রেকর্ড মুনাফা ও লভ্যাংশের পরও কমেছে রবির দর
Published: 18th, February 2025 GMT
বড় ধরনের প্রবৃদ্ধিসহ রেকর্ড নিট মুনাফা এবং লভ্যাংশ ঘোষণার পরও মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবির শেয়ারদর না বেড়ে উল্টো কমেছে। অন্যদিকে রুগ্ণ ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড এবং বন্ধ থাকা এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল কোম্পানির দর সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবির শেয়ারদর ১০ পয়সা কমে সর্বশেষ ২৯ টাকা ৩০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। সাড়ে ৩২ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে ছিল লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে। অন্যদিকে পৌনে ১০ শতাংশ দর বেড়ে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শেয়ার সর্বশেষ ১০ টাকা ১০ পয়সায় এবং এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের দর সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়ে ১২ টাকা ৮০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে।
লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সকাল ১০টায় সোমবারের তুলনায় ১ টাকা ৪০ পয়সা বেড়ে ৩০ টাকা ৮০ পয়সায় রবির শেয়ার কেনাবেচা শুরু হয়, যা ছিল সোমবারের তুলনায় পৌনে ৫ শতাংশ বেশি। লেনদেনের প্রথম ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত বিক্রির চাপের তুলনায় ক্রেতাদের আগ্রহও বেশি ছিল। তবে শুরুর ওই দরে আর ফেরেনি শেয়ারটি। বরং লেনদেন সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির চাপ বৃদ্ধি পেলে দর কমতে থাকে। লেনদেনের দ্বিতীয়ার্ধে ছোট ছোট অঙ্কের শেয়ার ক্রয় বেশি হলেও তুলনামূলক বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রি বেশি দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্রোকারেজ হাউসের এমডি সমকালকে বলেন, গত বছর রবি ভালো মুনাফা করেছে, ভালো লভ্যাংশও ঘোষণা করবে– এমন গুঞ্জন গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শোনা যাচ্ছিল। এ কারণে রবির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল, কয়েক সপ্তাহ ধরে শেয়ারটি লেনদেনের শীর্ষ ২০ কোম্পানির তালিকায় ছিল। সোমবারের লভ্যাংশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগের ধারণা সত্যি হয়েছে। তবে এর প্রতিফলন শেয়ারদরে নেই।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত নভেম্বরের শুরুতে রবির শেয়ার ২৩ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ ৩০ টাকায় উঠেছিল। গতকাল সাকল্যে ১ কোটি ৮ লাখের বেশি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ছিল সাড়ে ৩২ কোটি টাকা। এ লেনদেনে গত আগস্টের পর সর্বোচ্চ।
এদিকে গতকাল বেশির ভাগ কোম্পানি শেয়ার দর হারিয়েছে। ১৮ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ছয়টির দর কমলেও ১১৭ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৯২টির দর কমেছে। এতে ডিএসইএক্স সূচক ৮ পয়েন্ট হারিয়ে ৫২০৩ পয়েন্টে নেমেছে। টাকার অঙ্কে লেনদেন ১৫৬ কোটি টাকা বেড়ে ৫৯৯ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা গত ৬ নভেম্বর বা প্রায় সাড়ে তিন মাসের সর্বোচ্চ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র পয়স য়
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা-পশ্চিম তীরে কেমন ছিলেন, জানালেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ২ ফিলিস্তিনি তরুণ
অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনে দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অর্ধেকের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে তারা। বিভিন্ন যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এসব যুদ্ধের সাক্ষী পুরো বিশ্ব। কোনো কোনো দেশ নীরব থেকেছে, কেউ আবার সরব হয়েছে, যেমন বাংলাদেশ।
কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ফিলিস্তিনি দুই তরুণ ইব্রাহিম কিসকো (২৩) ও আইজ্যাক এন নমুরা (২৩)। আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রাম অনুধাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তাঁরা। আইজ্যাকের বাড়ি দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে। আর ইব্রাহিমের বাড়ি গাজায়।
ইব্রাহিম কিসকো ও আইজ্যাক এন নমুরা—দুজনই বাংলাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করছেন। আইজ্যাক পড়ছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে আর ইব্রাহিম ঢাকা মেডিকেল কলেজে। তাঁরা দুজনেই চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে বৃত্তি পেয়ে তাঁরা বাংলাদেশে পড়তে আসেন। বাংলাদেশে এসে একে অপরকে চিনেছেন।
আলোচনা সভায় আইজ্যাক বলেন, ‘২০২১ সালে আমি যখন বাংলাদেশে আসি, তখন পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রায় ১০০ তল্লাশিচৌকি ছিল। সেখান থেকে শিশু, নারী, পুরুষদের হেনস্তা করত এবং তাঁদের ওপর নির্যাতন চালাত ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের ইচ্ছেমতো আমাদের ধরে কারাবন্দী করে রাখা হতো।’
ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অসংখ্য শিশু, নারী, পুরুষকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে—অভিযোগ এনে আইজ্যাক বলেন, ‘কারাগারে আমার ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তারা সেখানে অনাহারে দিন পার করছে। প্রতিনিয়ত নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব থেকে মুক্তি চাই। ইনশা আল্লাহ, একদিন মুক্ত হব।’
আলোচনা সভার আগে আইজ্যাক এন নমুরার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি জানান, ছেলেবেলায় মহাকাশচারী হতে চেয়েছিলেন। তাঁর পরিবারে ছয় ভাই ও পাঁচ বোন রয়েছে। তিনিই একমাত্র ফিলিস্তিন থেকে দূরে। তাঁর প্রিয় খাবার ‘মাকলুবা’ (বিরিয়ানির মতো একধরনের খাবার)। বাংলাদেশের তেহারি খেতে খুবই পছন্দ করেন। মিষ্টান্নের মধ্যে প্রিয় রসমালাই। পুরান ঢাকা ঘুরতে এবং পুরান ঢাকার খাবার খেতে ভালো লাগে তাঁর।
‘বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রাম অনুধাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কথা বলেন ফিলিস্তিনি তরুণ ইব্রাহিম কিসকো ও আইজ্যাক এন নমুরা