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। দুজন মুখোশধারী ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে সেখানে আসেন। কয়েক সেকেন্ড পর আরও কয়েকজন আসেন। একজনকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। দুজন বালুঘাটের অস্থায়ী একটি ছোট ঘরের ভেতর প্রবেশ করেন। এ সময় বালুঘাটে থাকা দুজন শ্রমিক দ্রুত হেঁটে চলে যান। কয়েক মিনিট পর অস্ত্রধারীরা গুলি করতে করতে সেখান থেকে চলে যান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী এক শ্রমিক বলেন, ‘মুখোশধারী তিনজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখেছি। তাঁদের চেনা যাচ্ছে না, তবে তাঁরা কাদের লোক হতে পারে, তা ধারণা করতে পারছি।’

কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোলায়মান শেখ বলেন, বালুর ঘাটে মুখোশধারীদের গুলিতে একজন আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বালুঘাটের এক ঠিকাদার বলেন, গত কয়েক মাস বালুঘাটে আতঙ্ক ছড়াতে ও নিয়ন্ত্রণ নিতে চরমপন্থী সংগঠনের লোকজন অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। কয়েক দিন আগে পাউবো কার্যালয় এলাকায় গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ছাড়া খোকসা জিলাপিতলা বালুঘাটে গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। পুরো গড়াই নদে কুষ্টিয়া অংশে চরমপন্থীদের তৎপরতা বেড়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিল-ঘুষি

নারায়ণগঞ্জ আদালতের এজলাসে প্রবেশমুখে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তাকে তোলা হয় বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান।

তিনি বলেন, হত্যা মামলাটিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থী আইনজীবীরা ‘আনিসুল হকের ফাঁসি’ চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে কিল-ঘুষি দেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এই সময় আনিসুল হকের মাথায় পুলিশের হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সাথে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতেও এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে চর-থাপ্পর দিতে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ