বিয়েতে দাওয়াত পেলেন না ভাই, ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা
Published: 19th, February 2025 GMT
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় বিয়ের দাওয়াতকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কাজিকান্দি এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত সামসুল হক সরদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিনোদপুর এলাকায় দুটি পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। শুনেছি, দুই পক্ষের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। যেহেতু এটি পারিবারিক ঘটনা, তাই দু’পক্ষই থানায় এসেছেন। এখনও কোনো মামলা হয়নি, তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৮ ফেব্রুয়ারি ইমামুল হক সরদারের মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তিনি তাঁর ভাই আজিজুল সরদারের পরিবারকে দাওয়াত দেননি। প্রতিশোধ হিসেবে আজিজুল সরদারও তার ছেলের বিয়েতে ইমামুলের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানাননি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইমামুল সরদারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, রামদা, বাঁশ ও লাঠি নিয়ে আজিজুল সরদারের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, বাকিরা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গুরুতর আহত সামসুল হক সরদারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি আহতরা হলেন- আব্দুর রহমান কাজী (৫০), ইউপি সদস্য, ৫ নম্বর ওয়ার্ড, বিনোদপুর ইউনিয়ন, মনোয়ার কাজী (৩২), সাবেক ইউপি সদস্য, বোরহান কাজী (৫০) আজিজুল সরদার (৫০)।
আজিজুল সরদারের পক্ষের আহত ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান কাজী বলেন, ‘এনামুল তাঁর মেয়ের বিয়েতে আমাদের দাওয়াত দেয়নি। কিন্তু আমরা তাদের দাওয়াত দিতে চেয়েছিলাম। তবুও তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
তিনি বলেন, ‘এনামুল সরদার ও খলিল মাদবরের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন লোক আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের কয়েকজন কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করে।’
অন্যদিকে, এনামুল সরদারের বড় ভাই গুরুতর আহত সামসুল হক সরদার বলেন, ‘ওরা দু'জনই আমার ভাই। আমি কেন হামলা চালাব? আমি বিনোদপুরে ইউপি নির্বাচন করব, তাই এলাকায় গিয়েছিলাম। শুনতে পেলাম, আমার দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তখন আমি থামাতে গেলে আমার ওপর হামলা হয়। আমার মাথা ও হাতে আঘাত লেগেছে। আমার পক্ষ থেকে কোনো হামলা চালানো হয়নি।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.
তিনি বলেন, ‘আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত রয়েছে। মাথা, পিঠ, পা ও হাতে বেশি আঘাত পেয়েছেন। সবারই রক্তক্ষরণ হয়েছে। মূলত ধারালো অস্ত্র, ভোতা অস্ত্র ও লাঠির আঘাতে আহতদের শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এনামুল ও আজিজুলের মধ্যে জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধও রয়েছে, যা এই সংঘর্ষের একটি বড় কারণ হতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত ল সরদ র র আম দ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকে পোস্ট নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১৫
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর ও চাঁদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উত্তর চরআবাবিল ইউপির হারুনগন্জ বাজারের বটতলা এলাকায় ইউপি পরিষদের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রায়পুর ও হায়দরগন্জ ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।
জানা যায়, রায়পুরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
আহতদের মধ্যে বিএনপি নেতা লিটন হাওলাদার, মর্তুজা মাহি, জয়নাল, মো. হেলাল, মো. কাউছার, ইশা রুহুল্লা, মো. মামুন, কালাম বলি, এল এক্স সোহেল ও আল আমিন মামুনকে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর ও চাঁদপুর চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের রায়পুরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর চরআবাবিল ইউপির সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আল আমিন মামুন তার ফেসবুক ওয়ালে একই ইউনিয়ন সভাপতি আবদুল বাসেদ হাওলাদারকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য লিখেন। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাসেদ হাওলাদারের নাতি বিএনপির কর্মী মর্তুজা মাহি তার অনুসারীদের নিয়ে হায়দরগন্জ বাজারে বিক্ষোভ করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবস্থান নেন।
এসময় মাহির প্রতিপক্ষ সর্দার গোষ্ঠির উত্তর চরআবাবিল ইউপির সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আল আমিন মামুন, যুগ্ম আহবায়ক কালাম বলি ও এলএক্স সোহেলের নেতৃত্বে তাদের ২০-২৫ জন অনুসায়ী বিএনপির সভাপতি বাসেদ হাওলাদারের ছেলে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শক লিটন হাওলাদার, তার ছেলে যুবদল নেতা মর্তুজা মাহিসহ তার লোকজনের উপর হামলা করলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়।
এ ব্যাপারে রায়পুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সফিকুর রহমান ভুইয়া বলেন, “ফেসবুকে পোস্ট দেয়া নিয়ে 'উত্তর চরআবাবিল ইউপির বিএনপির আহবায়ক আবদুল বাসেদ হাওলাদারের পক্ষের এবং সর্দার গোষ্ঠির স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক আল আমিন মামুন ও কালাম বলির লোকদের মধ্যে মিছিল ও মারামারি হয়। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছি। প্রয়োজনে দুই গ্রুপকে নিয়ে আবার বসবো।”
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, “উত্তর চরআবাবিল ইউপির বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে হায়দরগন্জ বাজারে দুই গ্রুপের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেছে। তবে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/লিটন/টিপু