Samakal:
2025-04-14@03:42:32 GMT

শিশুর বই পড়ার অভ্যাস তৈরিতে

Published: 18th, February 2025 GMT

শিশুর বই পড়ার অভ্যাস তৈরিতে

এখনকার শিশুরা বই থেকে অনেকটাই দূরে সরে যাচ্ছে। তারা ঝুঁকে যাচ্ছে মোবাইল, ট্যাব কিংবা টেলিভিশনের প্রতি। এই আসক্তি তাদের বই পড়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত করছে। অথচ জ্ঞান অর্জন, কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশের জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুর মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
পরিবার থেকেই শুরু হোক বইয়ের প্রতি ভালোবাসা
শিশুর বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যদি মা-বাবা নিজেরাই বই পড়েন, শিশুও স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। শিশুকে গল্প পড়ে শোনানো, বই নিয়ে আলোচনা করা বা রাতে ঘুমানোর আগে গল্প বলা যেতে পারে। এসব ছোট ছোট অভ্যাস তার মনে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে সাহায্য করবে।
বই নির্বাচন হোক শিশুর বয়স ও রুচির ভিত্তিতে
প্রত্যেক শিশুর রুচি ও আগ্রহ ভিন্ন। তাই বই বাছাইয়ের সময় তার বয়স ও পছন্দের বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি। ছোটদের জন্য রঙিন ছবি ও সহজ ভাষার বই উপযুক্ত। বড় শিশুদের রূপকথা, কল্পকাহিনি, বিজ্ঞানভিত্তিক বই কিংবা ইতিহাসের গল্প তাদের মধ্যে কৌতূহল বাড়াতে পারে। বই নির্বাচন করার সময় শিশুকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিলে সে বইয়ের প্রতি আরও আগ্রহী হবে।
বইমেলা ও লাইব্রেরির প্রতি আগ্রহী করে তোলা
বইমেলা, লাইব্রেরি বা বইয়ের দোকানে নিয়ে গিয়ে শিশুকে নতুন বইয়ের জগৎ সম্পর্কে জানানো যেতে পারে। বইমেলায় ঘুরতে গেলে শিশুরা নানা ধরনের বই ও পছন্দের লেখকদের সঙ্গে পরিচিত হতে এবং বই কেনার আনন্দ উপভোগ করতে পারে। পাশাপাশি যদি পরিবারে একটি ছোট্ট বুকশেলফ রাখা হয়, তাহলে শিশুরা বই পড়ার প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হবে।
বইকে বিনোদনের অংশ করা
বর্তমান যুগে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। এটি যেন বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে না ফেলে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুকে বইকে বিনোদনের অংশ করতে গল্প বলা প্রতিযোগিতা, বই পড়ে তার গল্প বলার অভ্যাস তৈরি করা বা বইয়ের চরিত্র নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
কীভাবে বই পড়াকে উপভোগ্য করা যায়?
১.

গল্প বলা ও অভিনয়ের মাধ্যমে পড়ানো চরিত্রগুলোর সংলাপ অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে তারা আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে।
২. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুললে শিশু ধীরে ধীরে এটি উপভোগ করতে শুরু করবে।
৩. শিশু যদি বন্ধুর সঙ্গে বই আদান-প্রদান করে, তবে বই পড়ার আগ্রহ বাড়বে।
৪. শিশু যদি পড়ে একটি গল্প বলতে পারে বা গল্পের নৈতিক দিকগুলো বুঝিয়ে বলতে পারে, তবে তাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। এতে সে আরও বই পড়তে উৎসাহিত হবে। v

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে

কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ