১. উদাসীনতা আপনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে

এটা কেউ স্বীকার করতে চান না, তবে আপনি যখন কারও প্রতি অতি আগ্রহ বা অত্যধিক মনোযোগ দেবেন, সে আপনাকে ততটাই কম গুরুত্ব দেবে। হোক তা প্রেম, বন্ধুত্ব, বা অন্য যেকোনো সম্পর্কে। ভাবুন তো, আপনি কি কখনো এমন কারও প্রতি কখনো আকৃষ্ট হয়েছেন, যিনি কিছুটা রহস্যাবৃত বা খানিকটা উদাসীন ছিলেন? এটা কোনো কাকতালীয় ব্যাপার নয় বরং এটিই মনস্তত্ত্ব। যখন আপনি কোনো কাজে কম আগ্রহ দেখান, তখন সবাই ভাবেন, আপনি আত্মনির্ভরশীল। এতে অন্যরা ধরেই নেন, আপনি এতটাই মূল্যবান যে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আপনি মরিয়া নন, যা আপনাকে অন্যদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে। তাই নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্নে মনোনিবেশ করুন, মানুষ নিজে থেকেই আপনার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে, মনে রাখবেন। যে জিনিসের সহজলভ্যতা কম, তার মূল্য বেশি।

২.

কোনো কিছু না বলেও জেতা যায়

আমরা প্রায়ই দেখি, কোনো বিতর্কে বা বাগ্‌বিতণ্ডায় মানুষ কথার পিঠে কথা বলে যান, আদতে কোনো সমাধান হয় না। কিন্তু অনেকেই জানেন না, সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হলো নীরবতা। তীব্র উত্তেজনার মুহূর্তে নীরবতা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ সময়, বিপরীত ব্যক্তি সেই শূন্যতা পূরণ করতে গিয়ে নিজের দুর্বল দিক প্রকাশ করে ফেলেন। তাই আবেগপ্রবণ মুহূর্তে প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে একটু থামুন। নীরবতাকে কাজে লাগান, এটি বিরোধী পক্ষকে অপ্রস্তুত করে এবং আপনাকে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ এনে দেয়।

আরও পড়ুন'আমি কারও সঙ্গে মিশতে পারি না, নারী-পুরুষ কারও চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারি না'১৫ মে ২০১৫৩. জানুন অপরাধবোধ কীভাবে আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করে

আপনি কি কখনো শুধু অপরাধবোধের কারণে কিছু করতে বাধ্য হয়েছেন? কারও কথা কানে তোলার আগে নিজের মনকে প্রশ্ন করুন। আপনি কি আদতে অপরাধ করেছেন? চতুর ব্যক্তিরা অপরাধবোধকে একটা দুর্বলতা হিসেবে ব্যবহার করেন। এর মাধ্যমে তাঁরা আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে চান। যদি কেউ আপনাকে বারবার মনে করিয়ে দেন যে তাঁরা আপনার জন্য কত কিছু করেছেন এবং তাঁরা সব সময় আপনাকেই নেতিবাচকভাবে দোষারোপ করেন, তাঁদের এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো জানতেও পারবেন না, অপরাধবোধ কীভাবে আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তাই অকারণে ক্ষমা চাওয়া বন্ধ করুন, এটি অন্যদের আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দেয়।

৪. দুর্বলতা দিয়ে নয়, নিজেকে বিচার করুন শক্তি দিয়ে

মানুষ সাধারণত আপনার শক্তির চেয়ে আপনার দুর্বলতাগুলো বেশি মনে রাখে। কারণ, বাস্তবতা হলো, দুর্বলতাগুলো সহজেই চোখে পড়ে এবং তা নিয়ে সমালোচনা করা যায়। তবে মূল বিষয় হলো আপনি কীভাবে আপনার দুর্বলতাগুলো সামলাচ্ছেন। নিজের অপূর্ণতাকে মেনে নিন; এতে নিন্দুকেরা আপনাকে সমালোচনা করে কাবু করতে পারবে না। অতিমাত্রায় নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টাও করবেন না; এতে দুর্বলতা প্রকাশ পায়। আত্মসচেতনতা অর্জন করুন, এটি আপনার শক্তিমত্তার প্রকাশ করে।

আরও পড়ুনদাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর কী করবেন, কী করবেন না১৮ আগস্ট ২০২৩৫. আত্মবিশ্বাসী হোন এবং নিজে তা বিশ্বাস করুন

আত্মবিশ্বাস মানে ভয় না থাকা নয়, বরং ভয়কে মোকাবিলা করা। আমরা অনেকেই অন্যে আমাদের সম্পর্কে কী ভাবে, তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি। কিন্তু নিজেকে আগে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন এবং ভাবুন, আপনি বিচলিত নন। প্রথমে এটি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো মনে হলেও ধীরে ধীরে এই বিশ্বাস বাস্তবে পরিণত হবে। সর্বদা নেতিবাচক চিন্তার পরিবর্তে নিরপেক্ষ থাকুন। ভুল হলে মনে রাখবেন, এখানেও আপনার শেখার সুযোগ আছে।

৬. নিজের সীমানা নিজেই ঠিক করুন

অন্তর্মুখী ব্যক্তিদের জন্য ‘না’ বলা বরাবরই কঠিন। একবার আপনি যদি কাউকে আপনার ব্যক্তিগত সীমা লঙ্ঘন করতে দেন, তারা বারবার সেটাই করবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি তাঁদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। কারণ, আপনি তাদের শিখিয়েছেন যে তারা যা করছে, তা ঠিক আছে। তাই জীবনে চলার ক্ষেত্রে আপসহীন হোন। ‘আমি এটা করতে পারব না’ বলাই যথেষ্ট, অতিরিক্ত ব্যাখ্যার দরকার নেই।

প্রতিদিনের সম্পর্ক, কাজ বা জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে এই মনস্তাত্ত্বিক কৌশলগুলো প্রয়োগ করা যায়, যা চিরাচরিত ধারণার বিপরীত মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তব জীবনে এসব দারুণ কার্যকর। মনে রাখবেন, কখনো কখনো সমাধান আমাদের ধারণার বিপরীত হতে পারে। আপনার মস্তিষ্ক সেভাবেই কাজ করবে, যেভাবে আপনি করতে বলবেন। তাই এসব কৌশল রপ্ত করুন, নির্ঝঞ্ঝাট থাকুন।

সূত্র: মিডিয়াম ডটকম

আরও পড়ুনএআই চ্যাটবটের কাছে মানসিক সমস্যা বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া কি ঠিক১৩ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র বলত দ র বল অপর ধ আপন ক আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৬ মাওবাদী গেরিলা নিহত

ভারতের ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে অন্তত ১৬ মাওবাদী গেরিলা নিহত হয়েছে। শনিবার সকালে সুকমা জেলায় এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে রাজ্য পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের (ডিআরজি) দুই সদস্য আহত হয়েছেন। খবর-এনডিটিভি

পুলিশ জানিয়েছে, সুকমা-দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানায় উপমপল্লি কেরলাপাল এলাকায় জঙ্গলে আশ্রয় নেয় মাওবাদীদের একদল সদস্য- এমন খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে সিআরপিএফ, ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) ও পুলিশের যৌথবাহিনী ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযানে নামে। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালানো হয়। 

পুলিশের বস্তার রেঞ্জের আইজিপি সুন্দারাজের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেখানে একটি জঙ্গলে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে দুইপক্ষের গোলাগুলি শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনী পরে মাওবাদীদের বিপুল অস্ত্রও জব্দ করেছে। এ নিয়ে চলতি বছর কেবল ছত্তিশগড়েই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৩২ মাওবাদী গেরিলা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে 

গত ১৯ মার্চ দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানার কাছে বীজাপুরের গঙ্গালুর থানা এলাকায় রাজ্য পুলিশের টাস্ক ফোর্স এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের গুলিতে ২৬ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। ওই অভিযানে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের এক জওয়ানেরও মৃত্যু হয়েছিল। 

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা রাজ্যে অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনী। এরই মধ্যেই সংঘর্ষে ২০০ এর বেশি মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে ওই তিন রাজ্যে। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়রাম ওরফে চলপতি। আত্মসমর্পণ করেছেন নিহত মাওবাদী নেতা মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির ভ্রাতৃবধূ বিমলা। তার স্বামী মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি ওরফে বিবেক ওরফে সোনু নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই এর (মাওবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ ‘মাওবাদীমুক্ত’ করার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ