চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল-বৈষম্যবিরোধীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, বাগ্বিতণ্ডা
Published: 18th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের জের ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। কুয়েটের ঘটনায় তিনটি সংগঠন ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে পৃথক কর্মসূচি দেয়। শুরুতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীদের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। এ সময় দুই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরাও ছাত্রদলের উদ্দেশে স্লোগান দিতে থাকেন।
আজ রাত সাড়ে নয়টার দিকে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল কুয়েটে তাদের দলীয় নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে আসে। সেখানে আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইনকিলাব মঞ্চ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিল। এরপর বৈষম্যবিরোধীরা জিরো পয়েন্টে আসেন ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, সাড়ে নয়টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা জিরো পয়েন্ট এলাকায় আসেন। সেখানে অবস্থান করা ইনকিলাব মঞ্চের দিক থেকে ‘ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়। এরপর ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। পরে ইনকিলাব মঞ্চ কর্মসূচি স্থগিত করে। কিছুক্ষণের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা এখানে উপস্থিত হন। তাঁদের সঙ্গেও ছাত্রদলের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে ছাত্রদল মিছিল নিয়ে কাটা পাহাড় সড়ক হয়ে শহীদ মিনারের সামনে চলে যায়। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জিরো পয়েন্টে কর্মসূচি পালন করে।
জানতে চাইলে ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সাধারণ সচিব এম এন উল্লাস প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। তাঁরা যখন কর্মসূচি শুরু করেন তখন আরও অনেক শিক্ষার্থী জিরো পয়েন্টে উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকেই ভুয়া স্লোগান দেওয়া হয়। বিশৃঙ্খলা বাড়তে পারে, এই আশঙ্কায় তাঁরা কর্মসূচি স্থগিত করে স্থান ত্যাগ করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, কর্মসূচিতে অবস্থান নিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছে। কোনো সংঘাত হয়নি। পরে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেছেন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান প্রথম আলোকে বলেন, একটি গুপ্ত সংগঠনের নেতা–কর্মীরা সাধারণের ব্যানারে এসে উসকানি দিয়েছেন। এ নিয়ে তর্ক হয়েছে। পরে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, একই জায়গায় দুই পক্ষ স্লোগান দিচ্ছিল। পরে উভয় পক্ষের যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন তাঁরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র কর ম দ র অবস থ ন কর ম র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মুখে মাস্ক, হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ মোটরসাইকেলে এসে টোল বক্সের ম্যানেজারকে গুলি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বালুঘাটের টোল বক্সের ম্যানেজারকে গুলি করে টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিতে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গড়াই নদের সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতুর নিচে এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের গুলি ও টাকা লুটের ৫ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গুলিবিদ্ধ ম্যানেজার মো. সবুজ হোসেনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে আজ সকাল থেকে তাকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি এলাকার শহিদুলের ছেলে। এ ঘটনার পর বালুঘাট বন্ধ রয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১১টার দিকে একদল অস্ত্রধারী হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে গড়াই নদের সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতুর নিচে আসে। তাদের সবার হাতে অস্ত্র ছিল। তাদের দেখেই কয়েকজন পালিয়ে যায়। এসেই তারা সেখানকার শ্রমিকদের জিম্মি করে। এ সময় একটি ট্রাক টোল দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। ভয়ে এক ব্যক্তি ট্রাকে উঠে পড়ে। এরপর টোল বক্সের ক্যাশ থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। সে সময় শ্রমিকরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ম্যানেজার সবুজের পায়ে গুলি করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা এলোপাতাড়ি কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে দ্রুত চলে যায়।
শ্রমিকরা বলেন, সবার কাছে অস্ত্র ছিল। প্রত্যেকেই মুখোশ পরা ছিল বলে কাউকেই চেনা যায়নি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১০টা ৫২ মিনিটে কাশেমপুরের দিক থেকে ১১ সশস্ত্র মুখোশধারী গুলি ছুড়তে ছুড়তে সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতুর নিচ দিয়ে বালু ঘাটের টোল বক্সের দিকে আসছে। তাদের প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। এরপর টোল বক্সের সামনে থাকা শ্রমিক ও ম্যানেজার সবুজকে মারধর করতে দেখা যায়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ মো. সবুজ বলেন, ‘সবার মুখে মাস্ক ছিল। তারা এসেই মারধর শুরু করে। আমার পায়ের পাতায় গুলি করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, বালুঘাটে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ছিনতাই করার জন্য তারা এ ঘটনা ঘটায়। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে গড়াই নদের ড্রেজারকৃত বালু অপসারণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রিয়াঙ্কা ব্রিকস। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বালু অপসারণের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।