দেশের বাজারে জুতার নতুন ব্র্যান্ড আনছে টি কে গ্রুপ
Published: 19th, February 2025 GMT
১০ বছরের বেশি সময় ধরে জাপানে চামড়ার জুতা রপ্তানি করছে চট্টগ্রামের টি কে ফুটওয়্যার। জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে মাসে তারা ১৫-২০ হাজার জোড়া চামড়ার জুতা রপ্তানি করছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে নজর দিচ্ছে টি কে গ্রুপ। এ জন্য গঠন করা হয়েছে রিফ ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদারগুডস নামে নতুন কোম্পানি। এই কোম্পানির অধীনে দেশের বাজারে রিফ ব্র্যান্ডের চামড়ার জুতা বিক্রি করবে তারা।
সে জন্য গ্রুপটির পক্ষ থেকে আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনীপাড়ায় বিক্রয়কেন্দ্র চালু করতে যাচ্ছে। ৯৫০ বর্গফুট আয়তনের এই বিক্রয়কেন্দ্রে নারী, পুরুষ ও বাচ্চাদের জুতা পাওয়া যাবে।
জানা যায়, দেশের বাজারে জুতার ব্র্যান্ড চালুর অংশ হিসেবে গত বছর চট্টগ্রামের চান্দগাঁও ও কালুরঘাট এলাকায় দুটি বিক্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়। সেখানে ভালো সাড়া পাওয়ায় নতুন করে তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র চালুর উদ্যোগ নেয় তারা। তার মধ্যে একটি আজ ঢাকায় চালু হচ্ছে। তারপরই চট্টগ্রাম শপিং কমপ্লেক্স এবং নাসিরাবাদে আরও দুটি বিক্রয়কেন্দ্র চালু করা হবে।
আমরা পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় বাজারে জুতার ব্যবসা শুরু করেছি। ভালো সাড়া পেলে আরও বড় আকারে এ ব্যবসা সম্প্রসারণে যাবমোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার, পরিচালক, টি কে গ্রুপচামড়ার ব্যবসায় রিফ লেদারের অভিজ্ঞতা তিন দশকের। ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায় ট্যানারি স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি। সেই কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করা চামড়া বিদেশে রপ্তানি হয়। রিফ লেদার ২০১৯ সালে কাঁচা চামড়া থেকে ফিনিশড ধাপ পর্যন্ত কাজের জন্য বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ পায়। বাংলাদেশের সাতটি এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া কারখানার একটি রিফ লেদার।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে রিফ লেদার ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ বর্গফুট চামড়া রপ্তানি করে। তাদের ৯-১০টি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ ইউরোপের। গত বছর তারা ১০০ কোটি টাকার চামড়া রপ্তানি করে।
জুতার দেশীয় বাজার
ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রুচির পরিবর্তন ও মানের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়ায় ব্র্যান্ডের জুতার প্রতি ঝুঁকছে দেশের মানুষ। সে জন্য ব্র্যান্ডের জুতার বিক্রি প্রতিবছর ১২-১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তাই নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় নামছে। এ ক্ষেত্রে সর্বশেষ নাম রিফ ফুটওয়্যার।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্যানুযায়ী, দেশে বার্ষিক জুতার চাহিদা ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটি জোড়া। চাহিদার ৪০ শতাংশ জুতা বিদেশ থেকে আমদানি হয়। সারা দেশে ছোট-বড় ৬ হাজার ২০০ জুতা ও চামড়াপণ্যের কারখানা রয়েছে। তার মধ্যে আড়াই হাজার জুতা তৈরির কারখানা।
জুতার ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, জুতার স্থানীয় বাজারের ৩০ শতাংশ ব্র্যান্ডের জুতার দখলে। বাকিটা নন-ব্র্যান্ড, আঞ্চলিক ব্র্যান্ড ও আমদানি করা জুতার দখলে। আগে জুতার ব্যবসা উৎসবকেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে সারা বছর কম-বেশি জুতা বিক্রি হয়। তারপরও সারা বছরের বিক্রির ২৫-৩০ শতাংশ হয়ে থাকে ঈদুল ফিতরে। ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে বাটা, অ্যাপেক্স ও লোটো।
রিফে থাকবে যেসব জুতা
রিফ ব্র্যান্ডে এখন কেবল চামড়ার জুতা পাওয়া যাবে। উচ্চ, মধ্যম ও সাশ্রয়ী দামের জুতা থাকবে। অধিকাংশ জুতা উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব রিফ লেদারের কারখানার চামড়া ব্যবহার করার কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, চট্টগ্রামের কালুরঘাটে অবস্থিত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান টি কে ফুটওয়্যারের কারখানার একটি ইউনিটে আপাতত স্থানীয় বাজারের জন্য জুতা তৈরি হচ্ছে।
জানতে চাইলে রিফ লেদারের পরিচালক মো.
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে দেশে যখন সয়াবিন তেল জনপ্রিয় হতে শুরু করে, তখন সয়াবিন তেল পরিশোধনের কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন দুই ভাই। সরকার থেকে লাইসেন্স বা নিবন্ধন নিয়ে কালুরঘাটে গড়ে তোলেন টি কে অয়েল রিফাইনারি। দেশে শিল্পায়ন শুরুর প্রথম ধাপে কারখানাটি সাফল্য এনে দেয় দুই ভাইকে। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ও মোহাম্মদ আবুল কালাম। দুই ভাইয়ের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি হয় টি কে (তৈয়ব-কালাম) গ্রুপ। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই গ্রুপে ভোজ্যতেল, ভোগ্যপণ্য, ঢেউটিন, পার্টিকেল বোর্ড, ট্যানারি, পেপারসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা রয়েছে।
টি কে গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় বাজারে জুতার ব্যবসা শুরু করেছি। ভালো সাড়া পেলে আরও বড় আকারে এ ব্যবসা সম্প্রসারণে যাব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ক রয়ক ন দ র চ ল জ ত র ব যবস ফ টওয় য র
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের পোশাকে কেন লেখা হলো ‘চোখ নামা’, ‘জবাব দে’, ‘শান্তি চাই’
ছবি: সুমন ইউসুফ