চীনে নিয়ন্ত্রিত এআই আনবে অ্যাপল
Published: 19th, February 2025 GMT
মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল চীনে নিয়ন্ত্রিত বা সেন্সরড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সেবা প্রকাশ করতে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবার সঙ্গে কাজ করবে বলে জানা গেছে। অ্যাপল এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে আলিবাবা ও বাইডুর মতো চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় চীনে অ্যাপল এআইয়ের ফিচার নিয়ে একটি সেন্সর সংস্করণ প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
মে মাসের শুরুর দিকে চীনের জন্য অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম চালু করা হতে পারে। চীনা জায়ান্ট আলিবাবার সঙ্গে এআই নিয়ে কাজের কথা প্রকাশের পরে অ্যাপলের শেয়ারের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। অ্যাপলের এআই মডেল যেন চীনা সেন্সরশিপ ও চীনের আইনকানুন মেনে চলার জন্য ফিল্টার করে তথ্য সরবরাহ করে, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে অ্যাপল। এই নিয়ন্ত্রিত এআই তৈরির জন্য অ্যাপল আলিবাবা ও বাইডুর ওপর নির্ভর করছে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকেরা চীনের বাজারে বিভিন্ন ফোন ব্র্যান্ডের প্রতিযোগিতায় অ্যাপলের পতন খেয়াল করছেন। অ্যাপলের আইফোন বিক্রি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ হ্রাস পেয়েছে। এর পেছনে অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হিসেবে এআই প্রযুক্তি গ্রহণে অ্যাপলের পিছিয়ে পড়াকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অ্যাপল বেশ পেছনে বলা যায়। বর্তমানে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম যুক্তরাষ্ট্রে তিন ধরনের এআই সেবা দিচ্ছে। অ্যাপলের নিজস্ব এআই সেবাসহ কোম্পানির ইন্টারনেট সার্ভারের মাধ্যমে এআই সেবা ও ওপেনএআইয়ের বিভিন্ন টুল ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত আছে।
চীনে আইফোন বিক্রির জন্য এআই ফিচারকে গুরুত্ব দিয়ে আলিবাবার দ্বারস্থ হচ্ছে অ্যাপল। চীনা সরকারের আইনকানুন মানতেই এমন পথে পা রাখছে অ্যাপল। চীনে নিজেদের ব্যবসা ও বাজার ধরে রাখার জন্য বেশ আইনকানুন মেনে চলে অ্যাপল। গত বছর চীনের দাবি মেনে নিয়ে অ্যাপল অ্যাপস্টোর থেকে মেটার থ্রেড অ্যাপের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল মেসেজিং অ্যাপ সরিয়ে নেয়। অ্যাপলের ভাষ্যে, আমরা যেসব দেশে কাজ করি, সেখানে আইন মেনে চলতে বাধ্য। আমরা অসম্মতি জানালেও আইন মানি। চীনা নিয়ম পালনের ক্ষেত্রে অ্যাপলের সঙ্গে চীনের গভীর সম্পর্ককে প্রকাশ করছে বলে বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি দপ্তরে বেড়েছে বাংলা ভাষার ব্যবহার
সরকারি দপ্তরে নথিপত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার বেড়েছে। অধিকাংশ আইন বাংলায় করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায়ও দেওয়া হয়। তবে সেই তুলনায় আদালতে বিশেষ করে উচ্চ আদালতের বেশির ভাগ রায় ও আদেশ এখনো ইংরেজিতে লেখা হয়। বাংলা ভাষার ব্যবহারে পিছিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও। সাইন বোর্ডে এখনো ইংরেজির ব্যবহার দেখা যায়।
দেশের সর্বত্র বাংলা ভাষা চালুর লক্ষ্যে প্রায় ৩৮ বছর আগে ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ প্রণয়ন করা হয় ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’। এতে বলা হয়, ‘এই আইন প্রবর্তনের পর বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারি অফিস-আদালত, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যতীত অন্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন সরকারি নথিপত্র, চিঠি, প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য নথি বাংলায় লেখা হচ্ছে। পুরোনো অনেক আইন ইংরেজিতে থাকলেও নতুন আইনকানুন সব বাংলায় লেখা হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব আইন ইংরেজিতে ছিল, সেগুলোও পর্যায়ক্রমে বাংলায় করা হচ্ছে।এই আইনে আরও বলা হয়, কোনো কর্মস্থলে যদি কোনো ব্যক্তি বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় আবেদন বা আপিল করেন, তাহলে সেটি বেআইনি ও অকার্যকর বলে গণ্য হবে। শুধু তা–ই নয়, কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি এই আইন অমান্য করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন সরকারি নথিপত্র, চিঠি, প্রজ্ঞাপন ও অন্যান্য নথি বাংলায় লেখা হচ্ছে। পুরোনো অনেক আইন ইংরেজিতে থাকলেও নতুন আইনকানুন সব বাংলায় লেখা হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব আইন ইংরেজিতে ছিল, সেগুলোও পর্যায়ক্রমে বাংলায় করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগের অধীনে বাংলা ভাষা বাস্তবায়নসংক্রান্ত একটি অধিশাখা আছে। এই শাখার কর্মকর্তারা জানান, অধিকাংশ আইন বাংলায় করা হয়েছে। তাঁরা মূলত আইনের প্রমিতকরণের কাজটি করে দেন। এ ছাড়া সরকারি কাজে বাংলা ভাষা সহজ করে ব্যবহারের জন্য এই দপ্তর থেকে কয়েকটি পুস্তিকা বের করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের এই বিভাগ থেকে আইনকানুনগুলো প্রমিতকরণের কাজটি করা হয়। ইতিমধ্যে অধিকাংশ আইন বাংলায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিজেদের মাতৃভাষায় তথ্য পাওয়া জনগণের অধিকার। তাই এটি সর্বস্তরে নিশ্চিত করতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা যায়, সেই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে চাকরিজীবীদের বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাতেও যাতে দক্ষতা গড়ে ওঠে, সে বিষয়ে ভাষানীতি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।