১৯৪৭ থেকে ১৯৫২: একুশের হয়ে ওঠা
Published: 19th, February 2025 GMT
১৯৪৭-এর ১৪ আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলো।...
সরকারের কাজকর্ম থেকে আমরা বুঝতে পারলাম, বাংলা ভাষার প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। সরকার ইংরেজির পাশাপাশি উর্দু ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়। মানি অর্ডার ফরম, পোস্টকার্ড, খাম ও কাগজের টাকার নোট থেকে সরকার বাংলা ভাষাকে বাদ দেয়। গণপরিষদের ভাষারূপে উর্দু ইংরেজির পাশাপাশি সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু গণপরিষদে ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবি অগ্রাহ্য হয়।
বাংলা ভাষার প্রতি সরকারের এসব অবজ্ঞার কারণে পূর্ববঙ্গের ছাত্ররা সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার দাবিকে বাস্তবায়িত করার জন্য এক সভায় মিলিত হয়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন।.
২২ মার্চ, ১৯৪৮–এ কার্জন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন সভা আহ্বান করা হয়েছে। জিন্নাহ সভার প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করবেন। আমি আগের বছর বিএ পাস করেছি। সনদ গ্রহণের জন্য কার্জন হলে সমাবর্তন সভায় যাই। যথারীতি সমাবর্তন সভা শুরু হলো। জিন্নাহ প্রধান অতিথির ভাষণের একপর্যায়ে তাঁর রেসকোর্স ময়দানের বক্তৃতার পুনরাবৃত্তি করে বললেন, ‘উর্দু, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বললাম, ‘নো, নো’। সভায় সনদ গ্রহণের জন্য আগত অন্যান্য ব্যক্তি আমার মতো একই ধ্বনি তুললেন, ‘নো, নো’। জিন্নাহ বিমর্ষ হয়ে গেলেন। ভাষা সম্পর্কে তিনি আর বক্তব্য বাড়ালেন না।
...
১৯৫০-এর কথা। আমি ফজলুল হক হলের পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে ব্যারাকে একটি চায়ের দোকানে বসে আছি। আমার পাশে টুলে বসা সেক্রেটারিয়েটের দুজন কর্মচারীর কথোপকথন আমার কানে ভেসে আসে। তাঁরা একজন আরেকজনকে বলছেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলন থেমে গেল, বাংলা আর রাষ্ট্রভাষা হচ্ছে না, উর্দুই রাষ্ট্রভাষা হয়ে যাবে। আমরা উর্দু পড়তে-লিখতে পারি না। উর্দু রাষ্ট্রভাষা হলে আমাদের কতই–না অসুবিধা হবে! কী আর করি! আমরা চাকরি করে খাই। আমরা কী করে আন্দোলন করি? আন্দোলনে গেলে সরকার আমাদের চাকরি খাবে। আন্দোলনে নামা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ছাত্ররা ছিল আশা-ভরসা। তারাও ঠান্ডা হয়ে গেল।’ এ কথাগুলো আমার পছন্দ হলো। কথাগুলো একেবারে সত্য, সমকালীন সমাজের জনমতের প্রতিধ্বনি। এই বর্ণনা আমার মনের মধ্যে গ্রথিত হয়ে গেল। সরকারি কর্মচারীর এই মূল্যবান বক্তব্য আমার ভবিষ্যৎ চলার পথে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে।
১৯৫১ সালের ১১ মার্চ পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে আমতলায় এক ছাত্রসভা চলছে। সভার এক কোণে বসে ছাত্রনেতাদের বক্তৃতা শুনছি। কোনো বক্তার বক্তৃতাই আমার ভালো লাগছে না। একপর্যায়ে আমি দাঁড়িয়ে সভার সভাপতিকে উদ্দেশ করে বললাম, ‘আমি কিছু বলতে চাই।’ সভাপতি আমাকে বলার অনুমতি দিলেন। সেক্রেটারিয়েটের সেই কর্মচারীর বক্তব্যের আলোকে আমি সভায় বক্তৃতা দিলাম, ‘এভাবে সভা করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা যাবে না। আপনারা আজ যা কিছু করছেন আর বলছেন, তা সবই আনুষ্ঠানিকতামাত্র। এতে কোনো কাজ হবে না। যদি বাংলা ভাষার দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তবে রাস্তায় আন্দোলনে নামুন। আন্দোলন করতে হলে চাই সংগঠন। আপনারা সংগঠন গড়ে তুলুন।’ আমার এই বক্তব্য শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া জাগাতে সমর্থ হলো। তারা করতালি দিয়ে আমার বক্তৃতাকে স্বাগত জানায়। উপস্থিত শ্রোতাদের চাপে সভার উদ্যোক্তারা তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। সভামঞ্চ থেকে শ্রোতাদের কাছে কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হলে দেখা গেল, তাতে আমাকে একজন সাধারণ সদস্য হিসেবেও রাখা হয়নি। ফলে সভায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সভার শ্রোতারা আমাকে সংগ্রাম কমিটিতে নেওয়ার জন্য দাবি তোলে। তাদের শান্ত করার জন্য কমিটির সদস্য হিসেবে আমাকে নেওয়া হয়। এতেও সভার শৃঙ্খলা ফিরে এল না। শ্রোতারা আমাকে কমিটির প্রধান কর্মকর্তারূপে পেতে চায়। তাদের দাবি অগ্রাহ্য করার মতো সাহস সেদিন ওই সভার কর্মকর্তাদের ছিল না। শ্রোতাদের চাপে সভার উদ্যোক্তারা আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক করেন।
আমি ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, কমিউনিস্ট পার্টি—কোনো দলেরই নই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রদের ওপরও আমার ব্যাপক কোনো প্রভাব নেই। এর ফল দাঁড়াল এই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির সব সদস্যই আমার সঙ্গে অসহযোগিতা করেন। মৌখিকভাবে আমি কয়েকবার সংগ্রাম কমিটির সভা আহ্বান করি। কোনো সদস্যই কোনো সভায় যোগদান করলেন না। এরপর সদস্যদের লিখিত নোটিশ দিয়ে সভা আহ্বান করি। তাতেও কোনো কাজ হলো না। কেউ সাড়া দিলেন না। কোনো সদস্যই সভায় উপস্থিত হলেন না। কমিটির কোনো ফান্ড নেই। ফান্ড ছাড়া কোনো সংগঠনের কাজ চালানো যায় না। এমনি পরিস্থিতিতে সংগ্রাম কমিটির অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন। আমি নিরাশ হলাম না। একদিন সংগ্রাম কমিটির নামে আমি নিজে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করি। প্রস্তাবটি হলো, ‘বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঢাকায় পতাকা দিবস উদ্যাপনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’
প্রস্তাবটি নিয়ে আমি অবজারভার অফিসে যাই। প্রস্তাবটি পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব জামাল জাহেদীর হাতে দিয়ে আমি তাঁকে সেটি ছাপানোর জন্য অনুরোধ জানাই। জাহেদী ভাই প্রস্তাবটি একবার পড়লেন। তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মিটিং ঠিক হয়েছে তো?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘জি, হ্যাঁ।’ সভা হয়নি, আহূত সভায় কমিটির কোনো সদস্যই যোগ দেননি। প্রস্তাবটি যাতে পত্রিকায় ছাপানো হয়, সে জন্য সভা হয়েছে বলে চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছিলাম। জাহেদী ভাই আমার অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন।
পরদিন প্রস্তাবটি বক্স করে অবজারভার-এর প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপানো হয়। পত্রিকায় সংবাদটি পাঠ করে আমি শাঁখারীবাজারে যাই। সেখানকার একটি দোকান থেকে কয়েকটি টিনের কৌটা কিনি। এরপর একটি প্রেসে যাই। প্রেসের অফিসে বসে একটুকরা সাদা কাগজে একটি ব্যাজের খসড়া তৈরি করলাম। কাগজে মোটা অক্ষরে লিখলাম, ‘বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে হবে’। নিচে লিখলাম, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি’। খসড়া ব্যাজটির ৫০০-৬০০ ছাপিয়ে দেওয়ার জন্য প্রেস ম্যানেজারকে অনুরোধ জানাই। তিনি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেগুলো ছাপিয়ে দেন। ব্যাজগুলো ছাপার খরচ পড়েছিল ৩০-৩৫ টাকার মতো। টিনের কৌটাগুলোর গায়ে বড় অক্ষরে লিখলাম, ‘বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য সবাই সাধ্যমতো সাহায্য করুন।’
১০-১৫ জন ছাত্রসমেত ব্যাজ ও কৌটাগুলো নিয়ে সেক্রেটারিয়েটের গেটে যাই। আমরা সেক্রেটারিয়েটের কর্মচারীদের ব্যাজ পরিয়ে দিয়ে আর্থিক সাহায্যের জন্য কৌটাগুলো তাঁদের সামনে তুলে ধরি। তাঁরা সবাই কৌটার ভেতরে টাকাপয়সা গুঁজে দিলেন। সেদিন সেক্রেটারিয়েটের কর্মচারীদের কাছ থেকে ৯০০ টাকার ওপরে সাহায্য পাই। সিকি, আধুলি, এক টাকা, এমনকি ৫ ও ১০ টাকার নোটও কৌটার ভেতরে পড়েছিল। নেতাদের সাহায্য ব্যতীত সাধারণ ছাত্রদের সাহায্য ও সহযোগিতায় ১৯৫০-এ এমনিভাবে আমি প্রথম পতাকা দিবস পালন করি। এই দিবস পালন করার ফলে আমি বহু কর্মী পেয়ে যাই এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম কমিটির ফান্ডও তৈরি হয়ে যায়। এবার আমি সম্পূর্ণ হতাশামুক্ত হয়ে ভাষা আন্দোলনকে সক্রিয় করে তোলার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করি।
পোস্টার করে পতাকা দিবসে অর্থ সংগ্রহের খবর ছাত্রদের জানিয়ে দিলাম। ১৯৫১ সালে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি’ বিরাটভাবে ১১ মার্চ পালন করে। অবজারভার পত্রিকায় ১২ মার্চ সংখ্যায় এ সংবাদ গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য গণপরিষদের সদস্যদের কাছে স্মারকলিপি পেশ করার সিদ্ধান্ত আমরা নিই। আমি নিজেই এটি লেখার কাজে হাত দিলাম। লিখে ফেলতে সমর্থও হলাম।
১১ এপ্রিল আমি স্মারকলিপি লিখেছিলাম। এতে আমরা বলেছিলাম, ‘বাংলা একটি সমৃদ্ধ ভাষা এবং পাকিস্তানের অধিকাংশ লোকের মাতৃভাষা। এই ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার মাধ্যমেই কেবল পাকিস্তানের ঐক্য রক্ষা করা সম্ভব। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ দেশের ছাত্রসমাজ ও জনগণ কখনো আন্দোলন থেকে ক্ষান্ত হবে না। আন্দোলন জয়যুক্ত হবেই। স্মারকলিপিকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আপনারা দেখবেন বলে আমরা আশা করি।’ গণপরিষদের সব সদস্যের কাছে এবং পাকিস্তানের সব পত্রিকা অফিসে এই স্মারকলিপির কপি ডাকযোগে পাঠানো হয়। এই স্মারকলিপি বিরাট আলোড়ন সৃষ্টি করে। দেশের উভয় অংশের বহু পত্রিকায় এই স্মারকলিপির সংবাদ ছাপানো হয়। সীমান্ত প্রদেশের দৈনিক খাইবার মেল সম্পাদকীয় লিখে আমাদের প্রচেষ্টাকে অভিনন্দন জানায়। পাকিস্তান টাইমস-এ এ স্মারকলিপি সমর্থন করে অনেক চিঠিপত্র প্রকাশিত হয়। এ-সংক্রান্ত যাবতীয় খবর আমরা পোস্টারে লিখে, দেয়ালে এঁটে তা ছাত্রদের জানিয়ে দিই। ছাত্রদের মধ্যে এতে বিরাট উৎসাহের সৃষ্টি হয়। অনেকে মনে করেন, ১৯৪৮ সালে মার্চের পর ১৯৫২ সালের জানুয়ারির আগপর্যন্ত ভাষার ব্যাপারে কোনো তৎপরতা ছিল না। তাঁদের এই ধারণা বাস্তবসম্মত নয়। ১৯৫০-৫১ সালে ভাষার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির ব্যাপক তৎপরতা ছিল।
আবদুল মতিনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গ র ম কম ট র স ম রকল প আম দ র ট র কর ত কর র সরক র গ রহণ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন সংবিধান করতে হবে। এ কারণে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর যৌক্তিক কারণ নেই। গণপরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদ সদস্যের কাজ একসঙ্গে যৌথভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।
শুক্রবার বিকেলে রংপুর জিলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবীদ, ছাত্র-জনতা, শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে এনসিপি।
এতে আখতার হোসেন বলেন, যে সংবিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, সেটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সংবিধানের এক তৃতীয়াংশকে পরবর্তীতে কোনও সংসদ সংশোধন করতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অর্গানের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে এমনভাবে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন প্রধানমন্ত্রী এ দেশে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সুযোগ পায়। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে দেশের শাসন কাঠামো, বিচার কাঠামো, পুলিশ প্রশাসন প্রত্যেক জায়গায় আমূল সংস্কার দরকার। সরকারের তরফ থেকে সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় আমরা সংহতি ব্যক্ত করেছি। দেশের গণহত্যার বিচার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয়। গণহত্যার বিচার না হলে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী শক্তি ভবিষ্যতে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশে আরেকবার গণহত্যা, খুন, রাহাজানির সুযোগ পেয়ে যাবে। দেশকে নিরাপদ করতে হলে চব্বিশের আন্দোলনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ব্যক্তি ও দল হিসেবে বিচার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বার্তা নিয়ে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্পকে স্বনির্ভর করতে হবে। প্রত্যেক সেক্টরকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হলে দেশের মানুষের মুক্তির অর্জন সম্ভব। দেশে কাঠামো উন্নয়ন নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, জনগণের সেবায় তারা সচেষ্ট থাকবে এমন দেশ বিনির্মাণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, আসাদুল্লাহ গালিব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হাবিবুর রহমান প্রমুখ।