মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল চীনে নিয়ন্ত্রিত বা সেন্সরড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সেবা প্রকাশ করতে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবার সঙ্গে কাজ করবে বলে জানা গেছে। অ্যাপল এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে আলিবাবা ও বাইডুর মতো চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় চীনে অ্যাপল এআইয়ের ফিচার নিয়ে একটি সেন্সর সংস্করণ প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

মে মাসের শুরুর দিকে চীনের জন্য অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম চালু করা হতে পারে। চীনা জায়ান্ট আলিবাবার সঙ্গে এআই নিয়ে কাজের কথা প্রকাশের পরে অ্যাপলের শেয়ারের দাম প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে। অ্যাপলের এআই মডেল যেন চীনা সেন্সরশিপ ও চীনের আইনকানুন মেনে চলার জন্য ফিল্টার করে তথ্য সরবরাহ করে, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে অ্যাপল। এই নিয়ন্ত্রিত এআই তৈরির জন্য অ্যাপল আলিবাবা ও বাইডুর ওপর নির্ভর করছে বলে জানা গেছে।

বিশ্লেষকেরা চীনের বাজারে বিভিন্ন ফোন ব্র্যান্ডের প্রতিযোগিতায় অ্যাপলের পতন খেয়াল করছেন। অ্যাপলের আইফোন বিক্রি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ হ্রাস পেয়েছে। এর পেছনে অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হিসেবে এআই প্রযুক্তি গ্রহণে অ্যাপলের পিছিয়ে পড়াকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অ্যাপল বেশ পেছনে বলা যায়। বর্তমানে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম যুক্তরাষ্ট্রে তিন ধরনের এআই সেবা দিচ্ছে। অ্যাপলের নিজস্ব এআই সেবাসহ কোম্পানির ইন্টারনেট সার্ভারের মাধ্যমে এআই সেবা ও ওপেনএআইয়ের বিভিন্ন টুল ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত আছে।

চীনে আইফোন বিক্রির জন্য এআই ফিচারকে গুরুত্ব দিয়ে আলিবাবার দ্বারস্থ হচ্ছে অ্যাপল। চীনা সরকারের আইনকানুন মানতেই এমন পথে পা রাখছে অ্যাপল। চীনে নিজেদের ব্যবসা ও বাজার ধরে রাখার জন্য বেশ আইনকানুন মেনে চলে অ্যাপল। গত বছর চীনের দাবি মেনে নিয়ে অ্যাপল অ্যাপস্টোর থেকে মেটার থ্রেড অ্যাপের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল মেসেজিং অ্যাপ সরিয়ে নেয়। অ্যাপলের ভাষ্যে, আমরা যেসব দেশে কাজ করি, সেখানে আইন মেনে চলতে বাধ্য। আমরা অসম্মতি জানালেও আইন মানি। চীনা নিয়ম পালনের ক্ষেত্রে অ্যাপলের সঙ্গে চীনের গভীর সম্পর্ককে প্রকাশ করছে বলে বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য আল ব ব

এছাড়াও পড়ুন:

পলাতক আ.লীগ নেতা হলেন বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি

খুলনার দৌলতপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোহাম্মদ আলীকে মনোনীত করেছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। গত ৯ এপ্রিল তাকে সভাপতি করে ৪ সদস্যের একটি এডহক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

শেখ মোহাম্মদ আলী খুলনার দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অপসারিত কাউন্সিলর। ইতঃপূর্বে তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে বিএনপি কার্যালয়ে ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তিনি পলাতক রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত ৭ মার্চ সভাপতি পদে ৩ জনের নাম প্রস্তাব করেছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অন্য দুইজন হলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সামসুল আলম ও ব্যাংকার রেজাউল ইসলাম। এরমধ্যে বোর্ড থেকে মোহাম্মদ আলীকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়।

পলাতক ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করা প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয় থেকে ৩ জনের নাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হয়ে বোর্ডে আসে। সাধারণত তালিকার প্রথমজনকে মনোনীত করা হয়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথ্য গোপন করেছেন বলে ধারণা করছি। এখন মামলার পলাতক আসামির নাম কীভাবে এক নম্বরে আসলো-এটা আমরা তদন্ত করে দেখবো। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করবো।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, মোহাম্মদ আলী প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, কেসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, দৌলতপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিবসহ অসংখ্য সংগঠনে জড়িত ছিলেন। বিদ্যালয়ে তিনি সময় দিতেন খুবই কম। এই সুযোগে আর্থিক নানা অনিয়ম সংগঠিত হয়। ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর নেন। তার সময়ে হওয়া অনিয়ম ধামাচাপা দিতেই তদবির করে তিনি সভাপতি হয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, বিদ্যালয়ে আর্থিক কোনো অনিয়ম হয়নি। স্কুলটি আমার হাতে তৈরি, এজন্য শিক্ষক ও এলাকাবাসী মিলেই আমার নাম দিয়েছে। আমি সভাপতি হওয়ায় অনেকে ক্ষেপে গেছে। তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে বিভিন্ন কিছু শুনেছি। আমি খোঁজ নেইনি, জামিন বা নকলও তুলতে যাইনি।

বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক হওয়ায় মোহাম্মদ আলীর নাম দেওয়া হয়। এর বেশিকিছু তিনি বলতে চাননি।

নগরীর খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শেখ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় দুটি মামলা রয়েছে। একাধিকবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ