খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার রায় আজ
Published: 19th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
বহুল আলোচিত ১৭ বছর আগে দায়ের করা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা আজ। এ রায়ের জন্য আজকের দিনটি (১৯ ফেব্রুয়ারি) ধার্য রয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করবেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে রায় ঘোষণা হতে পারে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম আসামিপক্ষের আত্মপক্ষ শুনানি ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এই তারিখ ঠিক করেন। অভিযোগ গঠনের পর মামলার ৬৮ সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম। পরের বছর ২০০৮ সালের ৫ মে যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়, তাতে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।
এরপর গত বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এদের মধ্যে তিন জন পলাতক।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এবং বাপেক্সের সাবেক সচিব মো.
এনজে
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
ভোগান্তি লাঘবে ব্যবস্থা লউন
গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং স্বাভাবিক ঘটনা হইলেও এইবার উহা অস্বাভাবিক হারে দেখা দিবার আশঙ্কা তৈয়ার হইয়াছে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ সংকটে জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হইবার কারণে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করিতে পারে। বিশেষত আসন্ন রমজান মাসে গরম বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাইবে। তৎসহিত সেচ মৌসুম যুক্ত করিলে ধারণা করা কঠিন নহে, মার্চ-এপ্রিল হইতে বিদ্যুতের চাহিদা হইবে দেড় গুণ। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিলেও উহা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নহে।
বিশেষ করিয়া অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে বেসরকারি খাত হইতে বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি। কিন্তু ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে সরকারের বিপুল ঋণ রহিয়াছে। সেই কারণে অর্থ সংকটে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা প্রাথমিক জ্বালানি ফার্নেস অয়েল ও কয়লা আমদানিতে হোঁচট খাইতেছে; গ্যাস খাতের পরিস্থিতিও তথৈবচ। বকেয়া ও ডলার সংকটে এলএনজি আমদানি ব্যাহত হইতে পারে। অন্যদিকে দেশীয় উৎস হইতেও গ্যাসের জোগান হ্রাস পাইতেছে। সকল কিছু মিলাইয়া এইবার গরমে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন যে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়িবে, উহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না।
ইহা স্পষ্ট, সরকার জ্বালানি সাশ্রয় নীতির উপর গুরুত্ব দিয়াছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ইতোমধ্যে সতর্ক করিয়াছেন, আগামী গ্রীষ্ম মৌসুমে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র-এসি ব্যবহার করিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, তৎসহিত আইনগত ব্যবস্থাও লওয়া হইবে। সরকারের হিসাব অনুসারে, এসির কারণে প্রায় চার সহস্র মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হইয়া থাকে, যথায় উহার তাপমাত্রা ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ব্যবহার করিলে অন্তত দুই সহস্র মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব হইবে। এই লক্ষ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করিবেন, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা মসজিদের ইমামদের অনুরোধ করিবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব সচিবালয়সহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরে এই নীতি কার্যকর করিবেন।
আমরা মনে করি, জ্বালানি সাশ্রয়ের এই নীতি নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী এবং মানুষ যাহাতে এই ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকে তজ্জন্য বিদ্যুৎ অপচয় রোধেও বৎসরব্যাপী সরকারকে প্রচার-প্রচারণা চালাইতে হইবে; কেবল জ্বালানি সাশ্রয়ের নীতি গ্রহণে বিদ্যুতের সংকট কাটিবে না। রমজান মাস হইতে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নাই। জ্বালানি উপদেষ্টা সরকারের আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করিয়াছেন বটে, তবে এই লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কার্যকর ভূমিকা রাখিবে বলিয়াই আমাদের বিশ্বাস। ইতিপূর্বে আমরা দেখিয়াছি, গ্রামে ভয়াবহ লোডশেডিং হইলেও শহরবাসী বেশি সুবিধা ভোগ করিত। এইবার সরকার শহর ও গ্রামে সমান হারে এই লোডশেডিং বণ্টন করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছে। আমরা চাই, এই ক্ষেত্রে রুটিন করা হউক; কোথায় কখন বিদ্যুৎ যাইবে সেইভাবে রুটিন মানিলে উহাতে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা হ্রাস পাইবে।
অস্বীকার করা যাইবে না, গত সরকারের জ্বালানি খাতের ভুল নীতির প্রভাব অন্তর্বর্তী সরকারের উপরেও পড়িয়াছে। জ্বালানি খাতের নিরাপত্তায় দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করিবার বিকল্প নেই। কিন্তু আসন্ন রমজান মাস ও সেচ মৌসুমের কথা চিন্তা করিয়া সরকারকে আপাত ব্যবস্থারূপে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করিতে জ্বালানি আমদানি করিতেই হইবে। মনে রাখিতে হইবে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি না করিলে শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হইবে। তজ্জন্য জ্বালানি চাহিদার আলোকে জরুরি ভিত্তিতে জোগান দিতে সরকারকে সচেষ্ট হইতে হইবে। ইহাকে অগ্রাধিকার দিয়া এখনই ব্যবস্থা লওয়া জরুরি।