আমরা সবাই চাই কাজে আরও দক্ষ, দ্রুত এবং সফল হতে। কীভাবে এটা সম্ভব? অনেকেই মনে করেন, শুধু বেশি সময় কাজ করলেই দক্ষতা বাড়ে। কিন্তু বাস্তবে এর চেয়ে বেশি কিছু প্রয়োজন। যেমন সঠিক পরিকল্পনা, সময় ব্যবস্থাপনা এবং কিছু ছোট ছোট অভ্যাস আপনার কর্মজীবনে আরও দক্ষ করে তুলতে পারে। আমাদের আজকের উপস্থাপনায় আমরা এমন কিছু প্রমাণিত উপায় নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনার কর্মদক্ষতা বাড়াতে আশাতীত সাহায্য করবে।   
১.

স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন   
স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা কর্মদক্ষতা বাড়ানোর প্রথম ধাপ। অনেক লক্ষ্য বা টার্গেট পয়েন্টে ফোকাস না করে কোনো একটা স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এটি আপনাকে ফোকাসড রাখবে এবং কাজের অগ্রগতি পরিমাপ করতে সাহায্য করবে।   
২. সময় ব্যবস্থাপনার ওপর ফোকাস করুন 
সময় ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়ানোর অন্যতম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আপনি নিজেই নিজের প্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরি করুন এবং গুরুত্ব অনুযায়ী কাজগুলোকে একে একে সাজান। পোমোডোরো টেকনিক বা টাইম ব্লকিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কাজের ফোকাস বাড়াতে পারেন।   
৩. দক্ষতা উন্নয়ন করার চেষ্টা করুন  
নতুন নতুন দক্ষতা শেখা এবং বর্তমান দক্ষতাকে আরও শার্প বা উন্নত করা মানুষের কর্মদক্ষতাকে অনেক বাড়ায়। বিভিন্ন অনলাইন কোর্স, ওয়ার্কশপ বা বই পড়ে নিজেকে আপডেট রাখুন। গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত শেখার অভ্যাস মানুষের  উৎপাদনশীলতাকে ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে।   
৪. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন 
শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য কর্মদক্ষতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। পর্যাপ্ত ঘুম, পুষ্টিকর খাবার এবং নিয়মিত ব্যায়াম আপনার শক্তি ও মনোযোগ বাড়াবে। গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত ব্যায়াম কর্মক্ষমতা ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে।   
৫. কাজ থেকে বিরতি নিন   
অবিরাম কাজ করলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। প্রতি ৯০ মিনিট পর ১০-১৫ মিনিটের বিরতি নিন। সম্ভব হলে সবুজ গাছের কাছে সময় কাটান অথবা কারও সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে কাজ থেকে পুরোপুরি ছুটি নিয়ে পরিবার অথবা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দূরে কোথাও ঘুরে আসুন। এভাবে ক্রমাগত কাজ না করে কিছুটা বিরতি নিলে কাজের স্পৃহা নতুন করে বৃদ্ধি পায়। 
৬. প্রযুক্তির ব্যবহার করুন 
এখন প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপনি নিজেও আপনার কাজের গতি ও দক্ষতা বাড়াতে পারেন। বিভিন্ন অটোমেটেড প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টুলস যেমন ট্রেলো, এসানা, কমিউনিকেশন টুলস যেমন স্ল্যাক, জুম এবং অন্যান্য অটোমেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি খুব দ্রুত নির্ভুলভাবে আপনার কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। পাশাপাশি এসব টুলস ব্যবহারের ফলে আপনার নিজের ম্যানেজমেন্ট দক্ষতাও অনেক বাড়বে। 
৭. প্রতিক্রিয়া বা ফিডব্যাক গ্রহণ করুন 
নিয়মিত কর্মক্ষেত্রের লোকজনের কাছ থেকে ফিডব্যাক গ্রহণ করা আপনার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহকর্মী, বস বা ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিন। তাদের মতামত থেকে জানতে পারবেন আপনি কোন দিকে আরও উন্নতি করতে পারেন। এভাবে নিজের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করুন এবং সেগুলো উন্নত করার চেষ্টা করুন।  
৮. মানসিক চাপ কমান 
মানসিক চাপ কর্মদক্ষতা কমিয়ে দেয়। মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা শখের কাজে সময় দেওয়ার মাধ্যমে আপনার মানসিক চাপ কমাতে পারেন। এ ছাড়া প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো, পরিবারের বাচ্চাদের সঙ্গে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি করেও আপনার মানসিক চাপ কমাতে পারেন। v

তথ্যসূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ, ‘দ্য ইমপ্যাক্ট অব এমপ্লয়ি ইনগেজমেন্ট অন পারফরম্যান্স’ আমেরিকান সাইক্লোজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আপন র ক

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের রোগীদের জন্য কুনমিংয়ের ক্যানসার হাসপাতাল

চীনের কুনমিংয়ের তিনটি সর্বাধুনিক হাসপাতালকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় এবার বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য জন্য যুক্ত করা হচ্ছে কুনমিংয়ের একটি ক্যানসার হাসপাতালকে।

বেইজিংয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাজমুল ইসলাম এবং চীনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রী সান উইডংয়ের মধ্যে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ ও চীন সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগের চেয়ে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। এত করে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে মেলবন্ধনের বিষয়টি দৃশ্যমান হচ্ছে।

তাদের বৈঠকে বিদ্যমান সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা, একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, সমতা ও পারস্পরিক সুবিধা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

রাষ্ট্রদূত চীনা বিনিয়োগকারীদের ও ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের দেওয়া সুযোগগুলো অনন্যভাবে অন্বেষণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি ঢাকায় আগামী ৭-১০ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় আসন্ন বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নিতে তাদের উৎসাহিত করেন।

চীনা উপমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, চলতি বছর পর্যটন, শিক্ষা, একাডেমিয়া ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার খাতে আরও বেশি পরিদর্শন ও প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত।

উভয় পক্ষ বহুপক্ষীয় ফোরামে বিশেষ করে জাতিসংঘের ব্যবস্থায় একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে, যাতে বহুপক্ষীয়তার সুবিধা সবার দ্বারা বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্জন করতে পারে।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপনের জন্য উভয় দেশ যৌথ কর্মসূচি গ্রহণ করবে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে লোগো প্রকাশ, গত ৫০ বছরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের স্বীকৃতি, চিকিৎসা ও পর্যটন চালু।

সম্পর্কিত নিবন্ধ